বাস্তবতা বুঝে পা মাটিতেই রাখছেন তাসকিন
ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল স্বপ্নের মতো, ভারতের সঙ্গে পাঁচ উইকেট নিয়ে চমকে দিয়েছিলেন ভারতকে। টেস্ট ক্রিকেটের অভিষেকে অবশ্য মুদ্রার অন্য পিঠটাই দেখতে হয়েছে, দুই ইনিংস মিলে পেয়েছেন এক উইকেট। এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারের চার টেস্টে মুদ্রার অন্য পিঠটা আরও ভালোমতোই দেখে ফেলেছেন তাসকিন আহমেদ, পেয়েছেন মাত্র সাত উইকেট। তাসকিন নিজেও আজ সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করলেন, রঙিন পোশাকের পেলব পথ থেকে টেস্টের পাথুরে চত্বরে হাঁটতে অনেক বেশি রক্ত ঝরাতে হচ্ছে।
টেস্ট ক্যারিয়ার শুরুর আগে চার বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেননি। চার টেস্টে বড় কিছুও করতে পারেননি। তবে তাসকিন এখনও অনেক কিছু শিখছেন, বাস্তবতাও উপলব্ধি করতে পারছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট আমি বেশি খেলিনি, চারটা ম্যাচ খেলেছি। ফার্স্ট ক্লাস শেষ খেলেছি পাঁচ বছর আগে। এই চার ম্যাচেই মনে হয়েছে টেস্ট ক্রিকেট অনেক কঠিন জায়গা। টেস্ট খেলাটা স্বপ্নের মতো ব্যাপার। এখানে ফিটনেস বা ধারাবাহিকতা সবই রাখতে হয়। নিজেরও স্কিলের একটা ব্যাপার আছে।’
ওয়ানডে-টি টোয়েন্টির সঙ্গে টেস্টের পার্থক্যও আগের চেয়ে ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন, ‘টেস্ট ম্যাচটা সেশন হিসেবে খেলা হয়, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে একটা দুইটা স্পেলে শেষ হয়ে যায়। টেস্টে ছয় সাতটা স্পেল হয়। দিনের শেষে বা মাঝে, ব্যাটসম্যানের বড় জুটি হয়ে যায়। তখন একই জায়গায় বল করতে হয়। জিনিসটা এতোটা সহজ মনে হয়নি আমার কাছে।’
সর্বশেষ ইংল্যান্ডের সঙ্গে টেস্ট সিরিজে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের ১৯টিই নিয়েছিলেন স্পিনাররা। তাসকিন জানেন, সুযোগ পেলে এবারও কাজটা কঠিন হবে। চার-পাঁচ উইকেটের স্বপ্ন না দেখে তাই সাধ্যমতো কিছুই করতে চান, ‘উইনিং স্পেল মানেই যে পাঁচ সাত উইকেট নিতে হবে এমন নয়। হতে পারে ছোট কিছু অবদানও রাখতে পারি। হজতো ওদের একটা বড় পার্টনারশিপ হয়েছে, ওটা ভাঙতে পেরে একটা স্পেলে দুটো উইকেট পেয়েছি, সেটাও আসলে অনেক বড় ব্যাপার। তবে এই স্লো উইকেটে সেটা করাটা আসলেই কঠিন। বাংলাদেশে অবশ্য এখনো টেস্ট খেলিনি। যে কয়টা ট্যুরে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছি, অনেক কষ্ট করে এক দুইটা উইকেট পেতে হয়েছে।’
সবকিছুর পরেও টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়াটাই বড় প্রাপ্তি তাসকিনের কাছে, 'টেস্ট ক্রিকেটে স্কোয়াডে থাকলে অন্যরকম শান্তি পাওয়া যায়। টেস্ট একটা স্বপ্ন সব সময় ছিল, এখনো আছে। অস্ট্রেলিয়ায় সঙ্গে টেস্ট স্কোয়াডে থাকতে পারাটা আনন্দিত ও ভাগ্যবানও মনে হচ্ছে।’
তাসকিন সেই সুযোগ পাবেন কি না, জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে রোব বার পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ যে ওইদিনই শুরু।