• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    গ্রুপসেরা হয়ে নকআউট পর্বে লেস্টার সিটি!

    গ্রুপসেরা হয়ে নকআউট পর্বে লেস্টার সিটি!    

    গতবারের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন তারা। অথচ এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত হওয়া  ১২ ম্যাচের ছয়টিতেই হারের মুখ দেখতে হয়েছে লেস্টার সিটিকে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বরে অবস্থান। ইংল্যান্ডে অবস্থা যেমন তেমনই হোক না কেন, ইউরোপের লেস্টার সিটি কিন্তু ইংলিশ 'সুপার পাওয়ার'। অন্তত এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব তো তেমনটাই বলে!

    এর আগে চার ম্যাচে তিন জয় আর এক ড্র নিয়ে ১০ পয়েন্ট ছিল লেস্টার সিটির ঝুলিতে। আজকের ম্যাচে ক্লাব ব্রুজকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেই পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ তে। আর তাতে নিশ্চিত হয়ে গেছে পরের রাউন্ড। সাথে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের মুকুটটাও থাকছে ক্লদিও র‍্যানিয়েরির দলের কাছেই!

    তবে কি এবার আর প্রিমিয়ার লিগ নয়, চ্যাম্পিয়নস লিগ মাতানোর সিদ্ধান্তই নিয়েছেন র‍্যানিয়েরি? তেমনটা হলে অবশ্য অবাক হবার মতো কিছুই থাকবে না!

    ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকে লেস্টার সিটি। প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় দুই গোলে। সিনঝি ওকাজাকি আর রিয়াদ মাহরেজের পেনাল্টি গোল থেকে ২-০ গোলের লিড পায় ফক্সরা। দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটে হোসে ইজকুয়ের্দো দেখার মতো এক গোল করে চমকে দিয়েছিলেন লেস্টা সিটিকে। সেই চমক থেকে অবশ্য কোনো পয়েন্ট বগলদাবা করতে পারেনি বেলজিয়ান ক্লাবটি। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের মাঠ থেকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই। গ্রুপের অন্যম্যাচে এফসি কোবেনহেভেন আর পোর্তো ড্র করেছে গোলশূন্যভাবে।



    গ্রুপ 'এফ' এর খেলায় বেনজেমার ৮৭ মিনিটের গোলে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর গ্রুপের অন্যম্যাচে হয়েছে গোলের ছড়াছড়ি। এক ডজন। হ্যাঁ, দু'দল মিলে ৯০ মিনিটে ১২টি গোল করে গোল উৎসবে পরিণত করেছিল ম্যাচটি। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৮-৪ গোলে হারিয়েছে লেজিয়াকে। হ্যাটট্রিক করেছেন মার্কো রিউস। 

    ডর্টমুন্ডকে চমকে দিয়ে ম্যাচে প্রথমে এগিয়ে যায় লেজিয়াই। এরপর সিনঝি কাগাওয়ার দুই গোল আর নুরি সাহিনের এক গোলে ৩-১ গোলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় ডর্টমুন্ড। ২৪ মিনিটের মাঝেই খেলার স্কোর ৩-২ করেন লেজিয়া স্ট্রাইকার প্রিজোভিচ। পরের আট মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল করে আরও ক'বার লেজিয়াকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় জার্মান ক্লাবটি। বিরতির পর রিউস করেন তার দ্বিতীয় ও ডর্টমুন্ডের ছয় নম্বর গোলটি। এর পাঁচ মিনিট পরেই আবার ম্যাচের স্কোর ৬-৩ এ নিয়ে যায় লেজিয়া। এরপর ৮১ মিনিটে জার্মান ক্লাবটির হয়ে গোল করেন পাসল্যাক। নেমানিয়া নিকোলিচ লেজিয়ার হয়ে গোল করে আবারও কমিয়ে আনেন ম্যাচের ব্যবধান! শেষে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে নিজের হ্যাট্রিক পূরণ করেন রিউস, সাথে ৮-৪ গোলে রেকর্ড গড়ে শেষ হয় ম্যাচটি। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি গোলের দেখা পেল এই ম্যাচই!

    ইংলিশ দল লেস্টার সিটি পরের রাউন্ডে উঠলেও, বিষাদেই শেষ হয়েছে টটেনহ্যামের ফ্রান্স ভ্রমণ। মোনাকোর বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে নর্থ লন্ডনের ক্লাবটির চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের ঘন্টা বেজে গিয়েছে। শেষ ম্যাচে লেভারকুসেন হেরে গেলেই কেবল পরের রাউন্ডে যাবার ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে দলটির। এই গ্রুপ থেকে এরই মাঝে প্রথম দল হিসেবে পরের রাউন্ডে নাম লিখিয়েছে মোনাকো।

    মোনাকোর জন্য অবশ্য একেবারেই সহজ হয়নি আজকের ম্যাচ। ৫ মিনিটের এক ঝড় নির্ধারণ করে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। বিশেষ করে প্রথমার্ধে ফ্যালকাও পেনাল্টি মিস করে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন নিজের দলকে। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮ মিনিটে রাইটব্যাক সিদিবে এগিয়ে দিয়েছিলেন মোনাকোকে। সেই লিডও বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতায় আসে টটেনহ্যাম, গোল করেন হ্যারি কেন। ওই গোলের ৩৯ সেকেন্ডের মাথায়ই আবারও গোল করে লিডে ফিরে আসে মোনাকো। এরপর আরও বেশ কয়বার এগিয়ে যেতে পারত মোনাকো। তবে স্পার্স গোলরক্ষক হুগো লরিসের বীরত্ব ম্যাচে আরও বড়  ব্যবধানে এগিয়ে যেতে দেয়নি ফ্যালকাওদের। 

    গ্রুপ 'এইচ' এ সেভিয়া-জুভেন্টাস ম্যাচের দিকে আলাদা করে আলো ছিল আগে থেকেই। প্রত্যাশা অনুযায়ী টান টান উত্তেজনা উপহার দিয়েছে এই ম্যাচও। ঘটনাবহুল ম্যাচে ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে জুভেন্টাস। সেভিয়ার মাঠে মাত্র ৯ মিনিটেই পিছিয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাস। নিকোলাস পারেজা গোল করেন সেভিয়ার হয়ে। ম্যাচের আধ ঘন্টা পেরুতেই এরপর বদলে যায় জুভেন্টাসের ভাগ্য! ৩১ আর ৩৬ মিনিটে দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সেভিয়ার ভাজকেজ।



    দশ জনের সেভিয়ার বিপক্ষে এরপর আক্রমণ সাজায় জুভেন্টাস। ফল পেতেও দেরী হয়নি খুব বেশি। প্রথমার্ধ শেষের আগেই পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান মার্কিসিও। দ্বিতীয়ার্ধে দশ জনের দলের সাথে সেভিয়া পরিণত হয় কোচবিহীন দলেও! রেফারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ডাগ আউট থেকে হোর্হে সাম্পাওলিকে বহিষ্কার করেন রেফারি ক্ল্যাটেনবার্গ। কোচ ছাড়া দল এবার খেয়ে বসে আরও এক গোল। ৮৪ মিনিটে জুভেন্টাসের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন বনুচ্চি। এরপর ৯০ মিনিটে মাঞ্জুকিচ সেভিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন। এই জয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে গেছে জুভেন্টাসের। ইতালিয়ান ক্লাবটির চেয়ে এক পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয়তে আছে সেভিয়া। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ফ্রেঞ্চ ক্লাব অলিম্পিক লিও টিকে আছে পরের রাউন্ডে ওঠার সমীকরণে। লাকাজেটের একমাত্র গোলে তারা ডিনামো জাগরেবকে হারিয়েছে ১-০ গোলে।