আলভেসের কাছেই হারল মোনাকো
প্রাণের ক্লাব বার্সেলোনা থেকে এই মৌসুমেই ফ্রিতে যোগ দিয়েছিলেন জুভেন্টাসে। কোয়ার্টার ফাইনালে সেই বার্সাকেই হারিয়ে সেমিতে উঠেছিলেন জুভেন্টাসের হয়ে। সেমিফাইনালের দুই লেগে মোনাকোর বিপক্ষে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স দিয়ে দানি আলভেস যেন জানান দিয়ে রাখলেন, ফুরিয়ে যাননি এখনো। নিন্দুকদের বুঝিয়ে দিলেন, কেন এখনো অনেকের মতেই বিশ্বসেরা রাইটব্যাক তিনিই। প্রথম লেগের ২-০ গোলের জয়ে দুটি গোলই এসেছিল তার অ্যাসিস্ট থেকেই। আজ এক গোল, এক অ্যাসিস্ট দিয়ে দলকে এনে দিলেন কার্ডিফের টিকেট। আলভেসে সওয়ার হয়েই মোনাকোকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ১৪-১৫ মৌসুমের পর আবারো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চলে গেল অ্যালেগ্রির দল।
ফাইনালে যেতে অন্তত দুবার লক্ষ্যভেদ করাই লাগতো মোনাকোকে। কিন্তু চলতি ইউসিএল মৌসুমে টানা ছয়টি ক্লিনশীট রাখা জুভেন্টাসের বিপক্ষে কাজটা যে কঠিন হবে- এমনটা জানা ছিল সবারই। আক্রমণাত্মক সূচনা করলেও গোলের দেখাটাই পায়নি মোনাকো। ওদিকে মোনাকোর আক্রমণাত্মক মনোভাবের সুবাদে একাধিক প্রতি আক্রমণের সুযোগ পাওয়া জুভেন্টাসের সামনে এক দুর্ভেদ্য দেয়ালই হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সুবাসিচ। দিবালা, হিগুয়াইনদের অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছিলেন এই ক্রোয়েশীয়ান কিপার। সাইডলাইন থেকে সুবাসিচের বীরত্ব দেখে কপাল চাপড়াতে থাকা অ্যালেগ্রির মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলেন আরেক ক্রোয়েশীয়ান মাঞ্জুকিচ। ৩৩ মিনিটে আলভেসের ক্রস থেকে তার হেডটাও বাঁচিয়েছিলেন মোনাকো কিপার, কিন্তু ফিরতি বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি এই স্ট্রাইকার। দুই লেগ মিলিয়ে তিন গোলেই সরাসরি অবদান রাখা দানি আলভেসের পা থেকেই এসেছে ম্যাচে জুভেন্টাসের দ্বিতীয় গোল। ৪৪ মিনিটে কর্ণার থেকে সুবাসিচের ক্লিয়ারেন্সে বল পেয়েই দুর্দান্ত এক ভলিতে বল জালে জড়ান আলভেস। গোলের পরই ‘সাম্বা’ নৃত্যে মাতা এই ব্রাজিলীয়ানের সাথে তাল মিলিয়ে উদযাপনে মেতে ওঠে জুভেন্টাস স্টেডিয়াম।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা বিস্ময়করভাবে গোলের দেখা পায় মোনাকো। ৬৯ মিনিটে মৌতিনহোর ক্রস থেকে বর্ষীয়ান বুফনকে পরাস্ত করেন এম্বাপ্পে। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল ইতিহাসে গোল করা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় বনে গেলেন এই ফরাসী স্ট্রাইকার। খেলার ৭৪ মিনিটে গ্লিকের ট্যাকেলে আঘাত পেয়ে হিগুয়াইন মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও খেলা চালিয়ে যায় মোনাকো। অপরপ্রান্তে মাঞ্জুকিচ, ফাবিনহোকে কনুই দিয়ে গুঁতো মারায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু দলের খেলোয়াড়েরা। হাতাহাতির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে দু দলের ডাগআউটেও। রেফারীর শেষ বাঁশির পরপরই মাঠে জুভেন্টাস খেলোয়াড়দের উল্লাসে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে তুরিনের বাতাস। যেন অনুচ্চারে জানিয়ে দিয়ে রাখল, 'কার্ডিফ, আমরা আসছি'।