'কার উইকেট পেলাম, তাতে কিছু যায় আসে না'
স্পিন, স্পিন, স্পিন। বাতাসের ঘূর্ণিতে গোত্তা খাচ্ছে যেন শুধু ওই একটিই শব্দ। বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দুই টেস্টের সিরিজের অন্যতম বড় একটা ভূমিকা থাকবে স্পিনের, সবার ধারণা এমনই। এমনিতে উপমহাদেশের কন্ডিশন, তার ওপর ইংল্যান্ডের সঙ্গে শেষ সিরিজের ফল বা পরিসংখ্যান সে ধারনাকে মূর্ত করে তুলছে আরও। প্রসঙ্গ যখন স্পিন, ন্যাথান লায়ন তখন প্রাসঙ্গিক। প্রসঙ্গ যখন বাংলাদেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ, লায়ন তখন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
স্টিভ স্মিথ এর আগে বলেছিলেন, স্পিনের সঙ্গে ভূমিকা থাকবে রিভার্স সুইংয়েরও। লায়ন এতোকিছু ভাবতে চান না, তার দরকার শুধু ২০ উইকেট, ‘আমাদের স্কোয়াডে তিনজন খুব ভাল পেসার আছে, জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও জ্যাকসন বার্ড। তারা বলকে ‘মুভ’ করাতে পারে এ কন্ডিশনেও। এর শ্রীলঙ্কা ও ভারতেও আমরা সেটা দেখেছি। আমার মনে হয় না, বাংলাদেশে খুব বেশি আলাদা হবে। আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে জুটি ধরে ভাল বোলিং করাটাই আসল, ২০ উইকেট নিতে। এটা আমি বনাম অন্য কেউ, এমন না। এটা দলীয় খেলা, আমরা ২০ উইকেট নেয়ার জন্যই এসেছি।’
এর আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেলে গেছে ভারতে। রোমাঞ্চকর এক সিরিজ হলেও সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে শুধু প্রথম টেস্টে পুনেতে জয় নিয়েই। তবে সব অস্ট্রেলিয়ানেরই সুরটা ঘুরেফিরে এমনই, ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান তারা। লায়নও ব্যতিক্রম নন। বাংলাদেশে ভাল করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসীও তিনি।
৬৭ টেস্ট খেলে অস্ট্রেলিয়ার এই স্কোয়াডে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার লায়নই। ওয়ার্নার খেলেছেন ৬৪ টেস্ট, স্মিথ ৫৪টি। তবে এটা ভেবে বাড়তি কোনও চাপ নিতে চাননা এ অফস্পিনার, ‘আপনারা আসলে সবাইকেই চাপ দিচ্ছেন। সব সাংবাদিকই চাপটা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমার কিংবা স্কোয়াডের অন্য কারও ওপর কোনোই চাপ নেই। এটা দলীয় খেলা, আমরা শুধু মাঠে নেমে আমাদের মূল কাজগুলো ঠিকঠাক করতে চাই। আমরা বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করতে এসেছি।’
আলাদা করে কোনও ব্যাটসম্যানকে চ্যালেঞ্জ জানানোরও ইচ্ছা নেই তার, ‘১ থেকে ১১, যে যেখানেই ব্যাট করুক, কার উইকেট পেলাম, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি শুধু জুটি ধরে ভাল বোলিং করতে চাই, এ আক্রমণ দিয়ে ২০ উইকেট নিতে চাই।’
নিজে একসময় অ্যাডিলেড ওভালে কিউরেটরের কাজ করেছেন, উইকেট সম্বন্ধে তার একটু হলেও বাড়তি ধারণা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে মিরপুর নিয়ে বাড়তি কিছু ধারণা নেই তার, ‘সাত বছর হয়ে গেল আমি কিউরেটরের কাজ নিয়ে কোনও পড়াশুনা করিনি, কাজ করিনিও। এটা আরেকটা উইকেট, দুই দলের জন্য একই থাকবে। আমি বলতে পারি, টসে যে দলই জিতুক, ব্যাটিং নেবে। উপমহাদেশে এটা সাধারণ একটা ব্যাপার। কন্ডিশনের সঙ্গে আমাদের দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’
অফস্পিনার বলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বাড়তি সুবিধা পাবেন, সেক্ষেত্রে স্লিপকে থাকতে হবে তটস্থ। আর ডানহাতিদের বিপক্ষে লায়নের টোটকা, স্টাম্প টু স্টাম্প বল করা।