• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    বড় জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দৌড়ে টিকে রইল ইংলিশরা

    বড় জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দৌড়ে টিকে রইল ইংলিশরা    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, ইংল্যান্ড-নেদাল্যান্ডস (টস-ইংল্যান্ড/ব্যাটিং)
    ইংল্যান্ড - ৩৩৯/৯, ৫০ ওভার (স্টোকস ১০৮, মালান ৮৭, ওকস ৫১, ডি লিড ৩/৭৪, আরিয়ান ২/৬৭, ভ্যান বিক ২/৮৮)
    নেদারল্যান্ডস - ১৭৯, ৩৭.২ ওভার (নিদামানুরু ৪১*, এডওয়ার্ডস ৩৮, বারেসি ৩৭, মঈন ৩/৪২, রশিদ ৩/৫৪, উইলি ২/১৯)
    ফলাফল - ইংল্যান্ড ১৬০ রানে জয়ী


     

    ভয়াবহ এক বিশ্বকাপ যাত্রার শেষাংশে এসে নিজেদের খুঁজে পেল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বেন স্টোকসের প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরির সাথে নিজেদের আজ মেলে ধরলেন দুই ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদ ও মঈন আলী। তাতেই বড় জয় দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দৌড়ে ভালমতই টিকে থাকল ইংল্যান্ড।

    ৩৪০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পর বল হাতেও ডাচদের জীবনটা কঠিন করে তোলেন দুই পেসার ওকস-উইলি। ওকসকে উপহার দিয়ে আরও একবার ব্যর্থ হয়ে ম্যাক্স ও;ডাউড ফিরলে উইলির সুইংয়ে উইকেটের পিছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কলিন অ্যাকারম্যান। তাতেই প্রথম পাওয়ারপ্লেতে মোটে ২৩ রান তুলতে পারে ডাচরা। তবে স্পিনাররা আসতেই খোলস থেকে বেরিয়ে ওয়েসলি বারেসি চড়াও হয়েছিলেন রশিদের ওপর। সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে অবশ্য ৬২ বলে ৩৭ রানে থামতে হয় তাকে। তবে এঙ্গেলব্রেখটকে নিয়ে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস চেষ্টা করছিলেন লড়াই করার। স্পিনারদের দারুণ সব এক হাতের সুইপ খেলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন ডাচ অধিনায়ক। অন্য প্রান্তে অবশ্য উইলি ফিরলে তাকে তুলে মারতে গিয়ে ৩৩ রানে এঙ্গেলব্রেখট থামলে রশিদের শিকার হয়ে বাস ডি লিডও ফেরেন।

    অন্য প্রান্তে উইকেটের আসা যাওয়ার মাঝে তাই আর সুবিধা করতে না পেরে মঈনের বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে শেষ হয় এডওয়ার্ডসের ৪২ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। সেখান থেকেই তাসের ঘরের মত লুটিয়ে পড়ে ডাচরা। অ্যাটকিনসন, মঈনদের দারুণ দুটো ছয় মেরে অন্য প্রান্তে যেখানে নিদামানিউরু লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছিলেন, যোগ্য সঙ্গের অভাবে তা আর করতে পারেননি। ৪১* রানে অন্য প্রান্ত থেকে চেয়ে চেয় দেখলেন অধিনায়ক ফেরার ৩.২ ওভারের মধ্যেই ৪ উইকেট খুইয়ে দলকে গুটিয়ে যেতে।

    এর আগে দুই ওপেনার ইংলিশদের এনে দিয়েছিলেন দারুণ শুরু, বলা চলে ডাভিড মালানের সুবাদেই সেটা সম্ভব হয়েছিল। সপ্তম ওভারেই আরিয়ান দত্তের বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে জনি বেইরস্টো থামলেও প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৭০ রান পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। রুটকে সঙ্গী করে দারুণ খেলতে থাকা মালান ৩৬ বলেই ফিফটি পেয়ে গেলে ইংল্যান্ড শতরান পেয়ে যায় ১৫.৫ ওভারেই। মালান সানন্দে বাউন্ডারি বের করার পাশাপাশি প্রান্ত বদল করতে সক্ষম হলেও রুটকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ডাচরা। ২১-তম ওভারে সেই শিকল ছেড়ে বের হতে গিয়েই খেলতে গেলেন তার প্রিয় রিভার্স স্কুপ। তবে ইংল্যান্ডের পুরো বিশ্বকাপ যাত্রার সমার্থক হয়েই যেন প্রিয় সেই শটে ভ্যান বিকের কাছে স্টাম্প খুইয়ে থামলেন ৩৫ বলে ২৮ রান করা রুট। পরের ওভারেই স্টোকসের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যেতে থাকা মালান। ৭৪ বলে ৮৭ রানে মালান ফিরলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে আরও একবার ধস নামার উপক্রম হয়। একাদশে ফেরা হ্যারি ব্রুক উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন বাস ডি লিড, তার কিছুক্ষণ পরেই ভ্যান মিকেরেনের শিকার হয়ে আসরে আরও একবার এক অংকের ঘরে থেকেই বিদায় নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। সেখান থেকে ডাচরা চেপে ধরলে পাঁচ ওভারের মাথায় আরিয়ানের ভাসানো বলে ধরা খান ১৫ বলে ৪ রান করতে সমর্থ মঈন।

    সেই চাপ থেকে মুক্ত হতে গিয়েই ৩৮.২ ওভারে ভ্যান বিকের শিকার হতে পারতেন স্টোকস, তবে ফাইন লেগে কিছুটা দৌড়ে এগিয়ে গেলেও শেষমেশ বল তালুবন্দি করতে পারেননি আরিয়ান। সেই সুযোগেই ৫৮ বলে স্টোকস পেয়ে যান ফিফটি। ওকসকে নিয়ে এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। পুরো ইনিংস জুড়ে দারুণ বল করা আরিয়ান ৪৫-তম ওভার করতে এলে তাকে সপাটে হাঁকাতে শুরু করেন ওকস। নো-বলের মাশুল গুনে স্টোকসের কাছে ১ চার, ৩ ছয়ে ২৪ রান খরচ করেন আরিয়ান। এক ওভার পরেই দুজন মিলে ডি লিডের ওপর চড়াও হয়ে ১৭ রান তুললে তার পরের ওভারটা হয় আরও ঘটনাবহুল! মাঝে ৭৭ বলে স্টোকসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি পূর্ণ হলে ৪৯-তম ওই ওভারে ওকস টানা ছয়, চারে ৪৪ বলে ফিফটি পেলেও পরের বলে থামেন ৫১ রানে। পরের বলে এসেই ছয় মেরে বিদায় নেন ডেভিড উইলিও। শেষ ওভারে ভ্যান বিকের শিকার হয়ে ৮৪ বলে ১০৮ রানে স্টোকস থামলেও কাজটা সেরেই ফিরেছেন। শেষ দশ ওভারে ১২৪ রান তুলে ইংল্যান্ড পেয়ে গিয়েছে তাদের কাঙ্ক্ষিত সংগ্রহ।