এবার লায়নের হুংকারেই সন্ত্রস্ত ভারত
স্কোর
প্রথম দিন শেষে
ভারত ৭১.২ ওভারে ১৮৯ (রাহুল ৯০; লায়ন ৮/৫০)
অস্ট্রেলিয়া ১৬ ওভারে ৪০ (ওয়ার্নার ২৩*, রেনশ ১৫*)
সকালের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের উইকেট দেখেই কি তাঁর চোখ চকচক করে উঠেছিল? বলা মুশকিল। পুনেতে তো তিনি ছিলেন দোসরের ভূমিকায়, মূল ঘাতক ছিলেন সতীর্থ ওকিফ। এবার নাথান লায়নই রঙ্গমঞ্চের মূল কুশীলব, আর ওকিফ হলেন দোসর। বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম দিনে নাথান লায়নের স্পিন বিষেই নীল হলো ভারত, প্রথম দিনেই অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ১৮৯ রানে। লায়ন একাই নিয়েছেন আট উইকেট।
পুনের মতো এবারও শুরুটা করেছিলেন পেসাররাই। আরও একটু নির্দিষ্ট করে বললে মিচেল স্টার্ক দিয়েছেন প্রথম ধাক্কা। পাঁচ বছর পর দলে ফেরা মুকুন্দকে এলবিডাব্লিউ করে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছিলেন প্রথম উদযাপনের সুযোগ। ভারতের রান তখন ১১।
কিন্তু এরপর চেতেশ্বর পূজারাকে নিয়ে লোকেশ রাহুল মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, এই পিচে ব্যাটসম্যানদের জন্যও কিছু আছে। রাহুলের অবশ্য ভাগ্য ভালো, লায়নের বলে একবার কঠিন ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে ভারতের ধসটা শুরু হয় পূজারার আউট দিয়ে। এবার অবশ্য হ্যান্ডসকম্ব আর ক্যাচ মিস করেননি, লায়নের দিনের তখন কেবল শুরু।
ভারতকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন এর পরেই। লায়নের বলটা অনেক বেশি টার্ন করবে ভেবে কোহলি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা সরাসরি গিয়ে লাগে লেগ ও মিডল স্টাম্পের মাঝে। রাহুলের সঙ্গে কী যেন ভেবে কোহলি রিভিউও নিয়ে নিলেন। সেটা এতোটাই অর্থহীন ছিল, একঝলক রিপ্লে দেখেই আর রিভিউর সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করেননি ভারত অধিনায়ক। রিভিউ নিয়ে তাঁর দুর্গতিটাও বুঝি কাটছেই না।
কিন্তু কে জানত, লায়ন এরপর একের পর এক ছোবল দেবেন? পরের দুইটি উইকেটের জন্য অবশ্য ব্যাটসম্যানদের হঠকারিতাও একটু দায়ী। অজিঙ্কা রাহানে ও করুন নাইর দুজনেই ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে গেছেন। প্রথমটি পেয়েছেন লায়ন, পরেরটি ওকিফ। তখনও ভারতের রান ৫ উইকেটে ১৫৬, ২০০ রানটাও তখন একটু যেন দূরে চলে যাচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত হলো না সেটিও। আগের টেস্টের পর এবারও তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে লোয়ার অর্ডার। অশ্বিন, ঋদ্ধিমান, জাদেজা তিনজনই দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই আউট হয়ে গেছেন, বলা বাহুল্য প্রতিটা শিকারই লায়নের। রাহুল ততক্ষণে আশির ঘরে চলে গেছেন, উমেশ যাদবকে নিয়ে সেঞ্চুরি পাবেন কি না সেটা নিয়ে সংশয়। কিন্তু লায়নের একটা বল কভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন মিড অনে। পরের বলেই ইশান্ত শর্মাকে ক্যাচ বানিয়ে অষ্টম উইকেট পেলেন লায়ন। ভারত অলআউট হয়ে গেল ১৮৯ রানেই।