• ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    কোহলিদের হতাশ করে রেনশ-মার্শের প্রতিরোধ

    কোহলিদের হতাশ করে রেনশ-মার্শের প্রতিরোধ    

    স্কোর

    দ্বিতীয় দিন শেষে  

    ভারত ১৮৯

    অস্ট্রেলিয়া ১০৬ ওভারে ২৩৭/৬ ( মার্শ ৬৬, রেনশ ৬০, ওয়ার্নার ৩, ওয়েড ২৫*, স্টার্ক ১৪*; জাদেজা ৩/৪৯)


    কখনো সাপের মতো ছোবল দিয়ে উঠেছে বল, আবার কখনো পিচে পড়ে হঠাৎ নেমে গেছে প্রায় গোড়ালির কাছাকাছি। বেঙ্গালুরুর উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য সারাদিনই ব্যাটসম্যানদের সামনে হাজির করেছে এমন দুর্বোধ্য এসব ধাঁধা। তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত সেই ধাঁধাঁর জট ছড়াতে পেরেছেন ভালোমতোই। ধৈর্যের পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত উতরে দ্বিতীয় দিন শেষে এগিয়ে গেছে ৪৮ রানে। সারাদিন ৯০ ওভার খেলে মাত্র ১৯৭ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া, ব্যাটসম্যানরা কতটা সংযমী ছিলেন সেটা না বললেও চলে। হাতে আছে আরও চার উইকেট, ওয়েড-স্টার্করা আরও কিছু রান যোগ করতেই চাইবেন। দিন শেষে কি এই লিডটাই মহামূল্যবান হয়ে উঠবে?

    সেই উত্তরটা আপাতত তোলা থাক। এই ম্যাচের ফল যাই হোক, স্মিথের অন্তত একটা প্রাপ্তি হয়েই গেছে। ম্যাট রেনশ যে জানিয়ে দিয়েছেন, অনেক দিন থাকার জন্যই অস্ট্রেলিয়া দলে এসেছেন। সকালে ডেভিড ওয়ার্নার ৩৩ রানে ফিরে যাওয়ার পর প্রতিরোধের শুরুটা হয়েছিল তাঁর ব্যাটই। আশ্চর্য সংযমে অশ্বিন-জাদেজাদের মায়াবী প্রলোভন এড়িয়ে গেছেন, যাদব-ইশান্তদের সামলেছেন বয়সের সঙ্গে বেমানান পরিণিতিতে। অধিনায়ক স্মিথও এমনকি তাঁকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি, স্বভাববিরুদ্ধ সংযমী ইনিংস খেলে ফিরে গেছেন ৫২ বলে ৮ রান করে। প্রথম সেশনেই রানের চাকাটা ঘুরতে শুরু করছিল নিতান্তই মন্থরভাবে, অশ্বিনরা যেন ফাঁস হয়ে চেপে বসছিলেন রেনশদের ওপর।

    দ্বিতীয় সেশনে সেই বাঁধন একটু একটু করে আলগা করতে শুরু করেছিলেন রেনশ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বেশ কিছু রানও করে ফেলেছিলেন। জাদেজার বলেই ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছয় মারার এক বল পর একই কাজ করতে গিয়েছিলেন। তবে এবার জাদেজার পাতা ফাঁদে রেনশ পা দেন, সাহাও দারুণ স্টাম্পিংয়ের জন্য কিছুটা কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন।

    তখনও অস্ট্রেলিয়া ১৩৪ রানে ৩ উইকেট, ১৮৯ মনে হচ্ছিল বেশ কিছুটা দূরের পথ। তবে রেনশর দেখিয়ে যাওয়া পথে এরপর হেঁটেছেন শন মার্শ। আগের টেস্টে তেমন কিছু করতে পারেনি, উইকেটের চরিত্র বুঝে আজও ছিলেন দারুণ সতর্ক। হ্যান্ডসকম্ব কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন, কিন্তু ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসেই জাদেজার বলে ক্যাচ দেন অশ্বিনকে। খানিক পর মিচেল মার্শও কোনো রান না করে ফিরে গেলে হঠাৎ করেই একটু বিপদে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

    কিন্তু এবার ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে সেই বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন মার্শ। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের ৫৭ রানের জুটিটা আরও বড়ও হতে পারত। তবে ক্লান্তি থেকেই হয়তো, এত প্রতিরোধের পর অলস এক শট খেলে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন মার্শ। স্টার্ক অবশ্য ফিরে যেতে পারতেন এর পরেই। তবে ভাগ্য ভালো, একবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছে। আরেকবার নো বল হওয়ায় পার পেয়ে গেছেন এলবিডব্লুর জোরালো আবেদন থেকে। দিনের বাকি সময়টা ওয়েডের সঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছেন ভালোমতোই। তৃতীয় দিনে অবিচ্ছিন্ন ১৭ রানের জুটিটা আরও বড় করতে চাইবে দুজন। আর অশ্বিনরা চাইবেন, আরও কঠিন হয়ে আসা উইকেটে যত দ্রুত অস্ট্রেলিয়াকে থামিয়ে দিতে। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত, এই টেস্টে আর যাই হোক, অন্তত রোমাঞ্চের নিশ্চয়তা থাকছেই।