• বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর
  • " />

     

    এবাদতের শেষ বিকেলের জাদুতে স্বপ্নের দিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

    এবাদতের শেষ বিকেলের জাদুতে স্বপ্নের দিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ    

    ১ম টেস্ট, মাউন্ট মঙ্গানুই (টস- বাংলাদেশ/বোলিং)

    নিউজিল্যান্ড- ৩২৮ ও ১৪৭/৫  (ইয়াং ৬৯, টেইলর ৩৭*, ল্যাথাম ১৪, এবাদত ৪/৩৯ , তাসকিন ১/২২)

    বাংলাদেশ- ৪৫৮ ( মুমিনুল ৮৮, লিটন ৮৬, জয় ৭৮, বোল্ট ৪/৮৫, ওয়্যাগনার ৩/১০১, সাউদি ২/১১৪)   

    ৪র্থ দিন, স্টাম্পস


     

    টেস্ট চ্যাম্পিয়নদের নিজেদের মাটিতে নতুন মৌসুমের প্রথম মাচ, আর সেখানেই চতুরথ দিন শেষ ব্যাকফুটে তারাই। সেটাও গতবার এবং এবারও পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে। স্বপ্নময় দুটো দিনের পর ৪র্থ দিন শেষে মাচ এখন বাংলাদেশের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে: সৌজন্য এবাদত হোসেন। অগ্নিঝরা শেষ স্পেলে ফিরিয়েছন ৬৯ রান করে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া উইল ইয়াংকে, সাথে নিয়েছেন আরও দুই উইকেট। নিউজিল্যান্ড তাই ১৭ রানে এগিয়ে থাকলেও জয়ের জোর আশা নিয়েই কাল মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

    ইয়াং যখন রস টেইলরের সাথে জুটি বেঁধে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এই জয়ের সম্ভাবনা ফিকেই হয়ে যাচ্ছিল। উইকেটের বাউন্স ততক্ষণে পড়ে ফেলেছেন ইয়াং, ব্যাট করছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। অন্য প্রান্তে টেইলরও বেশ কিছু সময় ব্যয় করে রানের গতি বাড়াবেন বলেই ভাবছেন। মেহেদী হাসান মিরাজকে তখনই খেল্লেন প্রিয় স্লগ সুইপ। ডিপ মিড উইকেটে থাকা সাদমান ইসলামের একদম হাতে তুলে দিলেন ক্যাচ। ১৭ রানে থাকা টেইলরের মামুলি সেই ক্যাচ ফেলে দিলেন সাদমান। বাংলাদেশের শরীরী ভাষায় হতাশা স্পষ্ট তখন। ইয়াংও কিছুক্ষণ পরে তুলে ফেললেন ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি।

    তবে হাল ছাড়েননি এবাদত। এর আগে তাসকিনের আঘাতে আরও একবার শুরুতেই কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম ফেরার পরে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ডেভন কনওয়ে যখন উইকেটে থিতু হচ্ছিলেন ঠিক তখনই তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছিলেন তিনি। ইয়াং-টেইলরের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জুটিও ভাংলেন হাল না ছাড়া সেই তিনিই। সেটার জন্য অবশ্য ইয়াংকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন তিনি। মনযোগী ইয়াং পড়তে পারলেন না হালকা খাট লেংথের সেই বল। পুল করার মত উচ্চতায় বল তাই না ওঠায় ইয়াংয়ের ব্যাট ফস্কে বল উপড়ে ফেলে স্টাম্প। তবে আগের ইনিংসে গলার কাটা হয়ে থাকা হেনরি নিকোলসের উইকেট আদায় করে নিয়েছেন এবাদত নিজের শতভাগ দিয়েই। মাত্র উইকেটে আসা একজন ব্যাটসম্যানের জন্য স্টাম্প সাঁই করা সেই গতিময় ফুল বল ছিল বেশ কঠিন। স্টাম্প খুইয়ে নিকোলস ফেরার পরের ওভারে এসেও কমেনি এবাদতের ধার। টম ব্লান্ডেলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর নিলেন উইকেট মেইডেন। দিনে নিজের করা শেষ স্পেলে ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন সেই এবাদতই। 

    জয়ের সেই সম্ভাবনায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে দিনের শুরুতে মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইয়াসির আলী যোগ করেছিলেন মূল্যবান বেশ কিছু রান। মিরাজ দুবার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন, ছুটছিলেন ফিফটির দিকেই। তবে ৪৭ রানে থাকার সময় টিম সাউদির আউটসুইঙ্গারে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন; ৪৩৩ বল পর সাউদি পান উইকেটের দেখা! 

     

    মিরাজের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর কাইল জেমিসনের লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে উইকেটের পিছে ক্যাচ দিয়ে তার প্রথম শিকার হন ইয়াসির, ফেরেন ২৬ রান করে। এরপর তিন বলের মধ্যেই সাউদির কাছে তাসকিন আহমেদ ও ট্রেন্ট বোল্টের কাছে শরিফুক ইসলাম ফিরলে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ৪৫৮ রানে। মিরাজ-ইয়াসিরের জুটির কল্যাণে বাংলাদেশের লিড পৌঁছায় ১৩০ রান পর্যন্ত। সেই লিড নিউজিল্যান্ড অতিক্রম করে গেলেও বাংলাদেশই যে দিনশেষে চোখ রাঙাচ্ছে।