ম্যাজিক-মোসাদ্দেকের পর লিটনের নৈপুণ্যে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
২য় টি-টোয়েন্টি, হারারে (টস-জিম্বাবুয়ে, ব্যাটিং)
জিম্বাবুয়ে- ১৩৫/৮, ২০ ওভার (রাজা ৬২, বার্ল ৩২, জংওয়ে ১১*, মোসাদ্দেক ৫/২০, হাসান ১/২৬, মোস্তাফিজ ১/৩০)
বাংলাদেশ- ১৩৬/৩, ১৭.৩ ওভার (লিটন ৫৬, আফিফ ৩০*, শান্ত ১৯*, উইলিয়ামস ১/১৩, রাজা ১/১৮, গারাভা ১/২৩)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
হতাশাজনক এক ম্যাচ পেছনে ফেলে বাংলাদেশ সিরিজে ফিরল দাপটের সাথেই। আর সেই দাপুটে জয়ের নায়ক নজর কাড়লেন কিছুটা অনাকাঙ্খিত এক ভুমিকায়; মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার একাই ধসিয়ে দিলেন বল হাতে। সেখান থেকে সিকান্দার রাজা দলকে টেনে তলার চেষ্টা করলেও লিটন দাসের ফিফটি আর আফিফ হোসেন-নাজমুল হোসেন শান্তর ধৈর্যশীল জুটিতে সিরিজে ফিরেছে বাংলাদেশ।
লক্ষ্য ১৩৬ রান হলেও রাজা আর রায়ান বার্লের জুটির পর লড়াই করার মানসিকতা ফিরে পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। আরও একবার শুরুতেই মুনিম শাহরিয়ারকে ফিরিয়ে চোখ রাঙাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। তবে জিম্বাবুয়েকে কোনও সুযোগ না দিয়ে দারুণ ছন্দে শুরু করেন লিটন; পাওয়ারপ্লেতে নিজে পৌঁছে যান ৩৩ রানে। অন্য প্রান্তে আনামুল হক বিজয় খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে না পারলেও অন্যদিকে ঠিকই ৩০ বলে নিজের ৬ষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন লিটন। পরের ওভারেই শন উইলিয়ামসের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে লিটন ৫৬ রানে ফিরলে এরপরের ওভারে বিজয়ও ফেরেন, রাজার শিকার হয়ে ১৬ রানে। এরপর অবশ্য দুই তরুণ আফিফ ও শান্ত কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে দেননি। নিয়মিত বাউন্ডারি বের করে নিয়ে ৫৫* রানের জুটি গরে এই দুজনই জয়ের বন্দরে পৌঁছিয়ে দেন বাংলাদেশকে।
এর আগে এই জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল মোসাদ্দেকের অফ স্পিন। মোসাদ্দেককে দিয়ে নুরুলের ইনিংস শুরু করার সাহসী সিদ্ধান্তের ফল প্রথম ওভারেই কড়ায় গন্ডায় এনে দেন এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। প্রথম বলেই আর্ম বলে চাকাবভাকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করার পর আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া মাধেভেরেকে এক্সট্রা কাভারে তালুবন্দি করেন মোসাদ্দেক। পরের ওভারে অধিনায়ক আরভিন মোসাদ্দেককে রিভার্স সুইপ করতে গেলে স্লিপে লিটনের ক্ষুরধার কাচের শিকার হন। কিছুক্ষণ পরে শন উইলিয়ামস ফেরেন মোসাদ্দেককে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। পাওয়ারপ্লেতেই চার উইকেট তুলে নেওয়া মোসাদ্দেক পাওয়ারপ্লের পরে নিজের শেষ ওভার করতে এসে পূর্ণ করেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের প্রথম ৫-উইকেট। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের দারুণ এক ক্যাচে মিল্টন শুম্বাকে ফিরিয়ে মোসাদ্দেক ১ম বোলার হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে ৫-উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন। সেই সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড নিজের দখলে নেন: ৪-০-২০-৫।
অবশ্য ৩১ রানে ৫ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে এরপর পথ দেখান সিকান্দার রাজা; রায়ানকে সঙ্গী করে গড়েন ৮০ রানের জুটি। রায়ান ৩২ রানে হাসান মাহমুদের প্রথম আন্তর্জাতিক শিকার হয়ে ফিরলেও টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন রাজা। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজের শিকার হয়ে ফেরার আগে খেলেন ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস। খাদের কিনারা থেকে দলকে উদ্ধার করে রাজা লড়াই করার রসদ এনে দিলেও শেষমেশ বাংলাদেশের ব্যাটারদের সামনে ধোপে টেকেনি সেই সংগ্রহ।