স্বপ্নের দিনে জয়ের সুবাস পাচ্ছে ভারত
স্কোর
তৃতীয় দিন শেষে
অস্ট্রেলিয়া ৩০০ ও ১৩৭ (ম্যাক্সওয়েল ৪৫, জাদেজা ৩/২৪, অশ্বিন ৩/২৯, যাদব ৩/২৯, )
ভারত ৩৩২ ও ১৯/০
একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন প্রথমবার। দ্বিতীয়বার রিভিউ নিয়েও পার পেলেন না হ্যাজলউড, এবার সত্যি সত্যি উদযাপন করতে পারল ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৭ রানে অলআউট করার সুখানুভূতি নিয়ে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরেছে ভারতের সবাই, সবার আগে কার পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন বিরাট কোহলি? অজিঙ্কা রাহানের, সুযোগ পেয়ে যিনি প্রমাণ করেছেন কোহলির যোগ্যতম ডেপুটি তিনিই? নাকি রবীন্দ্র জাদেজার, সকালের সেশনে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের যার বোলিং আরও একবার স্মিথদের রক্ত ঝরিয়ে গেছে? নাকি অশ্বিনকে, ভারতকে যিনি এনে দিয়েছেন মহাগুরুত্বপূর্ন ব্রেকথ্রু? উমেশ যাদবকেও দিতে পারেন, ৩ উইকেট নিয়ে আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন। যাই হোক, ভারত এখন সিরিজ জয়ের সুবাস পাচ্ছে তীব্রভাবেই। ম্যাচ জেতার জন্য কাল চতুর্থ দিনে যে মাত্র ৮৭ রান দরকার, হাতে আছে সবকটি উইকেটই।
দ্বিতীয় দিনেও যে ম্যাচে পাল্লা সমান ছিল দুই দিকে, তৃতীয় দিনে রঙ বদলে গেল পুরোপুরি। অস্ট্রেলিয়া একটা সময় লিড নেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল, কিন্তু জাদেজা-সাহার ৯৬ রানের জুটিতে সেই স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। সকালের সেশনে অনেকটা সময়ই স্মিথদের হতাশ করে গেছেন দুজন। শেষ পর্যন্ত ৬৩ রান করার পর কামিন্সের বল স্টাম্পে টেনে বোল্ড হয়েছে জাদেজা। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য দ্রুতই ক্ষতিটা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, পরের ১৫ রানেই তুলে নিয়েছে শেষ ৩ উইকেট। নাথান লায়নের স্পিনই আরও একবার ভয়ঙ্কর, ৫ উইকেট নিয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার।
৩২ রানের লিড ধর্মশালার উইকেটে খুব কম নয়। আবার দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাট করলে সেটা কাটিয়ে ওঠাও এমন কঠিন কিছু নয়। কিন্তু কে জানত, অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং করার সময় সেই কাজটাই অসম্ভব হয়ে যাবে। আরও একবার এই সিরিজে ব্যর্থ ওয়ার্নার, যাদবের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। তবে অস্ট্রেলিয়াকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন ভুবনেশ্বর, পুল করতে গিয়ে বল স্টাম্পে টেনে এনেছেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। খাবি খেতে থাকা রেনশও বেশিক্ষণ থাকেননি, ফিরে গেছেন যাদবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। ৩ উইকেটে ৩১ রান হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া যখন বিপদে, পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন ম্যাক্সওয়েল- হ্যান্ডসকম্ব।
এই উইকেটে যেমন ব্যাটিং দরকার, তেমন খেলে চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করলেন ৫৬ রান। কিন্তু অশ্বিনের বলে হ্যান্ডসকম্বের বিদায়েও শুরু মড়কের। পিঠের চোটে ভোগা শন মার্শ এরপর উইকেটে এলেন আর গেলেন। যার ওপর ভরসা ছিল, সেই ম্যাক্সওয়েলও অশ্বিনের স্টাম্পের বল মুহূর্তের পাগলামিতে ছেড়ে দিতে গিয়ে হলেন এলবিডব্লু। শেষ দিকে ম্যাথু ওয়েড একটু চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু অন্য প্রান্তে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। একের পর এক উইকেট খুইয়ে শেষ পর্যন্ত ১৩৭ রানেই অলআউট হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
দিন শেষে ছয় ওভার উইকেট না হারিয়ে কাটিয়ে দেওয়াই ছিল ভারতের লক্ষ্য। দুই ওপেনার সেটা তো করেছেনই, লক্ষ্যটা ১০৬ থেকে কমিয়ে নিয়ে এসেছেন ৮৭ রানে। অলৌকিক কিছু না হলে ধর্মশালায় জিতেই ভারতের হাতে উঠতে যাচ্ছে সিরিজের বরমাল্য। নাকি দুর্দান্ত একটা সিরিজের শেষে লেখা আছে আরও অনেক নাটকীয়তা?