• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    মেসির পেনাল্টি মিসের পর এমবাপের শেষের জাদুতে পিএসজির জয়

    মেসির পেনাল্টি মিসের পর এমবাপের শেষের জাদুতে পিএসজির জয়    

    পিএসজি ১:০ রিয়াল মাদ্রিদ


    প্রতিপক্ষকে মেসি-নেইমারের মত ভালোভাবে কেউ চেনেন না। বার্সেলোনার জার্সিতে এই রিয়াল মাদ্রিদকে কাবু করার জন্য কতবারই না একসাথে ফন্দি এঁটেছেন। তাদের দলের আরেক তারকা অ্যাটাকার কিলিয়ান এমবাপেও মাদ্রিদকে চেনেন ভালোভাবেই। সম্ভাবনা আছে, ক্যারিয়ারে তার পরবর্তী গন্তব্য হবে স্প্যানিশ রাজধানীতেই। 

    রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে শিরোনাম হয়ে থাকলেন পিএসজির এই তিন তারকাই। মেসির পেনাল্টি মিস, ইনজুরি-ফেরত নেইমারের অ্যাসিস্ট এবং যোগ করা সময়ে এমবাপের চোয়াল ঝোলানো গোল; পিএসজির জন্য যেন সবকিছুই ছিল এ ম্যাচে। 

    শিরোনাম মানানসই হলেও মাদ্রিদ ও পিএসজির মধ্যকার ম্যাচ যতটা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ততটা প্রতিদান দিতে পারেনি। পার্ক ডি প্রিন্সেসে ম্যাচটা দুই দলই যেন ব্যাকফুটে থেকে শুরু করতে চেয়েছে। তবে দুই দল চাইলেও তাতে সফল হয়ে মাদ্রিদ। প্রথম ৩০ মিনিটে পিএসজির গোলে কোনো শটই নেয়নি কার্লো আনচেলত্তির দল। আক্রমণেই এসেছে মাত্র হাতেগুণা কয়েকবার। এছাড়া, পুরো ম্যাচেই পিএসজিকে তেমন প্রেসও করেনি রিয়াল। 

    রিয়ালের অনীহার সুযোগ অবশ্য নিতে পারেনি পিএসজি। প্রথমার্ধের সিংহভাগ সময় রিয়ালের বক্সের আশেপাশে খেলা চললেও এসময়ে পরিষ্কার সুযোগই তেমন তৈরি করতে পারেননি মেসিরা। মেসিকে দেখা গেছে নিচে নেমে খেলতে। এমবাপের সঙ্গে তাকে লিংক-আপ করতেও দেখা যায়নি এতটা। প্রথমার্ধে পিএসজির প্রায় সব আক্রমণই এসেছে লেফট উইঙ্গার এমবাপে ও লেফটব্যাক নুনো মেন্ডেসের মধ্য দিয়ে। 

    আর রিয়ালের রক্ষণ পরিকল্পনা যেন সাজানোই হয়েছিল এমবাপেকে ঘিরে। এমবাপের পায়ে বল গেলেই তাকে ঘিরে ধরেছে দুই থেকে তিনজন মাদ্রিদ প্লেয়ার। তবে মাঝে মাঝে এই ডিফেন্ডারদের কাটিয়েই সুযোগ তৈরি করেছেন এমবাপে।

    গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য দুই দলের খেলাতেই একটু বেশি অভিপ্রায় ফুটে ওঠে। 

    ৫০ মিনিটে রাইটব্যাক আশরাফ হাকিমির ফ্লিক থেকে বক্সে বল পান এমবাপে। দুর্দান্তভাবে বলটি রিসিভ করে নিচু করে গোলে শট করেন এমবাপে। সেই শট ঠেকিয়ে ম্যাচের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সেভটি করেন থিবো কর্তোয়া। 

    পরের দশ মিনিটে দুই দলই একাধিক আক্রমণ করে। ৬০তম মিনিটে আবার ডাক পড়ে কর্তোয়ার। বক্সের এক মাথায় ড্যানি কারবাহাল এমবাপেকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। পেনাল্টি নিতে আসেন স্বয়ং মেসি। গোলের ডানপাশে করা আর্জেন্টাইনের দুর্বল শট অবশ্য অনায়াসেই ঠেকিয়ে দেন কর্তোয়া। সাথে সাথেই বেলজিয়ানকে ঘিরে উল্লাসে মেতে উঠে মাদ্রিদ শিবির। 

    ৭৩ মিনিটে ডি মারিয়ার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নেইমার। দীর্ঘ ইনজুরি থেকে ফেরা নেইমার অবশ্য বুঝতে দেননি নভেম্বরের পর আর কোনো ম্যাচ খেলেননি তিনি। মাঠে নেমেই পিএসজির আক্রমণে বাড়তি গতি নিয়ে আসেন তিনি। আর এদিকে ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হতে থাকেন মেসিও। 

    ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে অনেকবার আক্রমণে আসে পিএসজি। ওদিকে দাঁত দাঁত কামড়ে ম্যাচটা প্রায় শেষই করে দিচ্ছিল মাদ্রিদের ডিফেন্ডাররা। 

    তবে শেষ রক্ষে হয়নি। যোগ করা সময়ে এসে পিএসজি আক্রমণের পর আক্রমণ করতে শুরু করে। এবং অবশেষে, ম্যাচে তাদের সর্বশেষ আক্রমণটি প্রায় সাফল্যের দেখা। বক্সের বাইরে থেকে করা নেইমারের ব্যাকপাস রিসিভ করেন বক্সের ভেতরে থাকা এমবাপে। বক্সের বাঁপাশ থেকে দুই মাদ্রিদ ডিফেন্ডার এডের মিলিতাও ও লুকাস ভাজক্যুয়েজকে মাঝখান দিয়ে সুনিপুণভাবে কাটিয়ে ভিতরে ঢুকে যান এমবাপে। এরপর ফ্রেডি ভালভার্দেকে ফাঁকি দিয়ে শট করেন এই ফরাসি। তারা মাপা শট ফাঁকি দিয়ে যায় কর্তোয়াকেও।  

    ম্যাচের শেষ মিনিটে হৃদয় ভাঙে রিয়ালের। আর তার পিছনে মূল অবদান কি না সেই এমবাপেরই। যেই ফরাসির স্বাক্ষরের জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে লা লিগা টপাররা, তাকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর স্বাদ দিতে এখন মার্চের ১০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে মাদ্রিদিস্তাদের।