• " />

     

    ব্র্যাভোর পর বোলারদের দাপট, পেরে উঠলো না প্রোটিয়ারা

    ব্র্যাভোর পর বোলারদের দাপট, পেরে উঠলো না প্রোটিয়ারা    

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮৫/১০, ৪৯.৫ ওভার (ব্র্যাভো ১০২, পোলার্ড ৬২; রাবাদা ৩/৩১, মরিস ৩/৬৩); দ. আফ্রিকা ১৮৫/১০, ৪৬ ওভার (বেহারডিন ৩৫, মরকেল ৩২*; গ্যাব্রিয়েল ৩/১৭, নারাইন ৩/২৮)

     

    ফলঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০০ রানে জয়ী।

    ম্যাচসেরাঃ ড্যারেন ব্র্যাভো (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

     

    গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ, তিন দলের টুর্নামেন্টের অপর দলটি ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করেছে ফাইনাল, শুক্রবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ - দ. আফ্রিকা ম্যাচটি তাই এক অর্থে সেমিফাইনালই ছিল। স্কোরকার্ড দেখে বোঝার উপায় নেই ম্যাচের শুরুটা কী দাপটের সাথে করেছিল প্রোটিয়ারা, দিনশেষে তাঁদের ১০০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গী স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজই।

     

    আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮৩ রান করেও শেষরক্ষা হয় নি উইন্ডিজের। সে ভাবনা থেকেই কিনা, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামেন দ. আফ্রিকার অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স। পারনেল-রাবাদারা বল হাতে শুরুটাও করেছিলেন দুর্দান্ত। পারনেল উইকেটের খাতাটা খুলে দেয়ার পর বাউন্সার-ইয়র্কারে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে পরপর দু’ ওভারে তিন উইকেট তুলে নেন রাবাদা। পাঁচ ওভারের খেলা না শেষ হতেই ২১ রানে ৪ উইকেট নেই স্বাগতিকদের!

     

    ক্যারিবিয়দের শোচনীয় পরাজয় দেখতে শুরু করেছিলেন যারা, তাঁরাই এরপর দেখলেন ব্র্যাভোর ব্যাটে অবিশ্বাস্য এক ঘুরে দাঁড়ানোর ইনিংস। শুরুতে নড়ে গিয়েছিলেন তিনিও। ১১ রানের মাথায় মরকেলের বলে লং লেগে তাঁর সহজ ক্যাচ ছয় বানিয়ে দেন পারনেল। জীবন পেয়ে আর এক পশলা বৃষ্টি-বিরতির পর অন্য রূপে ব্র্যাভো। কাইরন পোলার্ডকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ১৫৬ রানের জুটি। লং অনে পোলার্ডের (৬২) দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে সেটা ভাঙেন ডু প্লেসি। এরপর ব্র্যাভোর ইনিংসেরও যবনিকা ঘটে ডু প্লেসির হাতেই। মিড অন থেকে পিছন দিকে বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে শরীরটা বাতাসে ভাসিয়ে ব্র্যাভোর ক্যাচ নেন ডু প্লেসি। ততক্ষণে অবশ্য শতক তুলে নিয়ে ব্র্যাভো দলকে পৌঁছে দিয়েছেন ২১০ রানের উচ্চতায়, তখনও উইন্ডিজের হাতে ১৪টি ওভারের সাথে ৪টি উইকেট। ১০৩ বল থেকে ১০২ রানের ইনিংসটিতে ব্র্যাভো খেলেন ১২টি চার ও ৪টি ছয়ের মার।

     

     

    ব্র্যাভো-পোলার্ডের পর বেশ খানিকটা শ্লথ হয়ে যায় ক্যারিবিয়দের রানের চাকা। অধিনায়ক জেসন হোল্ডার প্রথম ১৬টি বল খেলে কোনো রানই নিতে পারেন নি। পরে অবশ্য আরও ৩০ বল খেলে করেছেন ৪০ রান। সঙ্গে ব্র্যাথওয়েটের ৩৩ রান যোগে শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৮৫, ১ বল হাতে রেখে সবক’টি উইকেট হারিয়ে।

     

    পরের গল্পটা ক্যারিবিয় বোলিং দাপটের। ব্যক্তিগত স্পেলের টানা তিন ওভারে ডি কক-ডু প্লেসি-ডি ভিলিয়ার্সদের ফিরিয়ে ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই ঝুলিয়ে দেন ডানহাতি পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। অপর প্রান্তে নারাইন, ব্র্যাথওয়েটরাও উইকেট শিকারে যোগ দিলে দলীয় সংগ্রহ অর্ধশত পেরোতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে প্রোটিয়ারা। মাঝে ফারহান বেহারডিন হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর ৩৫ রানের ইনিংসটি দিন শেষে বিফলেই গেলো। ১৩৪ রানে নবম উইকেট পড়ে যাওয়ার পর যারা ম্যাচটা দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরা অবশ্য ইমরান তাহির-মরনে মরকেল জুটির ব্যাটিংটা ‘মিস’ করে গেছেন। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে এই দুই বোলারের ব্যাটেই এসেছে প্রোটিয়াদের দিনের সবচেয়ে বড় ৫১ রানের জুটি। তাতে অবশ্য পরাজয়টা খানিক দীর্ঘায়িতই হয়েছে কেবল, ব্যবধানটাও অল্পের জন্য তিন অংকের নীচে নামানো যায় নি।