এ শুধু ক্যাচের দিন!
‘ডিড হি টেক ইট? ইট ডাজনট সিম দ্যাট ওয়ে, ইট ডাজ লুক দ্যাট....... হি হ্যাজ কট ইট!’
নুয়ান প্রদীপের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলটা পুল করতে গিয়েছিলেন নিক কম্পটন। ফাইন লেগে সুরংগা লাকমাল প্রথমে একটু সামনে এলেন। এরপর পেছনে, হাত উপরের দিকে বাড়িয়ে ধরে পেছন ঘুরে পড়ে গেলেন। পড়েই থাকলেন। ধারাভাষ্যে মাইকেল হোল্ডিংয়ের বিস্ময়টা তখনোই! খানিক বাদেই বোলার, সতীর্থরা ছুটলেন লাকমালের দিকে, তাঁরাও যে নিশ্চিত ছিলেন না, ক্যাচটা ঠিকমতো নিতে পেরেছেন কিনা তিনি!
হতভম্ব কম্পটন যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না, ড্রেসিংরুমে হাঁটা দিয়েও ফিরে চাইছিলেন পেছন দিকে! ফর্মের অবস্থা যাচ্ছেতাই, আগের টেস্টের একমাত্র ইনিংসে শুন্যের পর এবার করলেন ৯। এর ওপর যদি এমন ক্যাচে আউট হন, কম্পটনকে তো হতাশা ঘিরে ধরবেই!
তবে লাকমালের ক্যাচটা শ্রীলঙ্কার প্রথম ‘অসাধারণ’ ক্যাচ নয়।
এই লাকমালের বলেই স্লিপে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিয়েছেন দিমুথ করুনারত্নে। করুনারত্নের ক্যাচেই নিশ্চিত হয়েছে, দশ হাজারী ক্লাবে কুকের প্রবেশের অপেক্ষাটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে আরেকটু। অপেক্ষাটা যদিও শুধুই ৫ রানের, ২০ রান যথেষ্ট হতো ইংলিশ অধিনায়কের, করতে পারলেন ১৫।
কুক বা কম্পটনের ইনিংসগুলির মতো না হলেও হেলস বা ভিনসের ইনিংসও শেষ হয়েছে হতাশায়। আবার সেঞ্চুরি উঁকি মেরেও ফিরে গেছে হেলসের(৮৩) কাছ থেকে, আর প্রথম বড় ইনিংস পাবার অপেক্ষাটাও বাড়ছে ভিনসের(৩৫)। তবে দুজনের শেষেই আছে একটা ‘সাধারণ’, ওই যে ‘অসাধারণ’ ক্যাচ!
মিলিন্ডা সিরিবর্ধনেকে জোরের ওপর কাট করতে গিয়েছিলেন হেলস, তবে গড়বড় করে ফেলেছেন বল বাছতে গিয়ে। কাটের সিদ্ধান্তটা নিতে একটু দেরীই করে ফেলেছিলেন, বলটাও ছিল কাটের জন্য বেশ আঁটসাঁটই। বল গেল স্লিপে, এরপরই যেন হেলসের ‘ভুল’কে ছাপিয়ে গেল লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ক্যাচ। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে যে ক্যাচ নিলেন, ‘অসাধারণ’ বললেও বোধহয় কম হয়ে যায়!
সেঞ্চুরিটা দূরে সরে গেল আরেকবার, হেলসের কাছ থেকে!
একই কথা প্রযোজ্য লাহিরু থিরিমান্নের জন্যও। সিরিবর্ধনে আবার বোলার, ভিনস ড্রাইভ করতে গিয়েও যেন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না শটটা। শর্ট কাভারে থিরিমান্নে শ্রীলঙ্কার ‘ক্যাচের দিন’টারই আরেকটা স্বীকৃতি দিলেন!
ক্যাচ আউট হয়েছেন জেমি বেইরস্টোও। ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যাচের অন্যতম নায়ক দীনেশ চান্ডিমালকে ক্যাচ দেয়ার আগে দুই রানের জন্য পাননি ফিফটির দেখা। আর জো রুট দেখতে পাচ্ছিলেন সেঞ্চুরিই। গত ইংলিশ গ্রীষ্ম অসাধারণ কাটানো রুট হেডিংলিতে একটু হতাশই করেছিলেন, চেস্টার-লি-স্ট্রিটে যদি কোনো হতাশা থাকে, তাহলে ৮০ রান করার পর অমন শট খেলে আউট হওয়াতেই আছে! ব্যাকলেংথের বলটা না করলেন পুল, না করলেন গ্লান্স, শুধু তুলে দিলেন আকাশে। কাভারে কুশল সিলভা নিলেন সহজ ক্যাচটা।
ক্যাচময় দিনটা অপরাজিত থেকে শেষ করেছেন মঈন আলী(২৮) ও ক্রিস ওকস(৮)। ইংল্যান্ডের সংগ্রহটাও বেশ মানানসই, ৩১০।
তবে প্রথম টেস্টে ফিল্ডিংয়ে ভুগতে থাকা লঙ্কানদের ‘ক্যাচিং’-ই বোধহয় চেস্টার-লি-স্ট্রিটে তিন বছরের অপেক্ষা কাটানো টেস্টের প্রথম দিনের সবচেয়ে বড় পরিচায়ক!