• বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ে সফর
  • " />

     

    রাজা-চাকাবভার ঐতিহাসিক জুটিতে ধরাশায়ী বাংলাদেশ, খোয়াল সিরিজও

    রাজা-চাকাবভার ঐতিহাসিক জুটিতে ধরাশায়ী বাংলাদেশ, খোয়াল সিরিজও    

    ২য় ওয়ানডে, হারারে (টস-জিম্বাবুয়ে, ফিল্ডিং)
    বাংলাদেশ- ২৯০/৯, ৫০ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৮০*, তামিম ৫০, আফিফ ৪১, রাজা ৩/৫৬, মাধেভেরে ২/৪০,  নিয়াচু ১/৩৯)
    জিম্বাবুয়ে- ২৯১/৫, ৪৭.৩ ওভার (রাজা ১১৭*, চাকাবভা ১০২, মুনিওঙ্গা ৩০*, হাসান ২/৪৭, মিরাজ ২/৫০, তাইজুল ১/৪৮)
    ফলাফল: জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে জয়ী

     

    ২৯০ রানের পুঁজি নিয়ে জিম্বাবুয়েকে প্রথম ১০ ওভারেই কোণঠাসা করে ফেলার পর মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ হয়ত সিরিজে সমতা ফেরাতে চলেছে। তবে প্রথম ওয়ানডের মত আবার বাঁধ সাধলেন ক্যারিয়ারের সোনালি সময় পার করা সিকান্দার রাজা; সাথে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে সামনে থেকেই পথ দেখালেন রেজিস চাকাবভা।

    অথচ এই চাকাবভার এই ওয়ানডের আগে ছিল মোটে ৪টি ওয়ানডে ফিফটি। এদিন নামলেন পাঁচ নম্বরে, সাধারণত যিনি মিডল অর্ডারে খেলেন না। তবে নেমে রাজাকে উইকেটে থিতু হওয়ার সুযোগ করে দিয়ে হাত খুলে খেলার দায়িত্ব নিজেই সপে দিলেন নিজের কাঁধে। আর কী দারুণভাবেই না পালন করলেন সেই দায়িত্ব! ফিফটি তুলে নেওয়ার পরে রাজাকে সঙ্গী করে বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংয়ের মাশুল দেওয়ালেন কড়ায় গন্ডায়। জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকালেন, ৭৪ বলে। অন্যদিকে টানা দ্বিতীয় ও নিজের ৬ষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেয়ে গিয়েছেন রাজা। দুইশো রানের জুটি গড়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকা জিম্বাবুয়ের উৎসবে তখন বাঁধ সাধলেন মিরাজ, ১০২ রানে চাকাবভাকে ফিরিয়ে। জিম্বাবুয়ের ওয়ানডে ইতিহাসে ৫ম উইকেটের সর্বোচ্চ জুটি ভাঙার পরে বাংলাদেশ ফিরতে পারত ম্যাচে। কিন্তু ওইযে বাজে ফিল্ডিং, সেটাই ভোগাল আরেকবার। উইকেটে আসা মুনিয়ঙ্গা তখনও ঠিক থিতু হতে পারছেন না। শরিফুলের করা ৪৭তম ওভারে শুরুতেই তার ক্যাচ ফেললেন তাসকিন। এরপর ১ চার ও ২ ছয়ে সেই মুনিয়ঙ্গা ম্যাচ বের করে ফেললেন। তাও যা একটু সুযোগ ছিল সেটাও বাংলাদেশ নিজেরাই পায়ে ঠেলে দিল ঠিক পরের বলেই আরও একবার মুনিয়ঙ্গাকে সুযোগ দিয়ে। রাজার ১১৭* রানের দুর্দান্ত ইনিংসের সাথে মুনিয়ঙ্গার ক্যামিও ডেকে আনলো বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশের এক অন্ধকার অধ্যায়।

     তবে দিনের শুরুটা কিন্তু বাংলাদেশ ভালই করেছিল। লিটনের অনুপস্থিতিতে এদিন ওপেন করতে নামা আনামুল হক বিজয়কে সঙ্গী করে আরও একবার ভাল শুরু এনে দিয়েছিলেন তামিম। ৭১ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙলেও তামিম ঠিকই পেয়েছিলেন ৫৫তম ফিফটির দেখা। ৪৫ বলে ৫০ রান করে অবশ্য এর ঠিক পরপরই তানাকা চিভাঙ্গার শিকার হয়ে ফিরেছিলেন তিনি। এর ৬ রান পরেই রান আউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন বিজয়। মুশফিক-শান্ত জুটি কিছুটা স্থিতিশীলতা আনলেও ১২৭ রানের মাথায় ফিরলেন মুশফিক। এর কিছুক্ষণ পরে ৩৮ রানে থাকার সময় শান্তও ফিরলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

    সেই বিপদ থেকে নিস্তার মিলেছিল আফিফ-মাহমুদউল্লাহ জুটিতে। দারুণ খেলতে থাকা আফিফ ৪১ রানে ফিরে গেলে মাহমুদ উল্লাহকে একাই লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ফর্ম হীনতার প্রশ্ন তার মাথার ওপর ঝুললেও ধৈর্য ধরে তিনি পূর্ণ করলেন নিজের ২৬তম ফিফটি। উইকেটে থিতু হতে যেই সময় নিয়েছেন তা পড়ে পুষিয়ে দিয়েছেন হাত খুলে খেলে। শেষমেশ ৮৪ বলে ৮০* রানে অপরাজিত থেকে দলকে নিয়ে যান ২৯০ রানে। দিনশেষে সেই লক্ষ্য দাপটের সাথেই তাড়া করেছে স্বাগতিকরা। প্রশ্ন তাই থেকেই যায়, ইনিংসের গতিবিধি বুঝে অন্যরা হাত খুলে খেলতে পারতেন কী না, বা অন্যরাও দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে পারতেন কী না। তবে দিনশেষে বাংলাদেশের জরাজীর্ণ ফিল্ডিংয়ের দিকেই আঙ্গুল তাক করতে হবে এই নিদারুণ পরাজয়ের জন্য।