ইব্রা-জাদুতেই মরিনহোর প্রথম
ওয়েম্বলি ভেসে গেছে হাজারো মুঠোফোনের আলোতে। আর একজন মাটিতে হাঁটু গেড়ে প্রণতি জানাচ্ছেন ওপরের দিকে তাকিয়ে। বাকি সব আলো ছাপিয়ে আজ তো তাঁর আলোতেই উজ্জ্বল ওয়েম্বলি। জাতান ইব্রাহিমোভিচের জন্যই তো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম মৌসুমে প্রথম শিরোপা জিততে পেরেছেন হোসে মরিনহো। লিগ কাপ ফাইনালে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে পাওয়া ৩-২ গোলের জয়টা তো ইব্রাময়ই।
সাউদাম্পটন নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে। ম্যাচের শুরুতেই মানলো গাবিয়াডিনির একটা গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়ে যায়। অথচ রিপ্লেতে দেখা গেছে , গাবিয়াডিনি পরিষ্কার অনসাইডে ছিলেন। এরপর অবশ্য এই ইতালিয়ান জোড়া গোল করেছেন, সাউদাম্পটনও ইউনাইটেডকে চেপে ধরেছে। তবে তার আগে ঘটে গেছে অনেক কিছু।
প্রথমার্ধে অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতেই ইউনাইটেডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ইব্রা। এর মধ্যে ডি গিয়াকে পরীক্ষায় ফেলেও গোল পায়নি সাউদাম্পটন। সাউদাম্পটনের গোল পাওয়াটা যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, ১৯ মিনিটে দুর্দান্ত এক ফ্রিকিক থেকে ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন ইব্রা। হঠাৎ করেই যেন নিজেদের ফিরে পায় ইউনাইটেড। দ্বিতীয় গোলটা পেতে খুব একটা সময় লাগেনি। এবার দারুণ একটা দলীয় প্রচেষ্টার ফসল। মার্কোস রোহর পাস থেকে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন জেসে লিনগার্ড। ডান পায়ের প্লেসিংয়ে গোল করতে ভুল করেননি।
তবে প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগেই ম্যাচে ফিরে আসে সাউদাম্পটন। প্রথমার্ধ জুড়েই নিজেকে হারিয়ে খোঁজা রোহোকে ছিটকে ফেলে ডান প্রান্ত দিয়ে ক্রস করেছিলেন ওয়ার্ড প্রাউস। স্মলিংরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বলটা জালে পাঠিয়ে দেন গাবিয়াডিনি। প্রথমার্ধ যেখানে শেষ করেছে, দ্বিতীয়ার্ধ যেন সেখান থেকেই শুরু করেছে সাউদাম্পটন। ৪৮ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় তারা, এবার কর্নার থেকে দারুণ এক ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন গাবিয়াডিনি। ওয়েম্বলিতে তখন জেগে উঠেছে সাউদাম্পটন সমর্থকেরা, ইউনাইটেড যেন খেলছে তাদের মাঠেই।
তবে ধীরে ধীরে নিজেদের আবার ফিরে পায় ইউনাইটেড। তবে গোলটা আর মিলছিল না। ম্যাচটা যখন অতিরিক্ত সময়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল, তখনই ইব্রা ম্যাজিক। মার্শিয়ালের পাস থেকে বল পেয়েছিলেন হেরেরা। ডান দিক থেকে মাপা ক্রসটা যেন ইব্রার হেডের জন্যই আদর্শ ছিল। মৌসুমের ২৫তম গোল করেই দলকে জয় এনে দিয়েছেন ইব্রা। মরিনহো এ নিয়ে ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো লিগ কাপ জিতলেন। ছুঁয়ে ফেলেছেন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন এবং ব্রায়ান ক্লাফের মতো কিংবদন্তিদের। এই মৌসুমে মরিনহো নিশ্চয় এখানেই থামতে চাইবেন না!