বেইরস্টো ঝলক এবার লর্ডসে
সেই উত্তরের ডারহাম থেকে মধ্য লন্ডনে ফিরলো টেস্ট। শ্রীলঙ্কানরা সুযোগ পেলেন সুয়েটার ছাড়াই নামার! সিরিজ আগেই নির্ধারণ হয়ে গেছে, তবে ‘সুপার সিরিজ’-এ প্রত্যেক ম্যাচেই পয়েন্ট আছে বলে ম্যাচটাকে ঠিক ‘ডেড-রাবার’ বলা যাচ্ছে না। তার ওপর লর্ডসে টেস্ট মানেই ভিন্ন কিছু। সেই ভিন্ন কিছুর স্বাদটাই পেলেন জনি বেইরস্টো। ক্রিকেট-তীর্থে ইংলিশ উইকেটকিপার পেলেন প্রথম সেঞ্চুরি।
লর্ডসে প্রথম ঘন্টাটা ঠিকমতো পার করে দিতে পারলে তা ব্যাটিং সহায়ক, নিতান্তই ব্যতিক্রমী কিছু না ঘটলে। অ্যালেস্টার কুক টস জিতে ব্যাটিং নিলেন, অ্যালেক্স হেলসের সঙ্গে সিরিজে প্রথমবারের মতো উদ্বোধনী জুটিটে ৫০ পেরোলেন। তবে ভিমরতি ধরলো যেন হেলসের, হেরাথকে হঠাৎ আড়াআড়ি স্লগ করতে গিয়ে দিলেন স্লিপে ক্যাচ। গত গ্রীষ্মকে আবারও ভুলে থাকলেন জো রুট, জেমস ভিনসের সময় লাগলো বুঝে উঠতে আসলেই বোল্ড হয়েছেন কিনা।
আর ‘ক্যারিয়ার-বাঁচানো-ইনিংস’ খেলতে নামা নিক কম্পটন ব্যর্থ হলেন আরও একবার। সুরংগ লাকমালের পিচড-আপ ডেলিভারিটায় যেন শেষ মুহুর্তে মনে হয়েছিল তাঁর, চাইলেই ড্রাইভ করা যায়! তবুও ওই এক শটেই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিটা চোখে পড়ার মতো ইংলিশ ক্রিকেটের বিখ্যাত এই ‘নাতি’র। একটা লম্বা ইনিংস দরকার ছিল, কম্পটন করতে পারলেন মাত্র ১। কম্পটনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা সত্যিকারেই হুমকির মুখে পড়লো এবার।
কম্পটনের দীর্ঘ পথে ফেরা...
অ্যালেস্টার কুককে হঠাৎ করেই হুমকির মুখে ফেলেছিল নুয়াদ প্রদীপের বলটা। সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান ও প্রথম ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে দশ হাজারের রানের রেকর্ড হয়ে গেছে, ‘শেফ’ এর ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, একটা ভার যেন নেমে গেছে। ফিফটি করলেন, প্রদীপের ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডাব্লিউ হওয়ার আগে করলেন ৮৫ রান।
তবে কুককেও ছাপিয়ে গেলেন বেইরস্টো। ১১ রানে শর্ট মিড-উইকেটে শামিন্দা এরাংগা সহজ ক্যাচ ফেললেন বেইরস্টোর। ‘জীবন’ পাওয়ার আগে পরে, পুরোটা সময় জুড়েই ছিলেন কম্পটনের বিপরীত, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। ‘অন-দি-আপ’ এ ফ্লিক, স্ট্রেইট ড্রাইভ, ‘ওয়েইট-ট্রান্সফার’, ‘হেড-পজিশন’, ভাগ্যের সহায়তার সঙ্গে বেইরস্টোর ইনিংসে ছিল এসবেরও পূর্ণ ব্যবহার!
৮৪ রানে ৪ উইকেট যাওয়ার পর নেমেছিলেন, দিনশেষে যখন অপরাজিত ১০৭ রানে, ইংল্যান্ডের রান ৬ উইকেটে ২৭৯। দ্বিতীয় দিনেও নিশ্চয়ই তাঁর ব্যাটের দিকেই অনেকখানি তাকিয়ে থাকবে ইংল্যান্ড।
দিন শুরু হয়েছিল কুমার সাঙ্গাকারাকে দিয়ে, লর্ডসের ওই বিখ্যাত ‘পাঁচ-মিনিট-সূচক’ ঘন্টা বাজিয়েছিলেন লঙ্কান কিংবদন্তি। মাঝে কম্পটনের হতাশা, আর শেষে বেইরস্টো-রোমাঞ্চ।
লর্ডস টেস্ট কি বাজাচ্ছে রোমাঞ্চের ঘন্টা?