• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    রিজওয়ান, শফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রেকর্ড রান তাড়া

    রিজওয়ান, শফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রেকর্ড রান তাড়া    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা(টস-শ্রীলঙ্কা/ব্যাটিং)
    শ্রীলঙ্কা - ৩৪৪/৯, ৫০ ওভার (মেন্ডিস ১২২, সামারাবিক্রমা ১০৮, নিসাঙ্কা ৫১, হাসান ৪/৭১, হারিস ২/৬৪, শাদাব ১/৫৫)
    পাকিস্তান - ৩৪৫/৪, ৪৮.২ ওভার (রিজওয়ান ১৩১*, শফিক ১১৩, শাকিল ৩১, মাদুশাঙ্কা ২/৬০, থিকশানা ১/৫৯)
    ফলাফল - পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী


     

    বিশ্বকাপে এর আগে সাতবারের দেখায় একবারও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের মুখ দেখেনি শ্রীলঙ্কা, হল না এবারও। কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরির জবাব পাকিস্তান দিল আবদুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ রিজওয়ানের জোড়া সেঞ্চুরিতে। সেই সাথে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটাও নিজেদের করে নিয়েছে তারা।

    অথচ ৩৪৫ রানের লক্ষ্যে পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ইমাম-উল-হক ও বাবর আজমকে হারিয়ে বসে পাকিস্তান; দিলশান মাদুশাঙ্কার দুর্দান্ত ওপেনিং স্পেলে। তবে উইকেটে এসেই শফিকের কাজটা সহজ কর দেন রিজওয়ান। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে যেখানে এসেছিল ৪০ রান সেখানে দুজনে মিলে দলীয় শতরান পূর্ণ করে ফেলেন ১৮.৫ ওভারেই। ৫৮ বলে এরপর শফিক ফিফটি পেয়ে গেলে রিজওয়ানও একই অংকেই সারেন ফিফটির কাজটা। সেখান থেকে দুজনে আর পেছন ফিরে তাকাননি। বিশ্বকাপ অভিষেকেই ৯৭ বলে শফিক পেয়ে যান সেঞ্চুরি। দুজনেই স্পিনারদের যেভাবে একের পর এক ইন্সাইড-আউট শট খেলেছিলেন তাতেই যেন শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণ একেবারেই মিইয়ে গিয়েছিল। দুর্দান্ত শফিককে থামাতে প্রয়োজন ছিল দারুণ কিছু, সেটাই করে দেখালেন বদলি ফিল্ডার দুশান হেমন্থ। পয়েন্টে উড়ন্ত হেমন্থের ক্যাচে শফিক থামেন ১১৩ রানে।

    অন্য প্রান্তে কাফের আর পিঠের ব্যথায় আগে থেকেই কাতরাচ্ছিলেন রিজওয়ান। শফিক থামায় ম্যাচের মোড় তাই বদলাবে বলেই মনে হচ্ছিল। তবে সেসবের তোয়াক্কা না করে রিজওয়ান দৌড়ে গেলেন নিজের মতই; ব্যথা সহ্য করেই একের পর এক বেরিয়ে এসে শটের পসরা সাজিয়ে বসলেন। ৯৭ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া রিজওয়ানকে থামানোই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। মাঝে সাউদ শাকিল ফিরলেও তাই জয় নিশ্চিত করেছেন রিজওয়ান ওয়ানডেতে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে।

    এর আগে দ্বিতীয় ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে কুশল পেরেরা ফিরেছিলেন হাসানের শিকার হয়ে। সেখান থেকেই অবশ্য নিসাঙ্কাকে সঙ্গী করে শুরু হয় মেন্ডিসের ঝড়। আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের তুলোধোনা করে মেরেছিলেন ৮টি ছয়; এদিনও ব্যত্যয় ঘটেনি তাতে। অন্য প্রান্তে ফিফটির পরপর ৫১ রানে শাদাবের শিকার হয়ে নিসাঙ্কা ফিরলেও মেন্ডিস ছিলেন অবিচল। দলের শতরান ততক্ষণে পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় উইকেটে এসে সাদিরা সেই চাকাটাই সচল রাখার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে কোনও বোলারকেই স্বস্তি না দিয়ে একের পর এক পিক-আপ শট, বাউন্সার মোকাবেলা করে পাকিস্তানি বোলারদের লাইন এলোমেলো করে দেন মেন্ডিস। আফ্রিদিকে টানা তিন চার মেরে সেই যে বার্তা দিলেন সেখান থেকে মাত্র ৬৫ বলে সেঞ্চুরি করে হয়ে গেলেন বিশ্বকাপ ইতিহাে শ্রীলঙ্কার দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান। সেঞ্চুরির পর আরও এক দফা গিয়ার পালটে হাসানকে টানা দুর্দান্ত দুটো ছয় মেরে পরের বলেও একই কাজ করতে গিয়ে ৭৭ বলে ১২২ রানে থামেন মেন্ডিস।

    মেন্ডিস যেখানে থেমেছিলেন সেখান থেকেই ঝান্ডা বয়ে নিয়ে গিয়েছেন সাদিরা। মেন্ডিস ছয়ের ওপর নির্ভরশীল হলেও সাদিরা খেলেছেন একের পর এক মাটি কামড়ানো শট। সেখান থেকেই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান সাদিরা। তবে হাসানের শিকার হয়ে ৮৯ বলে ১০৯ রানে তিনি থামলে শেষ ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলতে পারে মোটে ৬১ রান, সেই সাথে হারায় ৬ উইকেট; ব্যবধানটাও হয়ে গিয়েছিল সেখানেই।