• বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর
  • " />

     

    বে ওভালে নতুন ইতিহাসে বাংলাদেশের আরেকটি সোনালী দিন

    বে ওভালে নতুন ইতিহাসে বাংলাদেশের আরেকটি সোনালী দিন    

    ১ম টেস্ট, বে ওভাল, মাউন্ট মঙ্গানুই (টস- বাংলাদেশ/বোলিং)

    নিউজিল্যান্ড- ৩২৮ (কনওয়ে ১২২, নিকোলস ৭৫, ইয়াং ৫২, শরিফুল ৩/৬৯ , মিরাজ ৩/৮৬ , মুমিনুল ২/৬)

    বাংলাদেশ- ৪০১/৬ ( মুমিনুল ৮৮, লিটন ৮৬, জয় ৭৮, ওয়্যাগনার ৩/৭২, বোল্ট ৩/৬১)   

    ৩য় দিন, স্টাম্পস


    নিউজিল্যান্ডের মাটিতে গিয়ে এবার বাংলাদেশের ভরাডুবির কথাই হয়ত বেশিরভাগ অনুমান করেছিলেন। এরকম দুটো দিন যে বাংলাদেশ কাটাবে সেটা কি খেলোয়াড়রাও কল্পনা করেছিল? স্বপ্নকে সত্যি করে তৃতীয় দিনটাও নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ার বাইরে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে এই প্রথমবার লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। মুমিনুল হক-লিটন দাসের ১৫৮ রানের জুটিতে ভর করে লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে ইয়াসির আলী-মেহেদী হাসান মিরাজরা সেই লিড নিয়ে গিয়েছেন ৭৩ রানে।

    এই লিড তো দূরে থাক, লিড যে বাংলাদেশ পাবে সেটাই সকালের সেশনে অনুমান করা যায়নি। দিনের শুরুতেই নিল ওয়্যাগনারের বল কাট করতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ৭৮ রানে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর উইকেটে এসে মুশফিকুর রহিমও খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেননি। নতুন বল পাওয়ার পর ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদির সুইংয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ছিলেন মুমিনুলও। রান করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল দুজনকেই। মুমিনুল তো একবার ওয়্যাগনারের বলে আউটও হয়েছিলেন। তবে রিপ্লেতে নো বল ধরা পড়ায় সেই যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। বেশ কয়েকবার তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল স্লিপ ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে যায়। মুমিনুলের ভাগ্য সহায় হলেও হয়নি মুশফিকের। বোল্টের ভেতরে ঢোকা বল পুরোপুরি মিস করে বোল্ড হয়ে ১২ রানে ফেরেন তিনি। লিটনকে নিয়ে এরপর মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লাঞ্চে যান মুমিনুল।

     

    পরের সেশনে লিটন এক প্রান্তে দারুণ সপ্রতিভ থাকায় মুমিনুলও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মন্থর ফিফটি তুলে নেন তিনি। অন্য প্রান্তে লিটন অবশ্য কোনও সুযোগ দেননি বললেই চলে। দারুণ ছন্দে থাকা লিটনের ব্যাটে ঠিকড়ে পড়ছিল তার ফর্ম। লিটন ও তাই ফিফটি পূর্ণ করেন অনায়াসেই। দ্বিতীয় সেশনে কিউই বোলারদের সকল পরিকল্পনা পন্ড করে টিকে থাকেন এই দুজন।

    দুজনের ছন্দময় ব্যাটিংয়ে প্রথমবারের মত এশিয়ার বাইরে পরে ব্যাট করে লিড পায় তারা। দুজনের সেঞ্চুরি যখন আসন্ন মনে হচ্ছিল তখনই বাঁধ সাধেন বোল্ট। বাউন্সারের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে বোল্ট ফিরে যান তার পুরনো লেংথে। তাতেই বাজিমাত। বল মিস করে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৮৮ রানে ফিরে যান তিনি। কিছুক্ষন পর লিটনেরও হয় মতিভ্রম। সংযমের পরিচয় দিয়েছেন এদিন; বল বুঝে খেলেছেন। সবই যেন ভজঘট পেকে গেল ওই এক বলে এসেই। বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পিছে ক্যাচ দিয়ে ৮৬ রানে ফেরেন তিনি। নিজের এই ভুল যেন নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। তবে বাংলাদেশের যা প্রয়োজন ছিল তার পুরোটাই দিয়ে গিয়েছেন তিনি। মিরাজ-ইয়াসিররাও এরপর নিজেদের ব্যাটিং সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে দিন পার করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ তাই পার করেছে আরও একটি স্বপ্নের মত দিন। ঘরের মাটিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নদের এভাবে হতাশায় ডোবাবে বাংলাদেশের মত টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দল তা কে ভেবেছিল! তবে নিজেদের এই কষ্ট যাতে বাকি দুই দিনে পন্ড না হয়, ওয়েলিংটনের ভূত যাতে ফিরে না এসে সেদিকটায় খেয়াল রাখতে হবে মুমিনুলদের।