লঙ্কানদের কাছে টানা পঞ্চম বিশ্বকাপে ধরাশায়ী ইংলিশরা

   

২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা (টস-ইংল্যান্ড/ব্যাটিং)
ইংল্যান্ড - ১৫৬, ৩৩.২ ওভার (স্টোকস ৪৩, বেইরস্টো ৩০, মালান ২৮, কুমারা ৩/৩৫, ম্যাথিউজ ২/১৪, রাজিথা ২/৩৬)
শ্রীলঙ্কা - ১৬০/২, ২৫.৪ ওভার (নিসাঙ্কা ৭৭*, সামারাবিক্রমা ৬৫*, উইলি ২/৩০)
ফলাফল - শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেটে জয়ী

---

 

২০০৭ থেকে ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় নেই ইংল্যান্ডের নামের পাশে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এবার ফর্মটা খারাপ গেলেও ইনজুরিতে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তবুও এবার বাজির ঘোড়া ছিল তাদের দিকেই। সেসবের তোয়াক্কা না করে ইংল্যান্ডকে পেয়েই আরও একবার আজ জ্বলে উঠল শ্রীলঙ্কা। মাত্র ১৫৬ রানেই তাদের গুটিয়ে দেওয়ার পর লঙ্কানরা পেয়েছে ৮ উইকেটের জয়।

১৫৭ রানের লক্ষ্যে শুরুতে অবশ্য ভয় পেয়ে যাওয়ার কথা শ্রীলঙ্কার। দ্বিতীয় ওভারেই আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে উইলির বল আকাশে ভাসিয়ে ফিরে যান কুশল পেরেরা। স্লিপে এরপর রুট ক্যাচ ফেললেও ষষ্ঠ ওভারে এসে ১১ রানে থাকা কুশল মেন্ডিসকেও ফেরান উইলি। তবে এরপর আর ম্যাচে কিছু করতে পারেনি ইংল্যান্ড। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৪০ রান এলে এরপর খোলস থেকে বের হয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান সাদিরা সামারাবিক্রমা ও পাথুম নিসাঙ্কা। দল শতরান পেয়ে যায় ১৬.২ ওভারেই। আর ৫৪ বলে নিজের টানা চতুর্থ বিশ্বকাপ ফিফটি পেয়ে যান নিসাঙ্কা। জুটি ৯৪ বলেই শতরান পূর্ণ করার কিছুক্ষণ পরে ৪৪ বলে ফিফটি পেয়ে যান সাদিরাও। ৮৩ বলে ৭৭* রানে নিসাঙ্কা ও ৫৪ বলে ৬৫* রানে সাদিরা অপরাজিত থাকলে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ জিতে যায় প্রায় অর্ধেক ওভার হাতে নিয়েই।

 এর আগে চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে প্রথম ওভারেই আজ জনি বেইরস্টোকে ফেরাতে পারতেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। এলবিডব্লিউর আবেদন না করায় ইংলিশ ওপেনাররা যথারীতি নিজেদের খুঁজে পেয়ে খেলতে থাকে আপন ছন্দে। তবে আক্ষেপটা বেশি লম্বা হতে দেয়নি শ্রীলঙ্কা। হতে দেননি একজন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। ছিলেন না দলে, মাথিশা পাথিরানার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণেই এই ৩৮ বছর বয়সীকে ডাকা হল দলে। ওয়ানডেতে গত তিন বছরে বল হাতে না নেওয়ার সেই ম্যথিউজ নিজের প্রথম ওভারেই তৃতীয় বলে থামালেন ২৫ বলে ২৮ রানে থাকা ডাভিড মালানকে। কিছুক্ষণ পরেই তারই দারুণ থ্রোতে রান আউট জো রুট। অন্য প্রান্তে বেইরস্টোকে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই মিড অনে তালুবন্দি করেন কাসুন রাজিথা ৩০ রানে।

এরপরেই দৃশ্যপটে আবির্ভাব লহিড়ু কুমারার। ইংল্যান্ডকে দম ফেলার সুযোগ না দিয়ে হালকা ভেতরে ঢোকা বলে অধিনায়ক জস বাটলারকে তালুবন্দি করেন উইকেটের পেছনে। নিজের পরের ওভারেই দারুণ এক ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন লিয়াম লিভিংস্টোনকে। ৮৫ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসা ইংল্যান্ডকে উদ্ধারের চেষ্টা এরপর চালিয়েছেন বেন স্টোকস। দল শতরান পায় ২১.১ ওভারে এসে। তবে অন্য প্রান্তে উইকেট আসা যাওয়ার মিছিলে দাঁড়িয়ে সেই অর্থে দলকে সাহায্য করতে পারেননি স্টোকস। ম্যাথিউজের নিরীহ এক বল পয়েন্টে সরাসরি তুলে দিয়ে মঈন আলী  ফিরলে তার পরের ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে থামেন ক্রিস ওকস। চাপ সামলাতে না পেরে সেই কুমারার ওপর চড়াও হতে গিয়েই ৭৩ বলে ৪৩ রানে থামেন স্টোকস। শেষ দুই জুটিতে ১৯ রান আসে তাও, ডেভিড উইলির ১৪* রানের কল্যাণে। রান আউট আর থিকশানার আঘাতে ইংল্যান্ডকে ১৫৬ রানে গুটিয়ে যেন নিজেদের ধারা বজায় রাখার কাজটা সেখানেই এক ধাপ সেরে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা।