তাসকিনের তেজস্বী বোলিং ম্লান নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে
১ম টেস্ট, অ্যান্টিগা (টস - বাংলাদেশ/বোলিং)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ - ৪৫০/৯ ডি. ও ১৫২ (অ্যাথানেজ ৪২, ব্র্যাথওয়েট ২৩, জশুয়া ২২, তাসকিন ৬/৬৪, মিরাজ ২/৩১, তাইজুল ১/২৫)
বাংলাদেশ - ২৬৯/৯ ডি. ও ১০৯/৭ (মিরাজ ৪৫, লিটন ২২, অনিক ১৫*, রোচ ৩/২০, সিলস ৩/৩১, শামার ১/২২)
জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ২২৫ রান
৪র্থ দিন, স্টাম্পস
দিন শেষে শুধুই গাওয়া হতে পারত তাসকিনের স্তুতি। অদ্ভুতুড়ে এক ইনিংস ঘোষণার পর নর্থ সাউন্ডের বাইশ গজে ঝড় তুলে তাসকিন যেই সুযোগটা করে দিয়েছিলেন, সেটা পুরোপুরি ছুড়ে ফেলে বরং পরাজয়ের শঙ্কা নিয়েই দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
দিনের শুরুটা হয়েছিল বল হাতেই, যেখানে ব্যাট হাতে নামার কথা ছিল বাংলাদেশের। আগের রাতে ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকেও সেখানেই ইনিংস ঘোষণা দিয়ে উইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের আহবান জানালেন অধিনায়ক মিরাজ। তাসকিন অধিনায়কের এই চালটা সফল করতে সবই করতে শুরু করলেন। ক্যাচ মিসের মহড়ায় অবশ্য তাতে সুবিধা হচ্ছিল না, মিরাজ নিজেই ফেলেছেন মামুলি কিছু ক্যাচ। তবুও সকালের সেশনে ৬১ রান তুলতেই ৩ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
পথের কাটা হয়ে ছিলেন অ্যাথানেজ, যার ক্যাচ মুমিনুল ছেড়েছেন মিরাজের বলে। সেই অ্যাথানেজকে পরে মিরাজ এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে নিজেই কাজ সেরেছেন। তবে এর আগে পরের গল্পটা শুধুই তাসকিনের। তাসকিনের আগুনে স্পেলে প্রতি-আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন অ্যাথানেজ। তবে অবিচল তাসকিন লাঞ্চের পর থেকে উইকেট নেওয়ার মতো বল করেই চলেছিলেন। গ্রিভসকে যেই বলে বোল্ড করেছেন তা এক কথায় দুর্দান্ত! জশুয়া ডা সিলভা ও আলজারি জোসেফ মাঝে স্পিনারদের ওপর আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে দুজনেই থেমেছেন তাইজুল-মিরাজ জুটির কাছে। তাদের চেষ্টা ব্যহত হতেই ফিরে তাসকিন কাজ সারেন লেজ গুটিয়ে দিয়ে। প্রথম টেস্ট ফাইফারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশি পেসার হিসেবে সেরা স্পেলের রেকর্ড গড়েন তিনি, শেষ করেন ৬ উইকেট নিয়ে।
সেখানেই চা-বিরতি নেওয়া হলে এরপর ব্যাটিংয়ে এসে বাংলাদেশ হতাশ করেছে শুধু। তাসকিনের পর এবার ছিল রোচ-সিলসদের পালা। ক্যাচ মিসে সুযোগ উইন্ডিজ ফিল্ডাররাও কম দেননি। এক শামার জোসেফের বোলিংয়েই ক্যাচ পড়েছে ৩ বার! মুমিনুল একাই সুযোগ পেয়েছেন দুইবার, কাজে লাগাতে পারেননি তাও। রোচের দারুণ ফিরতি ক্যাচে ফিরেছেন ১১ রানে। এর আগে দুই ওপেনার আরও একবার ব্যর্থ। রোচের আগুনে বোলিংয়ের সামনে দুজনেই ছিলেন দিশেহারা। জাকির রানের খাতা খোলার আগেই ফিরলে অন্য প্রান্তে সিলসের কাছে ধরাশায়ী হন জয়। এরপরে দীপু রীতিমত ভেতরে ঢোকা বলে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ফেরেন উইকেটের পেছনের ক্যাচে।
পরিস্থিতি খুব একটা সুখকর না বুঝেই লিটন-মিরাজ জুটি হাঁটেন প্রতি আক্রমণের পথে। তবে আরও একবার স্বচ্ছন্দ লিটন উইকেটে থিতু হতে পারলেন না। এক রাশ হতাশা নিয়ে দৌড়াতে থাকা শামারের বাউন্সারের ফাঁদে পা দিয়ে ১৮ বলে ২২ রানে থামেন লিটন। তাইজুলকে নিয়ে এরপর মিরাজ চেষ্টা চালালেও শেষ বিকেলে থামেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সিলসের বলে অবশ্য রীতিমত খোঁচা মেরে থামেন তিনি; অবশ্য তার বড় কৃতিত্ব জশুয়ার অসাধারণ ক্যাচের, প্রথম স্লিপের ক্যাচ যে নিজে লুফে নিয়েছিলেন অবিশ্বাস্য এক ঝাঁপে! পরে তাইজুলের স্টাম্প উপড়ে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের আরও কাছে নিয়ে গেছেন সিলস।