• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    পরাক্রমশালী প্রোটিয়াদের কাছে নতজানু ইংলিশরা

    পরাক্রমশালী প্রোটিয়াদের কাছে নতজানু ইংলিশরা    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা (টস-ইংল্যান্ড/বোলিং)
    দক্ষিণ আফ্রিকা - ৩৯৯/৭, ৫০ ওভার (ক্লাসেন ১০৯, রিজা ৮৫, ইয়ানসেন ৭৫*, টপলি ৩/৮৮, অ্যাটকিনসন ২/৬০, রশিদ ২/৬১)
    ইংল্যান্ড - ১৭০, ২২ ওভার (উড ৪৩*, অ্যাটকিনসন ৩৫, ব্রুক ১৭, কোটজিয়া ৩/৩৫, এনগিডী ২/২৬, ইয়ানসেন ২/৩৫)
    ফলাফল - দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৯ রানে জয়ী


     


    ডাচদের বিপক্ষে হারের ক্ষোভটা যেন ইংলিশদের ওপরে উগড়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিধ্বস্ত করে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় বৃহত্তম জয় তুলে নিয়েছে প্রোটিয়ারা।

    ৪০০ রানের লক্ষ্য দিয়েই ইংলিশদের ম্যাচ থেকে এক অর্থে ছিটকে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম পাওয়ারপ্লে যেতে না যেতেই দলের প্রথম চার ব্যাটার প্যাভিলিয়নের পথ ধরায় বাকিটুকুও নিশ্চিত হয়ে যায়। একদিকে এনগিডির লেংথে দিশেহারা, অন্যদিকে ইয়ানসেনের ল্যাটারাল মুভমেন্ট। প্রথম পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে টানা তিন চারে জস বাটলার লড়াই করার বার্তা দিলেও সব ওটুকেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১২-তম ওভারে বাটলারের পর ব্রুককেও জেরাল্ড কোটজিয়া ফেরালে এরপর ৮৪ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে ইংল্যান্ড।

    মাথার ওপর কোনও চাপ নেই বিধায় দুই পেসার গাস অ্যাটকিনসন ও মার্ক উড মনের সুখে ব্যাট হাঁকাতে থাকেন, পেয়ে যান সফলতাও। কেশব মহারাজের এক ওভারে তো তিন ছয়ও মারেন উড! তবে সেই মহারাজের বলেই স্টাম্প খুইয়ে ২১ বলে ৩৫ রানে অ্যাটকিনসন থামলে শেষ হয় ইংলিশদের ইনিংস। আহত হওয়ার কারণে টপলি নামতে না পারলে ১৭ বলে ৪৩* রানে থেকে উড শুধুমাত্র ব্যবধানটাও কমিয়েছেন।

    দিনের শুরুতে অসুস্থতায় টেম্বা বাভুমা খেলতে পারবেন না জানা গিয়েছিল আগেই। তার জায়গায় দলে এসেই নিজেকে প্রমাণে যে বদ্ধপরিকর ছিলেন রিজা সেটা বোঝা যাচ্ছিল তার ব্যাটিংয়েই। রিস টপলির শিকার হয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কুইন্টন ডি কক ফিরলেও রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে সঙ্গী করে দারুণ খেলেছেন রিজা। ১৬-তম ওভারে দুজন মিলে দলকে শতরান এনে দেওয়ার পরের ওভারেই দুজনেই পান ফিফটি। ৪৯ বলে ডুসেন তার ১৪-তম ওয়ানডে ফিফটি পেলে রিজা নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ফিফটি পেয়ে যান ৪৮ বলে। আদিল রশিদকে এরপর মিড উইকেটের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬১ বলে ৬০ রানে থাকা ডুসেন। তবে এরপর রুটকে দারুণ দুই ছয় মেরে গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন রিজা। সেই ধারা বজায় রাখতে গিয়েই অবশ্য রশিদের বলে স্টাম্প খুইয়ে শেষ হয় রিজার ৭৫ বলে ৮৫ রানের ইনিংস।

    সেখান থেকেই শুরু হয় অবিশ্বাস্য এক ইনিংসের। দলীয় ২০০ রান দক্ষিণ আফ্রিকা ছোঁয় ৩১-তম ওভারে। এইডেন মার্করামের সাথে সবে যোগ দিয়ে নিজ ছন্দে খেলছেন ক্লাসেন। সুবিধা করতে না পারা মার্ক উডের জায়গায় টপলি আক্রমণে ফিরেই মার্করামকে থামান ৪২ রানে; নিজের পরের ওভারে তুলে নেন ডেভিড মিলারের উইকেটটাও। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস যখন খেই হারানোর দিকে এগুচ্ছে, ৩১-৪১ ওভারে যেখানে তারা তুলেছে ৬৩ রান ঠিক তখনই জ্বলে উঠলেন ক্লাসেন। ওয়াঙ্খেড়েতে প্রখর রোদ আর গরমে ততক্ষণে তিনি ধুঁকছেন; একটু পরে হয় ক্র্যাম্প। সেটা নিয়েই ইংলিশ পেসারদের এক হাত নিলেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। ৪০ বলে যেখানে ছুঁয়েছিলেন ফিফটি, সেখানে পরের ২০ বলেই করলেন পরের পঞ্চাশ রান! যেই টপলিকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল প্রোটিয়ারা সেই টপলির ওভার থেকে ১৯ রান তুলে ইয়ানসেনের সাথে জুটি বেঁধে বড় সংগ্রহের বার্তা দিলেন। জায়গায় দাঁড়িয়ে উডের পরপর দুই বলে ছয়-চারে ৬১ বলে সেঞ্চুরি করে ফেললে অন্য প্রান্তে টানা তিন বাউন্ডারিতে ৩৫ বলে ফিফটি করেন ইয়ানসেন। দুজনে মিলে এরপর টপলির করা ৪৯-তম ওভার থেকে তুলেন ২৬ রান! অ্যাটকিনসনের শেষ ওভারে ৬৭ বলে ১০৭ রানে ক্লাসেন থামলেও ৪২ বলে ইয়ানসেন ৭৫* রান করায় ইংল্যান্ডের সামেন ৪০০ রানের সুবিশাল লক্ষ্য দাঁড় করায় তারা।