পরাগের পারদর্শী ফিফটির পর কুলদিপ-আশ্বিনে স্বল্প পুঁজি নিয়েই রাজস্থানের বাজিমাত
বেঙ্গালুরু-রাজস্থান, পুনে (টস-বেঙ্গালুরু/বোলিং)
রাজস্থান রয়্যালস- ১৪৪/৮, ২০ ওভার (পরাগ ৫৬*, স্যামসন ২৭, আশ্বিন ১৭, হেজলউড ২/১৯, হাসারাঙ্গা ২/২৩, সিরাজ ২/৩০)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু- ১১৫, ১৯.৩ ওভার (ডু প্লেসি ২৩, হাসারঙ্গা ১৮, শাহবাজ ১৭, কুলদিপ ৪/২০, আশ্বিন ৩/১৭, কৃষ্ণা ২/২৩)
ফলাফল: রাজস্থান ২৯ রানে জয়ী
ছুটেই চলেছে রাজস্থানের জয়রথ। এবার তারা গড়ল এই মৌসুমে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ নিয়ে জয়ের রেকর্ড। জশ হেজলউড, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ স্পেলের বিপরীতে একাই লড়ে অনবদ্য ফিফটি করে রাজস্থানকে লড়াই করার পুঁজি এনে দিয়েছিলেন রিয়ান পরাগ। রবিচন্দ্রন আশ্বিনের ঘূর্ণিজাদুর সাথে দুই গতি তারকা কুলদিপ সেন ও প্রাসিধ কৃষ্ণার ক্ষুরধার বোলিংয়ে খাবি খেয়ে সেই লক্ষ্য আর টপকাতে পারেনি বেঙ্গালুরু। মৌসুমের ৬ষ্ঠ জয় দিয়ে রাজস্থান আবার উঠে গিয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
হেজলউড-হাসারাঙ্গার দুর্দান্ত স্পেল; পরাগের একাকী লড়াই
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রাজস্থানের টপ অর্ডার নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা সাজাবে এই মৌসুমে যে কোনও দলই; বেঙ্গালুরুও সেখানে ব্যতিক্রম অবশ্যই নয়। দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ সিরাজের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে দেবদূত পাডিক্কাল ফেরার পড়ে প্রতিপক্ষকে পরিকল্পনা ঢেলে সাজাতে বাধ্য করার জন্যই আরও একবার তিনে রবিচন্দ্রন আশ্বিনকে নামায় রাজস্থান। তবে সিরাজকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তার করা পরের ওভারেই শেষ হয় আশ্বিনের ১২ বলে ১৭ রানের ইনিংস। তারই ধারাবাহিকতায় রাজস্থানের
সবচেয়ে কাঙ্খিত উইকেটটির দেখা পরের ওভারের প্রথম বলেই পেয়ে যান হেজলউড। আক্রমণাত্মক শট খেলার মত জস বাটলারকে হেজলউড যথেষ্ট জায়গা না দিলেও সেই চেষ্টা করতে গিয়ে সিরাজকে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এবারের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। পাওয়ারপ্লেতে ৪৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসা রাজস্থানের ইনিংস মেরামতের কাজ এরপর করেন অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন, অভিষিক্ত ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে। তবে লাগামছাড়া হওয়ার আগেই স্যামসনকে ফিরিয়ে দেন নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসা হাসারাঙ্গা, ২১ বলে ২৭ রানের ইনিংস শেষে। হার্শাল-হাসারাঙ্গা-ম্যাক্সওয়েলরা চেপে বসার পর আক্রমণে এসেই মিচেলের ১৬ রানের প্রতিরোধ ভাঙেন হেজলউড। শিমরন হেটমায়ারকেও থিতু হওয়ার আগেই পরের ওভারে ফেরান হাসারাঙ্গা। অন্য প্রান্তে উইকেট আসা যাওয়ার মাঝে এদিন উইকেটের মূল্য বুঝে খেলেন পরাগ। হেজলউডের ১৯তম ওভারে চার ও ছয় মারার পর হা মার্শালের করা শেষ ওভারে মারেন ২ ছয় ও ১ চার। ৩১ বলে ৫৬* রানে অপরাজিত থেকে রাজস্থানকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন পরাগই।
কুলদিপ-আশ্বিন-কৃষ্ণাতে ঘায়েল বেঙ্গালুরু
ফর্মহীনতা কাটাতে ভিরাট কোহলিকে এদিন ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত নেয় বেঙ্গালুরু। অদ্ভুতুড়ে কায়দায় দ্বিতীয় ওভারেই কৃষ্ণার শিকার হয়ে কোহলি ফিরে গেলে কাজে লাগেনি সেই পরিকল্পনা। পাওয়ারপ্লেতে ওই এক উইকেট খুইয়ে ৩৭ রান তুললেও বিপদের ঘনঘটা বেঙ্গালুরুর আকাশে দেখা দেয় পরের ওভারেই। টানা দুই বলেই পেসার কুলদিপ ফেরান ফাফ ডু প্লেসি ওগ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। ইনিংস মেরামত করতে থাকা রজত পাটিদারকে কিছুক্ষণ পড়ে ফিরিয়ে এরপর ১৫০ আইপিএল উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন আশ্বিন। নিজের পরের ওভারে সুয়াশ প্রভুদেসাইকে ফিরিয়ে বেঙ্গালুরুর জয়ের আশা আরও ক্ষীণ করে দেন আশ্বিন। পরের ওভারেই শাহবাজ আহমেদের সাথে ভুল বুঝাবুঝির পরও রান আউট থেকে বাঁচতে পারতেন দীনেশ কার্তিক। যুজবেন্দ্র চেহেল যেহেতু বল ফেলে দিয়েছিলেন সেহেতু তিনি ব্যাট ঠেকানোর জোরদার চেষ্টা করেননি। পড়ে রিপ্লেতে দেখা গেল স্টাম্প ভাঙার সময় ঠিকই কোনোমতে বল হাতে নিয়েছিলেন চেহেল। এ যেন বেঙ্গালুরুর দুর্ভাগ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এক উইকেট। ম্যাচ থেকে এরপর বেঙ্গালুরুকে ছিটকে দেন দুর্দান্ত এক স্পেল করা আশ্বিন, তার শেষ ওভারে ১৭ রানে থাকা শাহবাজকে ফিরিয়ে। পরের ওভারেই ১৮ রানে থাকা হাসারাঙ্গাকে কুলদিপ ফেরানোর পর শেষ দুই উইকেট তিনি ভাগাভাগি করে নেন কৃষ্ণার সাথে।