ভারতের দিনে উজ্জ্বল আশ্বিন
কলম্বো টেস্ট, দ্বিতীয় দিনশেষে
ভারত ৬২২/৯ ডিক্লে. (পুজারা ১৩৩, রাহানে ১৩২, জাদেজা ৭০*, সাহা ৬৭, রাহুল ৫৭, আশ্বিন ৫৪, হেরাথ ৪/১৫৪)
শ্রীলঙ্কা ৫০/২ (মেন্ডিস ১৬*, চান্ডিমাল ৮*, আশ্বিন ২/৩৮)
শ্রীলঙ্কা ৫৭২ রানে পিছিয়ে
দক্ষ কোনো দাবাড়ু টুর্নামেন্টের প্রথম দিনটা দারুণ কাটালেন। কারও সঙ্গে ড্র, কারও সঙ্গে বড় জয়। দ্বিতীয় দিন, সামনে এক নবিশ। চমকে গেলেন তাতেই। ড্র দূরে থাক, হেরেই গেলেন। চেতেশ্বর পুজারা যেন দাবার সেই গ্র্যান্ডমাস্টার, দিমুথ করুনারত্নে সেই নবিশ খেলোয়াড়। টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয়বার বোলিং করতে এলেন, তাও কলম্বো টেস্টে শ্রীলঙ্কার একমাত্র পেসার নুয়ান প্রদীপ চোট পেয়েছেন বলে। এসেই পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট, সেঞ্চুরিয়ান পুজারা করুনারত্নের ভেতরের দিকে ঢোকা বলেই যেন ভড়কে গেলেন। শ্রীলঙ্কার রিভিউয়ে মত বদলাতে হলো অন-ফিল্ড আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ডকে।
আজিঙ্কা রাহানে অবশ্য ভড়কালেন না সহসাই। রবি আশ্বিনের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটিতে রাহানের অবদান অবশ্য ২৮। তিনিও এনে দিলেন আরেক বোলারকে প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ, অভিষিক্ত মালিন্দা পুস্পকুমারাকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মারতে গিয়ে হলেন স্টাম্পড। ভারতের লোয়ার অর্ডার যেন পুজারা-রাহানের জুটিতে তাতিয়ে ছিল বেশ। সুযোগ পেয়েই খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এলেন সবাই। আশ্বিন, ঋদ্ধিমান সাহা, রবীন্দ্র জাদেজা, ভারতের ছয়-সাত-নয় নম্বরের প্রত্যেকেই পেলেন ফিফটি, একজন করলেন আরেকজনের চেয়ে বেশি। ‘ছায়া’ পুস্পকুমারা ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় উইকেট নিলেন হারদিক পান্ডিয়াকে, আশ্বিন-সাহা-শামিদের চোখ ধাঁধিয়ে গেল ‘আলো’ হেরাথে।
৬২২ রানে এক উইকেট রেখেই ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন বিরাট কোহলি। শ্রীলঙ্কায় অতিথি দলের এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। কোহলির মূল লক্ষ্য ছিল অবশ্যই দিনের শেষ ২০ ওভার ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া। লঙ্কানরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন মূলত আশ্বিনেরই। অফস্পিনের সব বৈচিত্রের পসরা সাজিয়েছিলেন যেন। উপুল থারাঙ্গা অবশ্য আউট হলেন তার সবচেয়ে বাজে বলেই। আশ্বিনের হাত থেকে যেন ফসকে গিয়েছিল বলটা, বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগস্টাম্প দিয়ে। থারাঙ্গা কেন খেলতে গেলেন ওভাবে, সেটা জবাব-না-থাকা এক প্রশ্ন বটে। লোকেশ রাহুলও কিভাবে ক্যাচটা ধরে রাখলেন, রহস্য সেটাও।
করুনারত্নের উইকেট অবশ্য আশ্বিনের ভাল বোলিংয়ের পুরস্কার। রাউন্ড দ্য উইকেটে প্রথমে ড্রিফট, তারপর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট টার্ন। রাহানে স্লিপে ভুল করেননি, ব্যাটিংয়ের মতো।
শ্রীলঙ্কার মহাসাগর পাড়ি দেয়ার আশা হয়ে টিকে আছেন দুই নাবিক, দীনেশ চান্ডিমাল ও কুশাল মেন্ডিস। সামনে তাদের ৫৭২ রানের অসীম জলসীমা। যে জলসীমায় আপাতত উজ্জ্বল আশ্বিন। ব্যাটিংয়েও, বোলিংয়েও।