• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    'তাসকিন ও মুস্তাফিজ একে অন্যের পরিপূরক হতে পারে'

    'তাসকিন ও মুস্তাফিজ একে অন্যের পরিপূরক হতে পারে'    

    বাংলাদেশের বোলিং কোচ হয়েছেন প্রায় বছরখানেক হয়ে গেল। কোর্টনি ওয়ালশ মূলত কাজ করছেন পেসারদের নিয়ে। তবে টানা খেলায় এতোদিন ধরে সেভাবে সুযোগ হয়নি। ফিটনেস ক্যাম্পের ফাঁকে সেটি এবার পেয়ে যাচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক কিংবদন্তি এবার কথা বললেন বাংলাদেশের পেস বোলিং সম্ভাবনা, তাসকিন-মাশরাফিদের সহ আরও অনেক কিছু নিয়েই।


     

    ট্রেনিং ক্যাম্পে উন্নতি

    এই প্রথম আমি ওদের নিয়ে খুব নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ পেলাম। আসার পর থেকেই তো একটার পর একটা খেলা, ওদের জন্য সময় বের করা কঠিন ছিল। অনেকেই বলছে ও লিখছে আমি নাকি অ্যাকশন বদলে দিয়েছি, ব্যাপারটা আসলে সেরকম নয়। এরকম কিছুই হয়নি। আমরা শুধু ওদের আরও ভালোভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। যেসব ভুল হতে পারে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি। এজন্যই আমি একটু আগেভাগে এসেছি, ওদের সাথে যথাসম্ভব কাজ করে ভুলগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি। খেলার সময় এভাবে কিছু পরিবর্তন আনা আসলে কঠিন।

    আমরা চেষ্টা করছি, ওদের কিছু জিনিস আরেকটু নিখুঁত করার, কিছু জায়গায় উন্নতি করার। উন্নতিই হচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎ করে আবহাওয়া বাধ সেঁধে বসেছে। কিন্তু আমরা সময়টা নষ্ট করছি না। আমরা ইনডোরে একসাথে বসছি, ক্রিকেট নিয়ে কথা বলছি, নিজেদের ভাবনা আরও ধারালো করার চেষ্টা করছি।

     

    ধারাবাহিকতাই চাবিকাঠি

    এটা সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট। ছেলেরা এখনও তরুণ, সবকিছু এখনও তারা আত্মস্থ করতে পারবে না। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে এটা বাড়ে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেশের বাইরেও খুব বেশি সফরের অনুমতি পাই না। আসলে ধারাবাহিকতা ও নিয়ন্ত্রণে ওদের অনেক বেশি উন্নতি করতে হবে। এরপর তাদের আত্মবিশ্বাস এমনিতেই অনেক বেড়ে যাবে। তারা সবাই পরিশ্রম করতে চায়, যেটা বড় একটা প্লাস পয়েন্ট।

     

    বয়স ওদের  পক্ষে

    বয়স একটা বড় ব্যাপার। বিভিন্ন কন্ডিশন থেকে তারা অনেক কিছু দ্রুত শিখতে পারে, যেমন নিউজিল্যান্ড ও ভারত সফরে গিয়ে তারা অনেক কিছু শিখেছে। সে অনুযায়ী তারা সেসব পরখ নিতে পারবে। মাশরাফি আমাদের সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন। সে কন্ডিশনটা খুব ভালোভাবে জানে। তরুণদের সে বেশ সময় দেওয়ার চেষ্টা করে। সবাই তাই শিখতে মুখিয়ে আছে।

     

    তাসকিনের পেস কমে যাওয়া

    সে ধারাবাহিক হতে চাইছে, আমার মনে হয় সে যেখানে চাইছিল সেখানে বল ফেলতে পারেনি। আমরা চাই ও জোরে বল করুক, কারণ অর পেস আছে, সেটা সে কাজে লাগাতে পারে। ওর নিয়ন্ত্রিত একটা আগ্রাসবন আছে, এবং পেসটা কাজে লাগানোর জন্য ও ঠিক জায়গায় বল ফেলতে পারে।

     

    কোচিংটা কেমন উপভোগ করছেন

    দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবার ফিরতে পারে, তরুণদের মধ্যে নিজের জ্ঞান ভাগাভাগি করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমি এই উন্নতির অংশ হতে পেরে খুশি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে পুরো কোচিং স্টাফই খুব খুশি। আমরা শুধু এই প্রতিভাগুলো যত্ন করার কাজটা তদারক করতে চাই, এগুলোকে ঠিক দিকে পথ দেখাতে চাই। শুধু মাঠের বাইরে না, মাঠের বাইরেও তরুণরা দেখানো পথে চলতে পারলে সেটা ওদের জন্যই ভালো হবে।

     

    পেস বোলাররা জোড়ায় কাজ করে কি না

    আজকে আমরা ঠিক এটা নিয়েই কথা বলছিলাম। ফাস্ট বোলাররা জোড়ায় জোড়ায় কাজ করে, নিজেদের মধ্যে আইডিয়া ভাগাভাগি করে। আমার মনে হয় আমাদের এখানে আটজন আছে, তারাও এটা জানে। যেমন তাসকিন ও ফিজ একে অন্যের পরিপূরক হতে পারে। একজন ফাস্ট বোলার নিজের সঙ্গে তার সঙ্গীকেও সাহায্য করতে পারে। দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতাও অনেক সময় ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারে। আমি ও কার্টলি অ্যামব্রোস যেমন একে অন্যকে সাহায্য করতাম। আমরা ব্যাটসম্যানদের কীভাবে পরাস্ত করা যায় সেটাই ভাবতাম।

     

    বাংলাদেশে পেসার সম্ভাবনা 

    দরজা তো খোলাই আছে। আমি সাইমনের (এইচপির কোচ সাইমন হেলমুট) সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলছিলাম, বিসিবির অনেকের সাথেও কথা বলেছি। জানিয়েছি এটা করতে সময় লাগবে। আমি এখানে কাজ করতে এসেছি, আমি জানি কোনটা দলের জন্য ভালো হবে। এটা উন্নতির দিকে, তবে আমি জানি আরও ভালো করার সুযোগ আছে।

     

    এবং চম্পকা রামানায়েকে

    বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য যা ভালো হয়, সেটাই করতে হবে। ও আসছে এটা শুনেছি, যদিও বোধ হয় চূড়ান্ত হয়নি। আমি দুই হাত বাড়িয়েই ওকে বরণ করে নিচ্ছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।

     

    ক্যাম্প থেকে যা পাওয়ার... 

    আমি ছেলেদের মধ্যে আরও বেশি ধারাবাহিকতা, নিয়ন্ত্রণ, বৈচিত্র্য দেখতে চাই। ওরা তরুণ, তবে এই কাজ ওরা ভালোমতোই করতে পারবে। আর সেটা তাদের নিজেদেরই করতে হবে, আমরা করে দিতে পারব না। আমি ওদের বলেছি, ‘তোমাদের ভাগ্য নিজেদেরই হাতে, এটা তোমাদেরই লুফে নিতে হবে’। তারা যদি আরও ধারাবাহিক ও আরও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, তাহলেই আমি খুশি হন।