'নীচু' উইকেট, 'উঁচু' বোলিং
দক্ষিণ আফ্রিকা : ১৮৯/১০, ৫০ ওভার, বেহারদিন ৬২, ম্যাক্সওয়েল ২-১৫
অস্ট্রেলিয়া : ১৪২/১০, ৩৪.২ ওভার, ফিঞ্চ ৭২, রাবাদা ৩-১৩
ফলাফল : দ.আফ্রিকা ৪৭ রানে জয়ী
১৯৭২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের পাঁচটি টেস্টই ড্র হয়েছিল। টনি কোজিয়ার সেবার তাঁর সম্পাদকীয়তে লিখেছিলেন, ক্যারিবীয় পিচের কথা। যে উইকেটে প্রাণ নেই, যে উইকেটে রোমাঞ্চ নেই! দর্শক তো আসবে না!
তবে ক্যারিবীয় আবহাওয়া, কন্ডিশন সবকিছু মিলিয়ে, সেই ‘নিষ্প্রাণ’ উইকেট কিন্তু পিছু ছাড়েনি। কিউরেটরদের শত চেষ্টাতেও মাঝে মাঝেই ফিরে আসে সে উইকেট। প্রভিডেন্স স্টেডিয়াম, গায়ানায় ফিরলো যেমন। তবে সে নিষ্প্রাণ উইকেটেই যে পেস-স্পিনের জোরালো এক ‘কম্বিনেশন’ রোমাঞ্চ ছড়াবে, তা কে জানতো!
নীচু, ধীরগতির প্রভিডেন্স উইকেট স্পিনারদের সহায়তা করেছে আগের দুই ম্যাচেও। ন্যাথান লায়নের সঙ্গে অ্যাডাম জ্যামপা, কোলটার-নাইল, হ্যাজলউড, মিচেল মার্শের পেস। এক ফারহান বেহারদিনই যা নিজের পঞ্চম ওয়ানডে ফিফটি পেয়েছেন, স্কোরকার্ড দেখলে মনে হবে, পেস-স্পিনের এ সমন্বয়ের কোনো জবাব ছিল না তেমন আফ্রিকানদের কাছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ম্যাচে আফ্রিকা করেছিল ১৮৮, এবার ১ রান বেশী।
তবে সেটাই যথেষ্ট হলো অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য। আফ্রিকা নেমেছিলেন তিন স্পিনার নিয়ে, তাহির, ফাংগিসোর সঙ্গে অভিষিক্ত শামসি। সঙ্গে রাবাদার পেস, পারনেলের লাইন-লেংথের যথাযথ প্রয়োগ। শুরুটা করেছিলেন পারনেলই। ওয়ার্নারকে করলেন এলবিডাব্লিউ। পরে স্মিথকেও ফিরিয়েছেন একইভাবে। স্মিথ উইকেটের পরই শুরু শামসি রোমাঞ্চ!
প্রথম ওভারে এলবিডাব্লিউয়ের আবেদন করলেন দুইবার। প্রথমবার ফিঞ্চকে আউট দিলেন না অন-ফিল্ড আম্পায়ার উইলসন, রিভিউ নিয়ে দেখা গেল আম্পায়ার্স কল। পরে আবার ম্যাক্সওয়েলকে আউট দিলেন উইলসন, যে বলটা বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগস্ট্যাম্প দিয়ে। পরের ওভারে আরও একটি আউট হতে পারতো, তবে আম্পায়াররা চাপে ছিলেন পুরো ম্যাচেই।
ধীরগতির নীচু উইকেটে বল প্যাডে লাগবে অনেকবার, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এই ধীরগতির উইকেটেও গতির সঞ্চার করেছেন রাবাদা। ম্যাথু ওয়েডকে যে বলে ডি ককের ক্যাচ বানালেন, সেটা ছিল প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার গতির। ওয়েড শুধু খোঁচাই মারতে পেরেছিলেন।
এক ফিঞ্চ ছাড়া বাকী সব অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের স্কোর দেখলেও মনে হবে, তাঁরা শুধু যাওয়া আসাই করতে পেরেছিলেন। ফিঞ্চ ছাড়া দুই অঙ্ক পেরিয়েছেন দুইজন, দশ ও এগারো নম্বর!
যা আশা হয়ে ছিলেন ফিঞ্চই। যখন নবম উইকেটে হিসেবে তিনি ফিরলেন, ফিরে গেল অস্ট্রেলিয়ার আশাও। এরপর বৃষ্টি এসেও তাই রক্ষা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ত্রিদেশীয় সিরিজের গায়ানা পর্বে তাই পয়েন্ট পেলো প্রত্যেক দলই।