• শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে
  • " />

     

    ইতিহাস গড়েই জিতলো শ্রীলঙ্কা

    ইতিহাস গড়েই জিতলো শ্রীলঙ্কা    

    সংক্ষিপ্ত স্কোর, কলম্বো টেস্ট 
    জিম্বাবুয়ে ৩৫৬ ও ৩৭৭
    শ্রীলঙ্কা ৩৪৬ ও ৩৯১/৬ 
    ফলঃ শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী
     


    এশিয়ার মাটিতে এর আগে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ৩৮৭। ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে ভারত জিতেছিল ইংল্যান্ডের সঙ্গে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে রান তাড়ার সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের, ২০১৫ সালে ৩৭৭ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। দুইটি রেকর্ডই ভেঙ্গে দিল শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুয়ের দেয়া ৩৮৮ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে দীনেশ চান্ডিমালের দল! সব মিলিয়ে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। 

    দিনে শুধু রেকর্ড না, হলো অনেককিছুই। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত, ক্যাচের সুযোগ বা স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া, রান-আউটের সুযোগ হাতছাড়া। কতোকিছু হলো, শুধু উইকেটটাই পেলো না জিম্বাবুয়ে। যেসব উইকেট ছিল গুরুত্বপূর্ণ, যেসব উইকেট বদলে দিতে পারতো ম্যাচের প্রেক্ষাপট, জিম্বাবুয়ে সে উইকেটগুলোই পেলো না ঠিক সময়ে। নিরোশান ডিকভেলা রান-আউটের হাত থেকে বাঁচলেন, তার ক্যাচ নিতে পারলেন জিম্বাবুইয়ানরা ঠিকঠাক। তবে ডিকভেলা সবচেয়ে বেশি ‘কৃতজ্ঞ’ থাকতে পারেন আম্পায়ার চেত্তিথরি শামসুদ্দীনের কাছে। লাইনের ওপর পা রেখেও যে স্টাম্পিংয়ের হাত থেকে বেঁচে গেছেন ডিকভেলা, শামসুদ্দীনের ‘বদৌলতে’ই। তখন তার রান ৩৭, শেষ পর্যন্ত উইলিয়ামসের বলে চাকাভাকে ক্যাচ দেয়ার আগে করেছেন ৮১। গুনারত্নের সঙ্গে হয়ে গেছে ততক্ষণে ১২১ রানের জুটি, শ্রীলঙ্কার রান তখন ৩২৪। 

    জিম্বাবুয়ের সুযোগ ছিল তখনও। সে সুযোগটা তাদের নেয়া হয়নি আর, ভাগ্যের সঙ্গে এর বড় ‘দায়’ আসেলা গুনারত্নের। দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে তিনি গড়লেন ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন শ্রীলঙ্কাকে, ইতিহাসের দিকে। 

    দিনের শুরুর দিকেই অবশ্য পথ হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথমে মেন্ডিস অযাচিত সুইপ করতে গিয়ে তুলে দিয়েছিলেন বল, শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ধাক্কা দেয়ার পেছনে বোলার ক্রেমারের সঙ্গে তার দায়টাও তো কম নয়। অন্তত ৬৬ রান করার পর ম্যাচের এমন পরিস্থিতে এমন শট খেললে নিজেকে কেইবা ক্ষমা করতে পারেন! ম্যাথিউস এরপর যেন ক্রেমারকে করালেন ক্যাচিং অনুশীলন। তা সেটা ঠিকঠাক নিলেন ক্রেমার, ২৫ রান করে সদ্য সাবেক হওয়া লঙ্কান অধিনায়কের উইকেট দিয়ে যেন নতুন শুরু করলো জিম্বাবুয়ে।  

    তবে শেষটা করা হলো না। অন-ফিল্ড আম্পায়ারের 'সফট সিগন্যাল'টা পক্ষে এলো না তাদের! ১১২ তম ওভারে এসে প্রথম রিভিউ নিলেন ক্রেমার। সেই ওভারেই নিলেন দ্বিতীয়টিও। সবকিছুর পর জিম্বাবুয়ে যেন তখন কোনও অসম্ভব আশির্বাদের আশায়! সেটা পেলেন না তারা। ব্যর্থ হলো দুইটি রিভিউই, দিলরুয়ান পেরেরা থাকলেন অক্ষত। অক্ষত থাকলেন গুনারত্নে। অক্ষত থাকলো হেরাথের শ্রীলঙ্কা। 

    কলম্বোতে দুই স্পিনারের লড়াইটাও জিতে গেলেন হেরাথ। ১১ উইকেট নিয়ে তিনি সেরা বোলার। তার পেছনে ছোটা ক্রেমার থামলেন ৯টি নিয়েই। শুধু একটির জন্য পেলেন না ক্যারিয়ারের প্রথম ‘টেন-ফর’টা। যেমন জিম্বাবুয়ে ‘একটু’র জন্য পেলো না তাদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয়টা! 

    আজ অবশ্য জিম্বাবুয়ের অল্প-একটু-যদি-কিন্তু রকমের আফসোসেরই দিন! 


    ম্যাচসেরাঃ আসেলা গুনারত্নে ৪৫ ও ৮০* রান ও ২/২৮