'প্যাড পরে বসে থাকতে ছটফট লাগে'
হুট করে একজন স্ট্রাইকারকে মিডফিল্ডার বানিয়ে দিলে কেমন হবে? জলের মাছ ডাঙ্গায় তুললে যেমন হয়, ইমরুল কায়েসের অবস্থাটা এখন অনেকটা সেরকম। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ওপেনিং করেছেন, তবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে এখন খেলতে হবে তিনে। আজ সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল কায়েস নিজেই স্বীকার করলেন, কাজটা তাঁর জন্য ‘একটু কঠিন।’
২০০৮ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ২৮টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন। শুরু থেকেই ওপেনিং করেছেন, তাঁর সঙ্গে তামিমের জুটিটাই বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে সফল। অথচ পাকেচক্রে ইমরুলকে এখন নেমে যেতে হচ্ছে তিনে। চোটের জন্য ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে খেলতে পারেননি, তাঁর জায়গাটা নিয়েছেন সৌম্য সরকার। কলম্বো টেস্টে তাই তিনেই নামতে হয়েছে। ইমরুল জানিয়ে দিলেন, মিরপুরেও তাঁকে একই ভূমিকায় দেখা যাবে। তবে তাতে কতটুকু স্বচ্ছন্দ, তাঁর কথার পর সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, ‘ টেস্টে তিনে ব্যাট করেছি। আমি কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, কোচ আমাকে তিনেই ব্যাট করার জন্য বলেছেন। নেটে আমি ওভাবেই ব্যাট করেছি, ডোমেস্টিকেও আমি তিনে ব্যাট করেছি। কাজটা একটু কঠিন, তবে আমাকে সেভাবেই খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে।’
এমন নয়, ইমরুল আগে কখন তিনে ব্যাট করেননি। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ব্যাট করেছিলেন তিনে। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ওই ইনিংসে। এরপর আরও পাঁচ ইনিংসে তিনে ব্যাট করেছেন ইমরুল। তবে প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি আর করতে পারেননি। পরের পাঁচ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৪। অথচ এই সময়ে তাঁর ব্যাটিং গড় ৪৩।
ইমরুলের কথায় আভাস পাওয়া গেল, অনেকটা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাঁকে ব্যাট করতে হচ্ছে তিনে, ‘নিজের একটা পছন্দের জায়গা আছে। তবে টিমের ভালোর জন্য কোচ বা ম্যানেজমেন্ট মনে করে সেখানে খেলতে হবে। আমি অবশ্য দু জায়গাতেই ব্যাটিং করতে রাজি আছি। ওপেনিং বা ওয়ান ডাউন, কোথাও আমার সমস্যা নেই।’
তিন নম্বরে খেলাটা যে মানসিক দিয়েও বড় একটা চ্যালেঞ্জ, সেটাও জানালেন ইমরুল, ‘প্যাড পরে বসে থাকলে স্ট্রেস কাজ করে, কখন মাঠে যাব। ছটফট লাগে। এটা মানিয়ে নিতে হয়, তামিমকে এটা বললে পারবে না। আমিও একটা সময় অভ্যস্ত ছিলাম না। অনুশীলন বা কয়েকটা ম্যাচে অবশ্য আমি ওয়ান ডাউনে ব্যাট করেছি, মানিয়ে নিয়েছি। টিমের জন্য এটা বেটার মনে হয়। সেভাবেই আমি তৈরি করছি।’ আপাতত সৌম্য যে ওপেনিংয়ে প্রথম পছন্দ, সেটিও জানালেন, গেম প্ল্যানিংয়ের জন্য আমি তিন নম্বরে। সৌম্য ওপেনিংয়ে ভালো করেছে, স্বাভাবিকভাবে আমার চেয়ে বেটার অপশন মনে হওয়ায় লাস্ট কয়েক সিরিজে ও ওপেন করছে। ওর ধারাবাহিকতা আছে বলে সৌম্যকে হয়তো সুযোগটা দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু মুমিনুল হক এখন আবার ১৪ জনের দলে আসায় তাঁর ওপর একটু চাপ কি বেড়ে গেল? ইমরুল অবশ্য ইতিবাচক দিকটাই দেখছেন, এটা আসলে একটা পজিটিভ দিক। টিমে যত বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে, দলের জন্য ভালো। সেক্ষেত্রে টিম ভালো খেলোয়াড়কেই বেছে নিতে পারবে।’
ইমরুল চাপ থেকে সেরাটা বের করে আনেন, এটাই এখন চাইবে বাংলাদেশ।