• ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ
  • " />

     

    ২৬ রিভিউর এক টেস্ট!

    ২৬ রিভিউর এক টেস্ট!    

    বেন স্টোকসের করা বলটা শফিউল ইসলামের প্যাডে লাগার সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে আপিল করে উঠলো ইংলিশ ফিল্ডাররা। তাতে সাড়া দিলেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। ২২ রানের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। দুই আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি ও কুমার ধর্মসেনাও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস । টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬ রিভিউয়ের এই ম্যাচ মাঠের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ক্যারিয়ারের কঠিনতম পরীক্ষা নিয়েছে তাঁদেরও। এই টেস্টের সমাপ্তি তো তাঁদের স্বস্তি দেবেই!

    ম্যাচের প্রথম রিভিউটি নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাতেই ভুল প্রমাণিত হয়েছিলেন আম্পায়ার। মেহেদী হাসান মিরাজের বল ইংলিশ ব্যাটসম্যান গ্যারি ব্যালান্সের প্যাডে আঘাত করলে জোর আপিল করে বাংলাদেশি ফিল্ডাররা। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি। বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম রিভিউ নিলে দেখা যায় আসলে আউট হয়েছেন ব্যাটসম্যান।

    সেই শুরু। ঘূণাক্ষরেও যদি আম্পায়াররা জানতেন তাঁদের জন্য কী অপেক্ষা করছে এই টেস্টে! ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে নেয়া হয় মোট দশটি রিভিউ। যার মধ্যে প্রথম দিনেই নেয়া হয়েছিল সাতটি।  পাঁচটিই ছিল মঈন আলীর বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনাকে স্নায়ুক্ষয়ী দ্বিধার মধ্যে ফেলে তিন ওভারের মধ্যে তিনবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মঈন। এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রিভিউ আর কখনো নেওয়া হয়নি।

    বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে পাঁচবার রিভিউ নেয়া হয়। প্রথম রিভিউয়েই আবারও ভুল প্রমাণিত হন ধর্মসেনা। বোলার মঈন আলীর আপিলের বিপরীতে তামিম ইকবালকে আউট দিলেও রিপ্লেতে দেখা যায় জো রুটের তালুবন্দি হওয়ার আগে বল আসলে তামিমের বাহু ছুঁয়ে গিয়েছিল। এবারে বেঁচে গিয়ে সে সময়কার ৫৪ রানের ইনিংসটাকে ৭৮ রান অব্দি নিয়ে যান বাংলাদেশি ওপেনার।  রিভিউ ব্যবহার করা হয়েছিল মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান ও শফিউল ইসলামের বেলাতেও।

    ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম ইনিংসের তুলনায় কমে আসে রিভিউয়ের ব্যবহার। পাঁচটি রিভিউ নেয়া হয়েছিল এবারে। মিরাজের করা প্রথম ওভারেই ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেটের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হন মুশফিকুর রহিম। এরপর সাকিব আল হাসানের বলে আউট হয়ে রিভিউয়ের আশ্রয় নেন জো রুট। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ড্রেসিংরুমের পথেই হাঁটতে হয় তাঁকে। এরপর রিভিউ নেন আদিল রশিদ, স্টুয়ার্ট ব্রড ও গ্যারেথ ব্যাটি। কিন্তু ব্রড ছাড়া বাকি দুজনকেই আম্পায়রের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়।

    বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ছয়বার রিভিউ ব্যবহার করা হয়। যার তিনটি করে নেয় ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। রিভিউবহুল এই  টেস্টের সমাপ্তিও ঘটেছে রিভিউ দিয়েই। শফিউল ইসলামের আউট তাতে ঠেকানো যায়নি।  

    তবে ভবিষ্যতে আইসিসির আম্পায়ার ট্রেনিং ম্যানুয়ালে কেস স্টাডি হিসেবে এই টেস্ট থাকলে অবাক হওয়ার জো থাকবে না।