• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    বদলে যাওয়া দলটাই এখন সাকিবের কাছে 'মজা'

    বদলে যাওয়া দলটাই এখন সাকিবের কাছে 'মজা'    

    ১০ বছর আগে যখন প্রথম সাদা পোশাক পরেছিলেন, গা থেকে কৈশোরের গন্ধ পুরোপুরি যায়নি। প্রথম দিনেই মহীরুহ হয়ে ওঠার আভাসও দেননি, বল হাতে উইকেটশুন্য থাকার পর ব্যাট হাতে করেছিলেন ২৭ রান। সেইসব দিনের দিকে তাকিয়ে আজকের সাকিব আল হাসান একটু স্মৃতিকাতরই হয়ে পড়লেন। তখন দায়িত্ব নেওয়ার অত হ্যাপা ছিল না,উপভোগ করতেন প্রাণভরে। এখনও যে তা করেননি এমন নয়, তবে সাকিব জানালেন সেই ধরন এখন বদলে গেছে। ৫০ তম টেস্টের আগে অবশ্য সাকিবের কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার, মানসিকভাবে বাংলাদেশ দলের বদলে যাওয়া।

     

    ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল সাকিবের। তখন অবশ্য আজকের এই সাকিব হননি, ব্যাট-বলে তাঁর ভূমিকা ছিল সহযোগীর। সেজন্যই ছয় নম্বরে ব্যাট করার পাশাপাশি দুই ইনিংস মিলে ১৩ ওভার বল করেছিলেন। মিরপুরে আজ সংবাদ সম্মেলনে সেসব দিনের কথা মনে করতে গিয়ে যেন একটু স্মৃতিকাতরই হয়ে পড়লেন সাকিব, 'প্রথম টেস্ট যখন খেলেছি তখন আসলে চিন্তা করিনি যে আর কত টেস্ট খেলব। ওই সময় অভিষেক হচ্ছে এটাই মাথায় ছিল, একটা মজা ছিল। মজাটা এখন যে নেই তা না। এখন আলাদা ধরনের দায়িত্ব, আবহটা অন্যরকম।’

    কিন্তু এতোদিনে সবে ৫০ টেস্ট হতে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে কি একটু আক্ষেপ আছে? তাঁর মাত্র এক বছর আগে অভিষেক হয়ে অ্যালিস্টার কুক টেস্ট খেলে ফেলেছেন প্রায় তিন গুণের কাছাকাছি (১৪৫টি)। সাকিবের জীবনদর্শন যেমন, এ বিষয়েও তার প্রতিফলন। যা চলে গেছে, তা নিয়ে আক্ষেপ করে পড়ে থাকার লোক নন ক্রিকেটের এক নম্বর অলরাউন্ডার। বরং বর্তমানটাই তাঁর কাছে বড়, ‘জীবনে খুব বেশি আফসোস নেই। ওদিক থেকে চিন্তা করলে যেটা হলো সেটা ঠিকই আছে। হ্যাঁ, আরও বেশি খেলতে পারলে ভালো হতো। তবে যেটুকু খেলেছি সেটার পাফরম্যান্স কেমন ছিল সেটাই বড় কথা। সামনে একটা ম্যাচ আছে, সেখানে ভালো করতে চাই।’

    তবে এই দশকে সাকিবের পর্যবেক্ষণ, বাংলাদেশের ক্রিকেটের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে একটা সময়ের পর খুব দ্রুতই নিতে হয়েছে বোলিংয়ের গুরুভার। তবে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সর্বশেষ সিরিজে সাকিবের অনেকটুকু দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মিরাজ। অন্য প্রান্ত থেকে সমর্থন পাওয়াটাই মানসিকতার বদল হিসেবে দেখছেন সাকিব,  'মিরাজ তাইজুল এখন খুব ভালো করছে। এর আগেও হেল্পিং হ্যান্ড ছিল, রাজ ভাই, রফিক ভাই ছিল। আগে যেটা হতো, উইকেট থেকে স্পিনাররা ওভাবে সাহায্য পেত না। ওই চিন্তার সুযোগ ছিল না, তখন আমাদের ড্র করার লক্ষ্য ছিল। সেটা মাথায় রেখেই উইকেট বানানো হতো। এখন আমরা জিততে পারি, জেতার জন্য খেলব- এই বিশ্বাস এসেছে। এখন আমাদের বোলারদের জন্য হয়তো সাহায্য বেশি হবে।’

    তবে এই এক দশকে টেস্ট ক্যারিয়ারে সাকিবের সেরা অর্জন কী? দলের হিসেবে ইংল্যান্ডের টেস্টের কথাই বললেন সবার আগে। আর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের বিচারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ২০০৯ সালে  সেন্ট জর্জে অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংসের কথা বললেন সবার আগে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই বছর ওয়েলিংটনে ২১৭, বা ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে কিউইদের বিপক্ষে ৭ উইকেট নেওয়ার কথাও বললেন আলাদা করে।  

    পঞ্চাশতম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে অভিষেকের পর এমন কিছু কি যোগ হবে সাকিবের তালিকায়?