মাহেদীর ম্যাজিক স্পেল, হাসানের আগুনে শেষ ওভারে বাংলাদেশের 'থ্রিলার' জয়
১ম টি-টোয়েন্টি, সেইন্ট ভিনসেন্ট (টস - ওয়েস্ট ইন্ডিজ/বোলিং)
বাংলাদেশ - ১৪৭/৬, ২০ ওভার (সৌম্য ৪৩, শামীম ২৭, অনিক ২৭, আকিল ২/১৩, ম্যাকয় ২/৩০, চেইজ ১/২৯)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ - ১৪০, ১৯.৫ ওভার (পাওয়েল ৬০, শেফার্ড ২২, চার্লস ২০, মাহেদী ৪/১৩, হাসান ২/১৮, তাসকিন ২/২৮)
ফলাফল - বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী
পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা এক ম্যাচে স্নায়ু ধরে রেখে নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে নিয়ে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শেখ মাহেদী হাসানের ক্যারিয়ার সেরা স্পেলের পর বাংলাদেশের জয় যেখানে মনে হচ্ছিল অবধারিত, সেখান থেকে পালটা আক্রমণে ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। সেই আশঙ্কা পায়ে ঠেলে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত শেষ ওভারে সাত রানের জয় দিয়েই বিজয় দিবস রাঙাল টাইগাররা।
১৪৮ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই কিংকে ফেরান তাসকিন। তবে তানজিম সাকিবকে লক্ষ্য বানিয়ে চার্লস পরের ওভারে তোলেন ২৪ রান। সেখান থেকে ম্যাচে বাংলাদেশকে কর্তৃত্ব স্থাপনে সাহায্য করেন মাহেদী। ধুঁকতে থাকা পুরানকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলার পর পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১২ বলে ২০ রানে থাকা চার্লসকেও থামান মিড অফে তালুবন্দি করিয়ে।
পাওয়ারপ্লের পরও মাহেদীকে টানা স্পেল করানোর সিদ্ধান্ত নেন লিটন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে একই ওভারে ফ্লেচার ও চেইজকে ফেরান মাহেদী। চেইজ অবশ্য নিজের কপালকে দুষতে পারেন, গায়ে বল লেগে আবার গ্লাভে লেগে বল উঠে লিটনে হাতে ধরা দেওয়ার মতো এমন আউট ক্যারিয়ারে আর কয়বারই বা হবেন! তবে মাত্র ১৩ রান গুণে মাহেদী চার উইকেট নিয়ে ওখানেই বাংলাদেশকে জয়ের রাস্তা তৈরি করে দেন। উইকেটে এসে ধুঁকতে থাকা মোতিকে ফিরিয়ে আক্রমণে ফেরা তানজিম সাকিবও যেন ইঙ্গিত দেন ফেরার। শেফার্ডের আগে আকিলকে নামানো হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই পরিকল্পনা বানচাল করে দেন রিশাদ। ৬১ রানেই ১১.৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেখান থেকে অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ম্যাচ ঘুরিয়ে ফেলেন তাদের অধিনায়ক। তানজিম সাকিবকে এক হাত নেওয়ার পাশাপাশি তাসকিনের ওপরেও চড়াও হন পাওয়েল। তানজিম সাকিবের বলে সপাটে ব্যাট চালিয়ে কানা থেকে থার্ড ম্যান অঞ্চলে বাউন্ডারি বের করে ২৮ বলে ফিফটি পেয়ে যান পাওয়েল। ১৮ বলে যখন তাদের ২০ রান প্রয়োজন, তখনই নিজের স্পেলের শেষ ওভার করতে এসে প্রথম বলেই ১৭ বলে ২২ রানে থাকা শেফার্ডকে থামান তাসকিন। দারুণ এক ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে সেখানেই ম্যাচে আবার আশা জাগান তাসকিন। উনিশতম ওভারে তানজিম সাকিব ৮ রান গুনলে শেষ ওভারে ১০ রান ডিফেন্ড করার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয় হাসানকে। পাওয়েলকে থামাতে ওয়াইড ইয়র্কারের পন্থা অবলম্বন করে তৃতীয় বলে লিটনের তালুবন্দি করে সফল হন হাসান। ২৫ বলে ৬০ রানের অসামান্য ইনিংস শেষে পাওয়েল থামলে পঞ্চম বলে আলজারির স্টাম্প উপড়ে বাংলাদেশকে দারুণ এক জয় এনে দেন হাসান।