• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    ডি লিড পরিবার ও বিশ্বকাপের বাবা-ছেলেদের গল্প

    ডি লিড পরিবার ও  বিশ্বকাপের বাবা-ছেলেদের গল্প    

    কিছু মানুষের ডিএনএতেই থাকে ক্রিকেট। যেমন নেদারল্যান্ডস তারকা বাস ডি লিড। বাবার পথ ধরে হল্যান্ডকে নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছেন এই অলরাউন্ডার। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে চার উইকেট নিয়ে সবাইকে বাবার কথাই মনে করিয়ে দিলেন তিনি। ২০ বছর আগে পার্লে ভারতের বিপক্ষে চার উইকেট নিয়েছিলেন টিম ডি লিড, যা এখনো কোনো ডাচ বোলারের জন্য বিশ্বকাপে বেস্ট বোলিং ফিগার। 

    টিম ডি লিড নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেট ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব। ১৯৯৬, ২০০৩, ২০০৭; দেশের ইতিহাসের প্রথম তিন বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করায় বড় ভূমিকা ছিল তার। বিশ্বকাপেও দলের সবচেয়ে বড় পারফর্মারদের একজন ছিলেন তিনি। বাস ডি লিডের অবসরের পর, গত দুই বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয় ডাচরা। ১২ বছর পর আরেক ডি লিডের হাত ধরে আবার বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছে হল্যান্ড। ডি লিডপুত্র এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে মূল্যবান ক্রিকেটারও।  

    বিশ্বকাপ ইতিহাসে পিতা-পুত্রের খেলার রেকর্ড এই প্রথম না। এর আগেও কিছু বিখ্যাত পিতা-পুত্রকে দেখা গেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে। 

    ক্রিস ব্রড (১৯৮৭), স্টুয়ার্ট ব্রড (২০০৭, ২০১১, ২০১৫)

    ১৯৮৭ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ব্যাক-আপ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ছিলেন ওপেনার ক্রিস ব্রড। বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচে খেলেছিলেন। করেছিলেন মোট ৬৭ রান। সর্বোচ্চ আসরে বাবার ব্যাটিং ব্যর্থতা দেখেই কি না, উলটো রাস্তায় নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। পেসার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা এই ব্রড টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে নিয়েছেন ছয়শর বেশি উইকেট। ওয়ানডেতে খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপ (২০০৭, ২০১১, ২০১৫)। 

    জিওফ মার্শ (১৯৮৭, ১৯৯২), মিচেল মার্শ (২০১৫, ২০২৩), শন মার্শ (২০১৯)

    অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন জিওফ মার্শ। সাতাশি বিশ্বকাপে ৬১ গড়ে মোট ৪২৮ রান করেছিলেন এই ওপেনার। তার ডিএনএ পাওয়া দুই পুত্রই পরে গায়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার জার্সি। বড় সন্তান শন মার্শ বাবার মতোই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন। ছিলেন অজিদের ১৯ বিশ্বকাপ দলে। এবারের বিশ্বকাপে খেলছেন তার ছোটভাই মিচেল মার্শ। ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ওপেন করবেন তিনি। বাবা বা ভাই আগে বল হাতে না নিলেও ছোট মার্শ কিন্তু বোলিংয়েও পাকা। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন এই মিডিয়াম পেসার। 

    রড ল্যাথাম (১৯৯২), টম ল্যাথাম (২০১৫, ২০১৯, ২০২৩)

    জেনেটিক মিল চোখে পড়ে ল্যাথাম পরিবারের এই দুই ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেও। দুজনই উইকেট-কিপার ব্যাটার। বাবা রড ল্যাথাম কিউয়িদের হয়ে খেলেছেন ৯২ বিশ্বকাপে। মার্টিন ক্রোর অধীনে সেবার সেমিফাইনাল খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। বাবার লিগাসিকে ইতোমধ্যেই ছাড়িয়ে গেছেন জুনিয়র ল্যাথাম। এই বাঁহাতি ব্যাটার তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন এবার। ১৫ বিশ্বকাপে দলের সাথে থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলেননি। তবে উনিশে কিউয়িদের রানার আপ হওয়ার পথে অবদান রেখেছেন। এরপর সময়ে সময়ে দলের অধিনায়কত্বও করেছেন টম। উইলিয়ামসনের অবর্তমানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবারের আসরের প্রথম ম্যাচেও দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। 

    কেভিন কারান (১৯৮৩, ১৯৮৭), টম কারান (২০১৯), স্যাম কারান (২০২৩)

    এই তালিকার বাকিদের তুলনায় এই বাবা-সন্তানরা একটু আলাদা। প্রয়াত কেভিন কারান ৮৩ ও ৮৭ বিশ্বকাপ খেলেছেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে, যাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কারান ও ডানকান ফ্লেচারের ৭০ রানের জুটি। সেটিই ছিল কেভিনের আন্তর্জাতিক অভিষেক। দুই বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে ২৮৭ রান ও ১১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তখনও জিম্বাবুয়ে টেস্ট স্ট্যাটাস না পাওয়ায় ও অফিসিয়াল কোনো সিরিজ না খেলায় আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি এই অলরাউন্ডার। 

    কেভিনের তিন সন্তান টম, বেন, স্যাম তিনজনই তাদের ক্যারিয়ার গুছিয়েছেন ইংল্যান্ডে। স্যাম কারান ২২-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টসেরার পদক পেয়েছিলেন। এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছে তার। বড়ভাই টম কারান ছিলেন ইংল্যান্ডের ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলে, কিন্তু খেলেননি কোনো ম্যাচ।