• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    'সব্যসাচী' স্যান্টনারে নিউজিল্যান্ডের আরও একটি বড় জয়

    'সব্যসাচী' স্যান্টনারে নিউজিল্যান্ডের আরও একটি বড় জয়    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, নিউজিল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস(টস-নেদারল্যান্ডস/ফিল্ডিং)
    নিউজিল্যান্ড - ৩২২/৭, ৫০ ওভার (ইয়াং ৭০, রবীন্দ্র ৫১, ল্যাথাম ৫৩, ভ্যান ডার মারওয়া ২/৫৬, ভ্যান মিকেরেন ২/৯, আরিয়ান ২/৬২)
    নেদারল্যান্ডস - ২২৩, ৪৬.৩ ওভার (অ্যাকারম্যান ৬৯, এডওয়ার্ডস ৩০, এঙ্গেলব্রেখট ২৯, স্যান্টনার ৫/৫৯, হেনরি ৩/৪০, রবীন্দ্র ১/৪৬)
    ফলাফল নিউজিল্যান্ড ৯৯ রানে জয়ী


     


    ইংল্যান্ডকে দোর্দণ্ড প্রতাপে হারানোর পর নেদারল্যান্ডস পরীক্ষা যে নিউজিল্যান্ড সহজেই উতরে যাবে, সেটাই ভাবা হচ্ছিল - হলও তাই। ব্যাটিংয়ের সময়ে নেদারল্যান্ডস মাঝে তাদের চেপে ধরেছিল, রান তাড়ায়ও একটা সময় পর্যন্ত চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল; তবে ম্যাচের কোনও মুহূর্তেই সেই অর্থে কিউইদের শঙ্কিত করতে পারেনি ডাচরা। ব্যাটিংয়ে চিন্তামুক্ত করার পর এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ফাইফার নিয়ে মিচেল স্যান্টনারই সেই কাজটা অনেকাংশেই করে দিয়েছেন কিউইদের জন্য।

    ৩২৩ রানের লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডস শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া বিক্রমজিত সিংকে ষষ্ঠ ওভারেই হেনরির কাছে হারিয়ে। প্রথম পাওয়ারপ্লের পরের ওভারেই এরপর নিজের স্পিনের কারুকাজ দেখানোর কাজটা শুরু করে ম্যাক্স ও’ডাউডকে ফেরান স্যান্টনার। তবে ১৭-তম ওভারে ডাচদের সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা আসে রবীন্দ্রর সৌজন্যে। বাস ডি লিডের উইকেটটার জন্য অবশ্য ট্রেন্ট বোল্টের আপাতদৃষ্টিতে সহজ কিন্তু দারুণ ক্যাচটা সাধুবাদ প্রাপ্য। ১৮ রানে ডি লিড ফিরলেও পঞ্চাশ রান তুলতেই যেখানে ডাচদের ১১.৩ ওভার লেগে গিয়েছিল সেখানে দলীয় শতরান তারা পেয়ে যায় ২২ ওভারে।

    কলিন অ্যাকারম্যানই মূলত লড়াইটা ধরে রেখেছিলেন, সাথে তেজা নিদানামুরুও খেলছিলেন বেশ। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত এক সিদ্ধান্ত থেকে তাড়াহুড়ো করে উইকেটটা দিয়েই আসেন ২১ রানে রান আউট হওয়া তেজা। সেখান থেকে অ্যাকারম্যান ফিফটি করলেও আঁটসাঁট লাইনে বল করে যাওয়া স্যান্টনার তাকে থামান ৭৩ বলে ৬৯ রান শেষে। লড়াইটাও সেখানেই মিইয়ে যায়। ডাচদের শেষ ভরসা অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস এই স্যান্টনারের দুই বলেই টানা দুই ছয়-চারে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন; তবে বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে বেশ বাইরে তার পরের বলটা করে এডওয়ার্ডসকে সুইপে টেনে ৩০ রানে থামান তিনি। ম্যাচের সবচেয়ে বিদঘুটে কাণ্ডটা ঘটে অবশ্য স্যান্টনারের ফাইফার পূর্ণ ৪৫-তম ওভারে। দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ মিস হওয়ায় বেঁচে যান স্কট এঙ্গেলব্রেখট। এক বল পরেই পরিষ্কার স্টাম্পিং হলেও থার্ড আম্পায়ারের ডাক আসে নো বলের - কারণ ল্যাথামের স্টাম্পের সামনে থেকে বল লুফে নেওয়া, যেটা নিয়ে ধারাভাষ্য কক্ষও ধন্দে পড়ে যায়। তবে আক্ষেপ ঘুচিয়ে ওভারের শেষ বলে রায়ান ক্লাইনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিশ্বকাপ ইতিহাসের মাত্র ৩য় বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে ফাইফার পান স্যান্টনার। বাকি কাজটুকু সেরে হেনরি নিশ্চিত করেন কিউইদের ৯৯ রানের জয়।
     
    কিউইদের ব্যাটিংয়ে আগের দিনে রান না পাওয়ায় ইয়াংয়ের শুরুটা হয় একটু সাবধানী; ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়ের যোগ্য সঙ্গে দ্রুতই উইকেট পড়ে নিয়ে খেলতে শুরু করেন তিনি। পাওয়ারপ্লেতেই তাই দুজন মিলে তুলে ফেলে ৬৩ রান। স্রোতের বিপরীতে অবশ্য স্বচ্ছন্দে খেলতে থাকা কনওয়েই ৪০ বলে ৩২ রানে ফেরেন। তা সত্ত্বেও নিউজিল্যান্ড দলীয় শতরানের দেখা পেয়ে যায় ১৯.৩ ওভারেই। যথারীতি ইয়াং ফিফটি তুলে নিলে রবীন্দ্র দেখান তার ফর্মের ঝলক। গিয়ার পাল্টাতে গিয়ে অন্যদিকে এরপরেই ভ্যান মিকেরেনের শিকার হয়ে ইয়াং থামেন ৮০ বলে ৭০ রানে। উইকেটে এসেই ড্যারিল মিচেল কাজটা সহজ করে দিলে রবীন্দ্র পেয়ে যান বলপ্রতি ফিফটি। তবে হুট করেই মনোযোগ হারিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ভ্যান ডার মারওয়ার শিকার হয়ে ৫১ রানে থামেন রবীন্দ্র।

    সেখান থেকেই আরিয়ান দত্ত, ভ্যান মিকেরেন, ভ্যান ডার মারওয়ারা চেপে ধরলে ৪৭ বলে ৪৮ রানের বেশি মিচেল তো যেতে পারেনি নাই, সাথে গ্লেন ফিলিপস ও মার্ক চ্যাপম্যানও পাননি দুই অংকের দেখা। অধিনায়ক টম ল্যাথাম এক প্রান্ত ধরে রাখলে পরে অন্য প্রান্তে ঝড় তোলেন স্যান্টনার। ল্যথাম ৫৩ রানে থামলেও শেষ তিন ওভারে আসে ৫৪ রান! স্যান্টনারের ১৭ বলে ৩৬* রান ও ম্যাট হেনরির ৪ বলে ১০* রানেই তিনশো পেরুনো সম্ভব হয়েছিল কিউইদের।