সশস্ত্র কমান্ডো-মহড়ার মাঝেই মুশফিকের অনুশীলন
দূর থেকে উড়ে আসা হেলিকপ্টারটা কয়েকটা পাক খেয়ে নেমে এলো মিরপুর স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায়। একটু পরেই সেখান থেকে এলো একদল সশস্ত্র কমান্ডো, অস্ত্র তাক করে তারা অবস্থান নিল স্টেডিয়ামের বিভিন্ন কোণায়। কয়েকজন গুলি করতে করতে ছুটে গেল এক মাথা থেকে আরেক মাথায়। কয়েকজন আবার ছুটে গেল ড্রেসিংরুমে, সেখান থেকে ‘ডামি’ খেলোয়াড়দের ‘এসকর্ট’ করে তারা তুলে দিল হেলিকপ্টারে। তাদের নিয়ে সেই হেলিকপ্টার উড়ে গেল একটু পর।
পড়তে পড়তে ভাবছেন, মিরপুরে কি আজ লঙ্কাকাণ্ডই হয়ে গেল? যা হয়েছে সেটা অবশ্য কোনো অ্যাকশন সিনেমার দৃশ্যও নয়। অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে সামনে রেখে সেনাবাহিনির বিশেষ কমান্ডো দল একটা নিরাপত্তার মহড়া দিয়েছে মিরপুর স্টেডিয়ামে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ বা গত বছরের ইংল্যান্ড সিরিজেও এমন নিরাপত্তার মহড়া হয়েছে। এবার স্মিথরা আসার আগেই হয়ে গেল সেটি।
যাদের নিরাপত্তার জন্য এত কিছু, সেই খেলোয়াড়দের অনেকেই উৎসুক হয়ে নেমে এসেছিলেন ড্রেসিংরুমের বাইরে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তো পুরো ব্যাপারটা মুঠোফোনে ভিডিও-ও করেছেন। খেলোয়াড়দের কেউ কেউ দৃশ্যটা ধারণ করে রেখেছেন মুঠোফোনে। কমান্ডো দল আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কতটা নিরাপত্তা দিতে পারে, সেটাও সামনাসামনি দেখা হয়েছে অনেকের। সেজন্য খানিকটা সময় অনুশীলনও বন্ধ রাখতে হয়েছে।
মিরপুরে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের শুরুতেই একবার বাগড়া দিয়েছিল বৃষ্টি। পরে মহড়ার জন্য বেশ খানিকটা দেরিই হয়ে গেছে খেলা শুরু করতে। বারটার পরেই অবশ্য অনুশীলন শুরু হয়ে গেছে, চট্টগ্রামের মতোই দুই ভাগ হয়ে নেমেছেন তামিম ও মুশফিকের মতো। আজ অবশ্য মূল মাঠে অনেকটা রুদ্ধদ্বার অনুশীলনই হয়েছে, টিভি ক্যামেরাও ঢোকার অনুমতি পায়নি। কোচ হাথুরুসিংহে নিজেই নেমে গিয়েছিলেন ফিল্ডিং করতে, বোঝাই যাচ্ছিল সিরিজটা কতটা ‘সিরিয়াসলি’ নিয়েছেন বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান কোচ। চট্টগ্রামে যে তিনজন সুযোগ পাননি, তারাও ঝালাই করে নিতে পেরেছেন নিজেদের। মুশফিকের দলের হয়ে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন চোখের অসুখ থেকে সেরে ওঠা মোসাদ্দেক। সিপিএলের জন্য চট্টগ্রামের ক্যাম্পে ছিলেন না সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজও। দুজনেই বল তো করেছেনই, পরে তামিমের দলের হয়ে ওপেনও করেছেন। প্রস্তুতিটা কারা কাজে লাগাতে পারবেন, সেটা অবশ্য জানা যাবে আগামী শনিবার। টেস্টের জন্য ১৪ জনের দল যে ওইদিনই ঘোষণা করা হবে! আজ অবশ্য মিরপুরে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের টাইটেল স্পন্সরের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড সিরিজের মতো এবারও ডাচ বাংলা ব্যাঙ্কের মোবাইল ব্যাকিং রকেটই থাকছে মূল পৃষ্ঠপোষক।
এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার দুইজনের নিরাপত্তা পরিদর্শক দল আজই আবার গেছেন ফতুল্লায়। আজ-কালের মধ্যে যাওয়ার কথা বিকেসপিতেও। অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত প্রস্তুতি ম্যাচ কোথায় খেলবে, সেটাও এর মধ্যেই জানা যাবে।