• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    কনওয়ে, রবীন্দ্রদের দাপুটে সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পণ

    কনওয়ে, রবীন্দ্রদের দাপুটে সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পণ    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড, আহমেদাবাদ(টস-নিউজিল্যান্ড/বোলিং)
    ইংল্যান্ড - ২৮২/৯, ৫০ ওভার (রুট ৭৭, বাটলার ৪৩, বেইরস্টো ৩৩, হেনরি ৩/৪৮, ফিলিপস ২/১৭, স্যান্টনার ২/৩৭)
    নিউজিল্যান্ড - ২৮৩/১, ৩৬.২ ওভার (কনওয়ে ১৫২*, রবীন্দ্র ১২৩*, কারান ১/৪৭)
    ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী


     

     

    নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম যেন খাঁখাঁ মরুভূমি; তার মাঝেই মঞ্চস্থ হল গতবারের ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন। আর সেখানেই গতবারের ফাইনালের ঝালটাই যেন এবারের উদ্বোধনী ম্যাচে মেটাল নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে ও রাচীন রবীন্দ্রর অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে একটা শক্ত বার্তাও দিয়ে রাখল নিউজিল্যান্ড।

    ২৮৩ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান উইল ইয়াং। তবে সেটা যেন ইংল্যান্ডের জন্য কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বের করে আনার মতই হয়ে যায়। কেন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে এদিন তিনে নামা রাচীন ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন আগেই; দলও শতরান ১২.১ ওভারেই ছুঁয়ে ফেললে এরপর কনওয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন সমানসংখ্যক বলে।

    ইংলিশ বোলারদের একদম পাড়ার বোলার বানিয়ে খেলতে থাকা এই দুই বাঁহাতি যেন একেবারেই অন্য পিচে ব্যাট করছিল বলে মনে হচ্ছিল। সেটারই পরিক্রমায় বিশ্বকাপ অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া ১৫-তম ব্যাটার হয়ে যান কনওয়ে, ৮৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে। এরপরের চার ওভারের মত দুজন রয়েসয়ে খেললেও রবীন্দ্রও ১৬-তম বিশ্বকাপ অভিষিক্ত হিসেবে সেঞ্চুরি পেয়ে যান ৮২ বলে। দুজনেই এরপর যেন দ্রুত ম্যাচ শেষ করার বাড়তি তাড়না নিয়ে খেলতে শুরু করেন। কারানকে দুই চার, এক ছয় মেরে কনওয়ে ৩৫-তম ওভারে নেন ২০ রান। মাত্র এক রান দিয়ে শুরু করে লিয়াম লিভিংস্টোনের ওপর পরের ওভারে দুজন চড়াও হয়ে ১৬ রান নিলে এরপরের ওভারেই নিশ্চিত হয়ে যায় কিউইদের জয়।  

    এর আগে টসে জিতে নিউজিল্যান্ড যখন ফিল্ডিং নিয়েছিল তখন অনেকেরেই ভুরু কুঁচকালেও নিজেদের পরিকল্পনার পূর্ণ বাস্তবায়ন দিয়েই ইংল্যান্ডকে ২৮২ রানে বেঁধে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। শুধু এই সিদ্ধান্তই নয়, পুরো ইনিংস জুড়েই দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব করে নিজের বোলারদের পুরোটাই আদায় করে নিয়েছেন টম ল্যাথাম।

    লেংথ বলে শুরু থেকেই ডাভিড মালানকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখার পর তাকে ওই লেংথ বলেই উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করিয়েছেন ম্যাট হেনরি। অথচ অন্য প্রান্তে ভাল শুরু করেও প্রথম পাওয়ারপ্লে শেষ হতেই আঁটসাঁট বল করতে থাকা মিচেল স্যান্টনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ৩৩ রানে ফেরেন জনি বেইরস্টো। প্রথম পাওয়ারপ্লের পরের দশ ওভারে সেখান থেকেই দাপট দেখান স্পিনাররা। ১৭-তম ওভারে ১৬ বলে ২৫ রানে থাকা হ্যারি ব্রুককে বাউন্ডারির ক্যাচে রচীন রবীন্দ্র ফেরানোর পর বল হাতে নিয়েই দারুণ এক অফ ব্রেকে মঈন আলীর স্টাম্প উপড়ে ফেলেন গ্লেন ফিলিপস।

    সেখান থেকে অবশ্য দলের হাল ধরেন জো রুট ও অধিনায়ক জস বাটলার। বাটলার এসেই প্রতি আক্রমণের পথ বেছে নিলে রুটও কিছুটা ভারমুক্ত হন। স্যান্টনার দুজনকে লাগামছাড়া হতে না দিলে নিশাম ও রবীন্দ্রকে হাত খোলার জন্য বেঁছে নেন দুজনে। তবে আক্রমণে ফিরে আবারও হন্তারকের ভুমিকায় হেনরি! বাটলারকে কিছুটা ফাইনে খেলতে বাধ্য করে ভেতরে ঢোকা এক বলে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান তিনি; ইংল্যান্ড অধিনায়ক থামেন ৪২ বলে ৪৩ রানে। ততক্ষণে ফিফটি পূর্ণ করা ফেলা রুটে ভর করে ইংল্যান্ড অবশ্য যখন তিনশো পেরুনোর স্বপ্নও দেখছিল তখনই আক্রমণে ফিরেই তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ফিলিপস। ৭৭ রানে থাকা রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ফুল লেংথের বল মিস করে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন রুট। পরের ওভারেই হেনরির তৃতীয় শিকার হয়ে স্যাম কারান ফিরলে ইংল্যান্ড অবশ্য শঙ্কায় পড়ে যায় পঞ্চাশ ওভার খেলা নিয়েই! সেখান থেকেই আদিল রশিদ-মার্ক উডের শেষ জুটিতে ২৬ বলে ৩০* রান পেলে ইংল্যান্ড পেয়ে যায় লড়াইয়ের রসদ।