• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    শামি-সিরাজের বিধ্বংসী স্পেলে লঙ্কানদের লজ্জায় ডুবিয়ে সেমিতে ভারত

    শামি-সিরাজের বিধ্বংসী স্পেলে লঙ্কানদের লজ্জায় ডুবিয়ে সেমিতে ভারত    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, ভারত-শ্রীলঙ্কা (টস-শ্রীলঙ্কা/বোলিং)
    ভারত - ৩৫৭/৮, ৫০ ওভার (গিল ৯২, কোহলি ৮৮, শ্রেয়াস ৮২, মাদুশাঙ্কা ৫/৮০, চামিরা ১/৭১)
    শ্রীলঙ্কা - ৫৫, ১৯.৪ ওভার (রাজিথা ১৪, থিকশানা ১২, ম্যাথিউজ ১২, শামি ৫/১৮, সিরাজ ৩/১৬, জাদেজা ১/৪)
    ফলাফল - ভারত ৩০২ রানে জয়ী


     

    ওয়াঙ্খেড়েতে শ্রীলঙ্কাকে যেন পাড়ার দল বানিয়ে ছাড়ল ভারত। এশিয়া কাপ ফাইনালের স্মৃতি ফিরিয়ে এনে শ্রীলঙ্কাকে রীতিমত অপমান করে টানা সপ্তম জয় পেল ভারত।


    ভারতের তিন পেসারে তোলা প্রশ্নে যেন চোখে সর্ষে ফুল দেখেছে লঙ্কান ব্যাটাররা। জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, মোহাম্মদ শামি - তিন জনেই কোনও রান গোনার আগেই পেয়েছেন উইকেট। এর মধ্যে বুমরাহ ও শামি তো পেয়েছেন নিজেদের প্রথম বলেই - ওয়ানডে ইতিহাসে দুই ওপেনিং বোলারের নিজেদের প্রথম বলেই উইকেট পাওয়ার নজির এই প্রথম। ইনিংসের প্রথম বলেই নিসাঙ্কাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শুরুটা করে দিয়েছিলেন বুমরাহ। এরপর থেকেই এশিয়া কাপের সিরাজকেই যেন দেখা গেল মুম্বাইতে। নিজের প্রথম বলেই করুনারত্নেকে ফিরিয়ে পরের ওভারে ফেরালেন সাদিরা ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ১৬ রান তুলতে সমর্থ শ্রীলঙ্কা যেখানে এই দুজনকে সামলে সামনে আগানোর কথা ভাবছিল তখনই আক্রমণে এসে শামি তাদের সেই আশা ধূলিসাৎ করে দেন।


    নিজের প্রথম ওভারেই ডাবল উইকেট মেইডেন নিয়ে শামি ফেরান ২৪ বলে ১ রান করা আসালাঙ্কা ও হেমন্থকে। ২৯ রানে অষ্টম উইকেট হিসেবে শামির কাছে স্টাম্প খুইয়ে ম্যাথিউজ যখন ফিরলেন তখন শ্রীলঙ্কাকে চোখ রাঙাচ্ছিল ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের লজ্জা। সেই লজ্জা থেকে থিকশানা-রাজিথা বাঁচালেও শামির ফাইফার পূর্ণ করার দিনে ৫৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা, যা বিশ্বকাপে কোনও টেস্ট খেলুড়ে দেশের হয়ে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।


    অথচ দিনের মাত্র দ্বিতীয় বলেই দিলশান মাদুশাঙ্কার দারুণ এক বলে স্টাম্প খুইয়ে ৪ রানে ফিরেছিলেন ভারত অধিনায়ক। এরপর থেকেই শুরু ভারতের রান পাহাড় গড়ার কাহিনী। তবে সেই কাহিনী রচনা হয়ত হত না যদি পাওয়ারপ্লেতেই গিল ও কোহলির দেওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারত শ্রীলঙ্কা। পঞ্চম ওভারে আসালাঙ্কা কাভার পয়েন্টে গিলের তুলে দেওয়া ক্যাচ মিস করার পরের ওভারেই কোহলির ফিরতি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন চামিরা। দুজনের কেউ আর পেছন ফিরে তাকাননি। ১৬ ওভারেই দলীয় শতরান পূরণ করার পর বলপ্রতি ফিফটি পেয়ে যান কোহলি, গিল ফিফটি পান ৫৫ বলে। চামিরা ও হেমন্থকে দারুণ দুই ছয় মেরে গিল যখন গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, সেঞ্চুরিও তখন হাতছানি দিতে শুরু করেছিল। তবে হন্তারকের ভূমিকায় তখন ফিরে আসেন সেই মাদুশাঙ্কা, যার বলেই পড়েছিল গিলের ক্যাচ। উইকেটের পেছনে তাকে তালুবন্দি করিয়ে ৯২ রানে গিলকে থামান এই বাঁহাতি পেসার। অন্যদিকে ৪৯-তম ওয়ানডে সেঞ্চুরির ঘ্রাণ পেতে থাকা কোহলিকেও আশাহত করেন তিনিই, নিজের পরে ওভারে, ৯৪ বলে ৮৮ রানের ইনিংস থামিয়ে।


    তবে ৪০-তম ওভারের আগেই ২৫০ রান তুলে ফেলা ভারতের ইনিংসের লাগাম শ্রীলঙ্কা টেনে ধরতে পারেনি এরপর ২১ রানে রাহুলকে ফিরিয়েও। শ্রেয়াসের ঝড় বয়ে গেছে ওয়াঙ্খেড়ের বাইশ গজে। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করা শ্রেয়াসকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন জাদেজাও। তবে সেঞ্চুরি স্বপ্ন বুনতে থাকা শ্রেয়াসকেও আশাহত করেছেন মাদুশাঙ্কা, ৫৬ বলে ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংস শেষে। ২৪ বলে ৩৫ রান করে রান আউট হওয়ার আগে অবশ্য জাদেজা দলক ঠিকই ৩৫০ পেরুতে সাহায্য করেছেন। আর তাতেই কোনও সেঞ্চুরি ছাড়া ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছে ভারত। সেই সাথে মাদুশাঙ্কা ফাইফার পেলেও তাকে মেনে নিতে হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরুচে ফাইফারের রেকর্ড।