• শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    লঙ্কার দেশে সিকান্দাররাই রাজা!

    লঙ্কার দেশে সিকান্দাররাই রাজা!    

    শ্রীলঙ্কা ২০৩/৮, ৫০ ওভার 
    জিম্বাবুয়ে ২০৪/৭, ৩৮.১ ওভার 

    ফলঃ জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী 


    ক্রেমার চেয়ে ছিলেন বলের দিকে। রাজা দৌড়াচ্ছেন, রাজা চিৎকার করছেন। রানের জন্য। ক্রেমার দৌড় শুরু করলেন শেষে গিয়ে। বেঁচে গেলেন, সিঙ্গেল হলো, জিম্বাবুয়ে এগিয়ে গেল আরও বড় চিৎকারের দিকে! তাদের ২১ বলে ২৯ রানের জুটিই তো লঙ্কার দেশে শুনিয়েছে আফ্রিকান সিংহের গর্জন! 

     

    দনঞ্জয়াকে লং-অফ দিয়ে ছয়। শ্রীলঙ্কান উইকেটকিপার ক্যাচের জন্য চিৎকার করলেন। সেই চিৎকার মিশে গেল সহসাই, সিকান্দার রাজার চিৎকার যে তখন হাম্বানটোটা ছাড়িয়ে চলেছে! উন্মাতাল জিম্বাবুয়ের ডাগ-আউট, উন্মাতাল ড্রেসিংরুম। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পর কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জেতাও প্রথমবার! 

     

    ২০৪ রানের লক্ষ্যটা খুব ভালভাবেই তাড়া করছিল জিম্বাবুয়ে। হঠাৎ চাপ যেন ওলটপালট করে দিতে চাইলো সব। ৯২ রানের ওপেনিং জুটির পর ৪৫ রানের জুটি। ৭৩ রানে মাসাকাদজার দারুণ এক ক্যাচ নিলেন কুলাসেকেরা, জিম্বাবুয়ের ভাঙ্গন শুরু তখনই। এরভিন ক্রিজে দাঁড়িয়ে থেকে এলবিডাব্লিউ হলেন দনঞ্জয়ার বলে। উইলিয়ামস ফ্লিক করতে গিয়ে হলেন লিডিং-এজ, জিম্বাবুয়েকে যেন তখন পেয়ে বসেছে দনঞ্জয়ার স্পিন-জুজু! মুসাকান্দা ৩৭ করেছিলেন, সেট তো তাকে বলাই যায়। সেই তিনিও তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দিলেন। দনঞ্জয়ার সঙ্গে আরেকদিক থেকে চেপে ধরেছিল মালিঙ্গকার নিয়ন্ত্রিত সব ইয়র্কার। তার বলে তাকেই ক্যাচ দিয়েছিলেন ওয়ালার। 

     

    ইতিহাস থেকে যেন ছিটকে যাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। পিটার মুর আউট হলেন অতি সাবধান হতে গিয়েই। সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে লেগ গালির মতো পজিশনে দিলেন ক্যাচ। সে ওভারেই দনঞ্জয়াকে ছয় মারলেন রাজা, লং-অফ দিয়ে। যেন চললেন উলটো স্রোতে, যেন জানান দিলেন দিনটা শুধু তাদেরই! 

     

    বোলাররা অবশ্য আরও আগেই জানান দিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরেছেন তারা। তিন স্পিনার রাজা, ক্রেমার ও উইলিয়ামস মিলে ৩০ ওভারে দিয়েছেন ৮৫ রান, ২.৮৩ হারে। নিয়েছেন ৬ উইকেট, রাজা ৩টি, ক্রেমার ২টি, উইলিয়ামস ১টি। 

     

    আগের দুই ম্যাচেই ২০০ ছাড়ানো শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি এদিন করতে পেরেছে মাত্র ৩। ডিকভেলা গেলেও গুনাতিলাকা ছিলেন, পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগেই অবশ্য পথ হারিয়ে ফেলা শুরু করেছে তারও আগেই। ম্যাথিউসের সঙ্গে তার ৪৭ রানের জুটি ভেঙেছে অধিনায়কের খাপছাড়া শটেই। 

     

    গুনাতিলাকা এরপর ব্যাটনটা দিয়েছেন গুনারত্নের হাতে, দুজনের জুটি ৪১ রানের। গুনারত্নে থাকলেন। ৫০ ওভারের আগেই অল-আউটের শঙ্কায় পড়া শ্রীলঙ্কাকে ২০০ পার করালো তারই ফিফটি। ৯ম উইকেটে চামিরার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৫০ রানের জুটি, ৫৩ বলে। তিনি অপরাজিত থাকলেন ৫৯ রানে। 

     

    কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না শ্রীলঙ্কার। হলো জিম্বাবুয়ের। হলো সিরিজসেরা মাসাকাদজাদের। হলো ম্যাচসেরা রাজার। হলো অধিনায়ক ক্রেমারের। 

     

    হলো তো জিম্বাবুয়ের ইতিহাসই!