• বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর, ২০২৪
  • " />

     

    গতির রাজ্যে রানার রাজত্ব

    গতির রাজ্যে রানার রাজত্ব    

    ২য় টেস্ট, কিংস্টন (টস - বাংলাদেশ/ ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ - ১৬৪ ও ১৯৩/৫ (সাদমান ৪৬, মিরাজ ৪২, দীপু  ২৮, শামার ২/৭০, গ্রিভস ১/২০, সিলস ১/৪৩)
    ওয়েস্ট ইন্ডিজ - ১৪৬, ১ম ইনিংস (কার্টি ৪০, ব্র্যাথওয়েট ৩৯, লুই ১২, রানা ৫/৬১, হাসান ২/১৯, মিরাজ ১/১৫)
    বাংলাদেশ ২১১ রানে এগিয়ে
    ৩য় দিন, স্টাম্পস 


    জ্যামাইকা - সেটা দৌড়ের ট্র্যাকে হোক বা বাইশ গজে আগুন কাঠের গোলক হাতে আগুন ঝরানোয় - গতির প্রশ্নে জায়গাটা আপোষহীন। সেই গতির রাজ্যে বাইশ বছর বয়সী নাহিদ রানা দেখালেন কেন তাকে নিয়ে বাংলাদেশের এতো প্রত্যাশা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের চোখের পানি, নাকের পানি এক করে দুর্দান্ত এক স্পেলে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার। ১৬৪ রানে আগের দিন গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ তার অসাধারণ স্পেলের বদৌলতে পেয়েছে লিড। পরে ব্যাট হাতেও ঝড়ো শুরু করে দারুণ এক দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ।

    আগের দিনের মতো আজও রয়েসয়েই শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০০ রানেও তাদের ঘরে ছিল মোটে ৩ উইকেট। দিনের প্রথম দুই উইকেট এসেছে রানার হাত ধরেই। তার খাটো লেংথের এক বল নামাতে না পেরে উইন্ডিজ অধিনায়ক গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩৯ রানে। উইকেটে এসে হজকেও লাফিয়ে ওঠা গুড লেংথের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন রানা। কিছুক্ষণ পরেই দারুণ এক বলে অ্যাথানেজের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তাসকিন। সেখান থেকেই যেন রক্তের ঘ্রাণ পাওয়া বাঘের মতো লাফিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

    এখন পর্যন্ত সিরিজে একমাত্র সেঞ্চুরি পাওয়া গ্রিভসের অফ স্টাম্প উপড়ে সেই উইকেটের মিছিলে যোগ দেন তাইজুল। রানা যেমন গতির ঝড় তুলেছেন, হাসান দেখিয়েছেন আঁটসাঁট বোলিংয়ের রাস্তা। সেই সুবাদে তিনিও যোগ দেন সেই মিছিলে। জশুয়াকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে লড়তে থাকা কার্টিকে ৪০ রানে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করেন এরপর।

    বোলিংয়ে ফিরেই রানা আবারও দুর্ধর্ষ। কিংস্টনের উইকেটের ফায়দা লুটে অতিরিক্ত বাউন্সে ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন। মিড অফে মিরাজের দারুণ ক্যাচে তিনি আলজারির উইকেট পেলে পরের উইকেটটা মিরাজ নিজেই পান, আরেক জোসেফ শামারকে ফিরিয়ে। মাঝে রোচকে দুর্দান্ত এক বাউন্সারে কাবু করেছেন রানা। তবে শেষটা করছেন দারুণ লাইনে, সেই রোচকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে।

    রানার দেখানো পথে হেঁটে বাংলাদেশের শুরুটাও হয় গতিময়। আরও একবার প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগে জয় ফিরলে সাদমানকে সঙ্গী করে দীপু হাত খুলে খেলতে শুরু করেন। দ্রুত খেলতে গিয়েই মিড অফে পোতা ফাঁদে পা দিয়ে আলজারির শিকার হয়ে ২৬ বলে ২৮ রান শেষে থামেন দীপু। তবে উইকেটে এসে মিরাজ থামার কোনো লক্ষণ দেখালেন না। এক ওভারে মেরে বসলেন টানা চার চার! মিরাজের দেখানো পথে হেঁটে সাদমানও ফাঁক গলে বাউন্ডারি বের করতে থাকেন।

    তবে দুজনেই থেমেছেন ফিফটির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে। শামারের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ৪৬ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাদমান। কিছুক্ষণ পরে তারই লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে মিরাজ ফেরেন ৩৯ বলে ৪২ রান শেষে। উইকেটে আসা লিটন, জাকের আলীরা এরপর তেড়েফুঁড়ে আক্রমণের পথ থেকে কিছুটা সরে আসেন। তবে রান রেটে ভাটা পড়তে দেননি কেউই। অবশ্য আরও একবার ভালো শুরু করেও ধরে রাখতে পারেননি লিটন। গ্রিভসের স্লোয়ার পড়তে না পেরে ৩৪ বলে ২৫ রানে স্টাম্প খুইয়ে এসেছেন। উইকেটে থাকা জাকের, তাইজুলরা অবশ্য চাইবেন কাল সকালেও একই ঘরানায় ব্যাটিং চালিয়ে যেতে।