• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    আরেকটু বেশি সাহায্য চান 'নিঃসঙ্গ' সাকিব

    আরেকটু বেশি সাহায্য চান 'নিঃসঙ্গ' সাকিব    

     

    ক্যারিয়ারের একদম শুরুতে পরিচয় ছিল বল করতে পারা ব্যাটসম্যান। এরপর বল-ব্যাট দুটোতেই হয়ে গেছেন বড় ভরসা। তবে গত বেশ কিছু টেস্টে আবার যেন ব্যাটসম্যান পরিচয়েই বেশি সপ্রতিভ সাকিব আল হাসান। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে বোলার সাকিবের কাছেও প্রত্যাশাটা আরেকটু বেশি। তবে সাকিব মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অন্য প্রান্তের সাহায্যটাও দরকার। সিনিয়রদের পাশাপাশি এখানে জুনিয়রদের ভূমিকাও কোনো অংশে কম দেখছেন না।

    এই সিনিয়র-জুনিয়র কথা নিয়েই একসময় উঠেছিল তুমুল বিতর্ক। এই বছর নিউজিল্যান্ড সফরেই সাকিব বলেছিলেন, সিনিয়রদের বেশি দায়িত্ব নিতে হবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী নন। আজও পুরনো কথাটাই আরেক বার মনে করিয়ে দিলেন, আমি একটা জিনিস সব সময় বলি, বড়-ছোট এসবের মানে নেই। ১১ জন খেলোয়াড়েরই দায়িত্ব দলকে জেতানো। জুনিয়র মানে কম করতে হবে, এমন নয়। আবার সিনিয়র মানে যে বেশি অবদান রাখতে হবে, ব্যাপারটা কিন্তু তা না। এরা আগেও ভালো করেছে। একটা দলে সব সময়ে কেউ ভালো করবে না, আবার সব সময় সে খারাপও করবে না। একটা দলে হয়তো পাঁচ ছয়জনের জন্য জেতে, কিন্তু পরের ম্যাচে ওই পাঁচ ছয়জন ভালো করবে এমন কথা নেই। এটাই আসলে টিম ওয়ার্ক।  আমি যেটা বললাম, সিনিয় জুনিয়র অভিজ্ঞ অনভিজ্ঞ এসবের আসলে মানে নেই।’


    তবে সাকিব নিজে থেকে বলেননি, জুনিয়র হয়েও সিনিয়রের দায়িত্ব একটা পালন করতে হয়েছে। ধীরে ধীরে সিনিয়র হয়েছেন, তবে বোলিংয়ের জোয়াল বলতে গেলে বইতে হয়েছে একাই। ২০০৭ সালে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাকিব নিয়েছেন ১৭৬ উইকেট। এই সময়ে তাঁর পর যিনি আছেন, সেই শাহাদাত হোসেনের উইকেট সংখ্যা সাকিবের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ (৫৬টি)।

    তবে পরিসংখ্যান এও বলছে, গত দুই বছরে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলেছে। বিশেষ করে গত বছর ইংল্যান্ডের সঙ্গে মিরাজের অভিষেকের পর এই তরুণ অফ স্পিনারই নিয়েছেন সবচেয়ে বেশি উইকেট (৩৫টি)। ২৯টি উইকেট নিয়ে এর পরেই সাকিব। তবে সাকিবের মনে হয়তো প্রচ্ছন্নভাবে কাঁটা হয়ে আছে, গত ২২টি ইনিংসে মাত্র একবার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।

    তারপরও এটাও ঠিক, পরিসংখ্যান দিয়ে সবকিছু মাপা যায় না। সাকিব নিজেও মনে করিয়ে দিলেন, ‘উইকেট পাওয়াটা নিজের হাতেও থাকে না। হয়তো এক দিন আপনি অনেক ভালো বোলিং করবেন, কিন্তু উইকেট পাবে অন্য কেউ। আবার এক দিন খারাপ বল করেও উইকেট পেয়ে যাবেন।’

    অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সিরিজে তাই উইকেটের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকতে হবে, এমন দিব্যি দিচ্ছেন না সাকিব। বরং বলটা ঠক জায়গায় ফে,লতে চান, আর অন্য পাশ থেকে চান চাপটা ধরে রাখা, বোলিংটা অনেকটা জুটির ব্যাপার। জোড়া বাঁধার ব্যাপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দুই দিক থেকেই দরকার ব্যাপারটা। এক পাশ থেকে ভালো করলে অন্য পাশ থেকে রান দিয়ে দিলে চাপ থাকে না। ’

    সেজন্য স্পিনারদের পাশাপাশি পেসারদের ভূমিকাও বড় করে দেখছেন। কলম্বোর পি সারা ওভালে যেমন মুস্তাফিজের দুর্দান্ত স্পেলটাই ব্যবধান গড়ে দিয়েছিল। সাকিব নিজেও এবার চাইছেন এমন কিছু, ‘আমার কাছে মনে হয় আমাদের ফাস্ট বোলাররা ম্যাচ জেতানোর জন্য সমান কার্যকরী হতে পারে। এখানে শুধু আমরা স্পিনারদের ওপর ম্যাচ জেতানোর ভরসা করে বসে থাকি। সেটা আসলে চলবে না। হয়তো একটা সময় আসবে একটা পেস বোলার এসে একটা বড় জুটি ভেঙে ব্রেক থ্রু দেবে, সেটা একটা স্পিনারের চার পাঁচ উইকেট পাওয়ার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।’

    অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কাজগুলো সহজ হবে না, সাকিব জানেন। অসিরা যে কোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন। এতকিছুর পরও সিরিজের ফল বাংলাদেশের পক্ষে না সার কারণ দেখছেন না কোনো, আমার তো মনে হয় সম্ভব (বাংলাদেশের সিরিজ জয়)। এটা না হওয়ার কোনো কারণ দেখিনা। প্রত্যাশা দুই টেস্ট জেতা।’

    সাকিব বলেই বোধ হয় এমন অকপট আত্মবিশ্বাস!