• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    সিলেটের প্রথমের স্বপ্ন নস্যাৎ করে চার্লস-লিটনের ব্যাটে কুমিল্লার চারে চার

    সিলেটের প্রথমের স্বপ্ন নস্যাৎ করে চার্লস-লিটনের ব্যাটে কুমিল্লার চারে চার    

    ফাইনাল, ঢাকা (টস-রংপুর/বোলিং)
    সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১৭৫/৭, ২০ ওভার (মুশফিক ৭৪*, শান্ত ৬৪, বার্ল ১৩, মোস্তাফিজ ২/৩১, তানভির ১/২১, মঈন ১/৩১)
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ১৭৬/৩, ১৯.২ ওভার (চার্লস ৭৯*, লিটন ৫৫, মঈন ২৫*, রুবেল ২/৩৯, লিন্ডে ১/১৪)
    ফলাফল: কুমিল্লা ৭ উইকেটে জয়ী

     

    ১১ বলে ৯ রানে থাকা জনসন চার্লস ডিপ স্কয়্যার লেগে থাকা রুবেল হোসেনকে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিলেন; রুবেল দুই তিন বার লুফে নিতে নিতেও বল ফেলে দিলেন মাটিতে। সেই সাথে যেন সেখানেই সিলেটের প্রথম শিরোপার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিলেন তিনি। লিটন দাসের দারুণ ফিফটির পয়রে সেই চার্লস নিজের পেশীর জোর দেখিয়ে কুমিল্লাকে এনে দিলেন টানা তৃতীয় শিরোপার স্বাদ।

    ১৭৬ রানের লক্ষ্যে লিটনের সাথে ওপেন করতে নেমে নারাইন শুরুতেই ফিরেছিলেন সেই রুবেলের শিকার হয়ে, মাত্র ১০ রানে। ঠিক পরের ওভারেই ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে জর্জ লিন্ডে দিয়ে বসেন উইকেট মেইডেন। ষষ্ঠ ওভারেই ম্যাচ নিজেদের বাগে নিয়ে আসার সুযোগ তৈরি করেছিলেন আবারও তিনি, রুবেলের কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। পাওয়ারপ্লেতে এরপর লিটন-চার্লস জুটি পৌঁছে যায় ৪৯ রানে। পাওয়ারপ্লের পরেও উইকেটে একেবারেই জবুথবু হয়েছিলেন চার্লস, ব্যাটের কানায় লেগে বল একবার উইকেটকিপারকে ফাঁকি দিয়ে চলে যাওয়ায় আরও একবার হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। অন্যদিকে লিটন ছিলেন সাবলীল, ৩৬ বলে তিনি তুলে নিয়েছিলেন ফিফটি। ফিফটির পরের ওভারেই লিটন অবশ্য ফিরলেন শাপমোচনের সুযোগ খুঁজতে থাকা রুবেলের বলে, ৩৯ বলে ৫৫ রানের ইনিংস শেষে।

    তখনও অন্য প্রান্তে ধুঁকতে থাকা চার্লসকে স্বস্তি দিতেই মঈন আলী উইকেটে এসেই ২১ রান দিয়ে শুরু করা তানজিম হাসান সাকিবের ওভারে নিলেন ১১ রান। শেষ ৫ ওভারে কুমিল্লার জয়ের জন্য ৪৭ রান প্রয়োজন হওয়াতে তাদের গিয়ার পাল্টাতেই হত। সেটার জন্যই চার্লস বেঁছে নিলেন রুবেলকে। এর আগে তিন ওভারে ১৬ রান দিয়ে রুবেল নিয়েছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। অথচ রুবেলকে রীতিমত পাড়ার বোলার বানিয়ে ৩ ছয় ও ১ চারে চার্লস সেই ১৭তম ওভার থেকে নিলেন ২৩ রান, সেই সাথে পেলেন ৪১ বলে ফিফটি। ১৯তম ওভারে যেয়ে লুক উডকেও ছাড়লেন না, ২ ছয় ও ১ চারে কার্যত ম্যাচ শেষ করে দিলেন সেখানেই। শেষ ওভারে প্রথম বল নিয়ে মাশরাফির বল থেকে ভো দৌড় দিয়েই ৫২ বলে ৭৯* রানের খুনে ইনিংস খেলে কুমিল্লাকে তিনি এনে দিলেন চতুর্থ শিরোপা।

    এর আগে সিলেটের ইনিংসে কুমিল্লা যেন খারাপ ফিল্ডিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিল। ১৮ রান দিয়ে আন্দ্রে রাসেল ভয়াবহ এক শুরু করার পরের ওভারেই তানভির ইসলামের বলে স্টাম্প খুইয়ে রানের খাতা খোলার আগে ফিরেছিলেন তৌহিদ হৃদয়। পরের ওভারেই রাসেলের শিকার হয়ে তিনে নামা মাশরাফি ফিরলে ফাটকাটা এদিন কাজে দেয়নি। ৫ম ওভারে ২৫ রানে থাকা শান্তকে নারাইন ফেরানোর সুযোগ তৈরি করলেও সেবার সেটা হাতছাড়া করেন মোস্তাফিজ। পাওয়ারপ্লে শেষে মুশফিককে নিয়ে তিনি ৪২ রানে পৌঁছানোর পর ৩৭ রানে আরও একবার জীবন পান ডিপ মিড উইকেটে থাকা কায়েসের সুবাদে। দশম ওভারে মুশফিক অর্ধ-সুযোগ দিয়ে বেঁচে গেলে ওই ওভারেই ৩৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন শান্ত। পরের ওভারে গিয়ার পাল্টে ১৫ রান নেওয়ার পর সেটা ধরে রাখতে গেলে মঈনের ফেলা টোপ গিলে তিনি ফেরেন ৪৫ বলে ৬৪ রানের ইনিংস শেষে। পয়রে ১৬তম ওভারেই সুযোগ পেয়েও ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজের শিকার হয়ে ফেরেন বার্ল। ১৮তম ওভারে তো টানা দুই বলে দুইবার সুযোগ পেয়েছিলেন লিন্ডে, যদিও ওই ওভারেই ৯ রানে তিনি ফেরায় আক্ষেপে পুড়তে হয়নি কুমিল্লাকে। উইকেট আসা যাওয়ার মাঝেই ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করা মুশফিক শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিলেন ৪৮ বলে ৭৪* রান করে, দিনশেষে যা এনে দিতে পারেনি সিলেতের প্রথম শিরোপা।