ধাওয়ান-পূজারার দিনে টিমটিমে লঙ্কা-প্রদীপ
স্কোর
প্রথম দিন শেষে
ভারত ৯০ ওভারে ৩৯৯/৩ (ধাওয়ান ১৯০, পূজারা ১৪৪*। রাহানে ৩৯*; প্রদীপ ৩/৬৪)
শিখর ধাওয়ানের ড্রেসিংরুমে ফিরে হাত কামড়াতে পারতেন। মুহূর্তের খামখেয়ালিপনায় ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেতে পেতেও পাওয়া হলো না ভারত ওপেনারের। তবে চেতেশ্বর পূজারা সেই ভুল করেননি, গলের মরা পিচে মুহূর্তের জন্য মনযোগ হারাননি। ৩ উইকেট নিয়েও তাই শ্রীলঙ্কার নুয়ান প্রদীপের আলোটা টিমটিমেই থেকে গেছে।
প্রথম দিন শেষে ভারতের রানই তো বলে দিচ্ছে অনেক কিছু। গলের প্রথম দিনেই ৩৯৯ রান তুলেছে ভারত, বিদেশের মাটিতে এক দিনে এত রানের কীর্তি ছিল না কখনো। আর সব মিলে এক দিনে এর চেয়ে বেশি রান করেছে মাত্র তিন বার। তবে ধাওয়ান একটা দিক দিয়ে রেকর্ডটা ঠিকই নিজের করে নিয়েছেন। আউট না হলে অমর হয়ে যাওয়া একটা রেকর্ডের কাছাকাছিও হয়তো চলে যেতেন।
অথচ এই টেস্টে সুযোগই পাওয়ার কথা ছিল না ধাওয়ানের। ফিট থাকলে মুরালি বিজয় বা লোকেশ রাহুলদের কেউই হয়তো খেলতেন। অন্য প্রান্তে অভিনব মুকুন্দের জায়গাটা সেই তুলনায় পাকাই ছিল, তবে আজ প্রদীপের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন মাত্র ১২ রান।
ধাওয়ানের গল্পটা শুরু এর পরেই। লাঞ্চের আগেই ফিফটি পেয়ে গিয়েছিলেন, তবে আসল খেলটা দেখালেন এর পর। লাঞ্চ ও চা বিরতির মধ্যের সেশনে একাই করলেন ১২৬ রান, টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে ভারতের হয়ে এটাই সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড। ১৯৬২ সালে পোর্ট অব স্পেনে পলি উমরিগড় টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে করেছিলেন ১১০ রান।
ধাওয়ানের গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত। ডন ব্র্যাডম্যান এক দিনেই করেছিলেন ট্রিপল সেঞ্চুরি, প্রায় অমর হয়ে যাওয়া সেই রেকর্ড হয়তো অনেক দূরে ছিল। তবে যেভাবে খেলছিলেন, কাছাকাছি যাওয়াটা বিচিত্র মনে হচ্ছিল না। তবে আত্মবিশ্বাস থেকেই হয়তো, নুয়ান প্রদীপকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে ক্যাচ দিয়েছেন মিড অফে। ১৯০ রানেই আউট হয়ে পুড়তে হয়েছে আফসোসে।
পূজারা অবশ্য অন্যদিকে চীনের প্রাচীরের মতোই অটল। সুযোগ দেওয়া দূরে থাক, পুরো ইনিংসে মাত্র একবার বল তাঁকে পরাস্ত করে উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা হয়েছে। বলতে গেলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল শতভাগ। অন্য প্রান্তে কোহলিও বেশিক্ষণ থাকেননি। প্রদীপের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে আউট হওয়ার আগে করেছেন মাত্র ৩। শুরুতে আম্পায়ার অবশ্য আউট দেননি, রিভিউ নিয়ে সাফল্য পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। ভারতের রান তখন ২৮৬ রানে ৩ উইকেট, শ্রীলঙ্কার সেটিই ছিল দিনের শেষ সাফল্য।
বাকি সময়টা প্রদীপদের হতাশ করে গেছেন পূজারা-রাহানে। চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেছেন ১১৩ রান, দ্বিতীয় দিনে সেটি নিয়ে যেতে চাইবেন আরও অনেক দূর। শ্রীলঙ্কার কাঁটা গায়ে নুনের ছিটার মতো পেয়েছে আরেকটি দুঃসংবাদ। ফিল্ডিং করতে গিয়ে বুড়ো আঙুলের হাড় ভেঙে যাওয়ায় এই টেস্টে খুব সম্ভবত আর খেলতে পারবেন না আসেলা গুনারত্নে।