• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    সামনে এবার অস্ট্রেলিয়া

    সামনে এবার অস্ট্রেলিয়া    

    কবে, কখন 
    ২৭-৩১ আগস্ট
    শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম, মিরপুর, ঢাকা 
    সকাল ১০.০০টা 


    ১১ বছর আগে আপনি কী করতেন? 

    আচ্ছা, আপনার কথা থাক। ১১ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া বা বাংলাদেশের এ স্কোয়াডের ক্রিকেটাররা কী করতেন? ক্রিকেটই খেলতেন হয়তো, তবে আন্তর্জাতিক নয়। ১১ বছর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের টেস্ট অভিষেক হয়নি, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে হয়েছে মোটে দুইটি টেস্ট। ১১ বছর খুব অল্প সময় নয়, ক্রিকেটে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিরতিটা তো লম্বাই। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ যখন আবার টেস্ট খেলতে নামছে কাল, ১১ সংখ্যাটা তাই ঘুরেফিরে আসছে। ২০০৬ সালে দুই দলের মধ্যে শেষ টেস্ট সিরিজ হয়েছিল। 

    অবশ্য এর মাঝে অন্তত বার চারেক হওয়ার কথা ছিল এ সিরিজ। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া খেলেনি অলিম্পিকের সঙ্গে সূচি সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে বলে, ২০১০ সালেও সেটা হয়নি।  ২০১১ সালে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার কথা থাকলেও শুধু তিন ওয়ানডে খেলেই ফিরে গেছে তারা। ২০১৫ সালে শেষ মুহুর্তে সরকারের পরামর্শে সফর বাতিল করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২০১৬ সালে পঞ্চমবারের ‘চেষ্টা’ও বিফলে যেতে ধরেছিল, ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে ক্রিকেটারদের দরকষাকষির ঝামেলা বাগড়া বাধিয়েছিল। অবশেষে অস্ট্রেলিয়া এসেছে, সঙ্গে এসেছে ১১ বছর আগের স্মৃতিও। 

    যে সিরিজে আলো ছড়িয়েছিলেন শাহরিয়ার নাফিস, যে সিরিজে ফতুল্লায় জিততে ধরেছিল বাংলাদেশ। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাদের, পরের টেস্টেও অবশ্য দুই দলের পার্থক্যটা ধরা পড়েছিল সুস্পষ্ট হয়ে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েছিলেন জ্যাসন গিলেস্পি। 

    গিলেস্পি-পন্টিং-নাফিসরা নেই। আছে এক নতুন বাংলাদেশ, আছে এক নতুন অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাটিতে ওয়ানডেতে অসাধারণ বাংলাদেশ অপেক্ষায় টেস্টেও সেরকম কিছু হয়ে ওঠার। আর এশিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার পারফরম্যান্সটা বদলে নেয়ার আশা তাদের। ভারতের সঙ্গে শেষ সিরিজটা তাদের আশা জোগাচ্ছে, যে সিরিজ হারলেও তাদের জন্য যেটা ছিল অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। আর দেশের মাটির শেষ সিরিজটা আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রাখবে বাংলাদেশকে। ইংল্যান্ডকে প্রথমবার হারানো টেস্ট, আর প্রথমবার ড্র করার সিরিজ। 

    মিরপুরে প্রথম টেস্টটা তাই হতে পারে ইতিহাসের পালাবদলের নতুন এক সূচনা। আর হ্যাঁ। কালকের পর থেকে ওই ‘১১ বছর’ ব্যবধানটাও হয়ে পড়বে অর্থহীন। নতুন শুরু হবে যে কাল!

     

    রঙ্গমঞ্চ

    মিরপুর, বাংলাদেশের হোম অফ ক্রিকেট। তবে এবারের মিরপুর একটু আলাদা, প্রায় নস মাস পর মিরপুরে ফিরছে ক্রিকেট। মাঠের ঘাসের আস্তরণ পুরোটা বদল করা হয়েছে, তবে এখনও আগের রুপ ফিরে পায়নি সেটা। উইকেট অবশ্য আগেরগুলোই রাখা হয়েছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচের চেয়ে উইকেট অবশ্য একটু আলাদাই হবে, সঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাসও আছে পাঁচদিন ধরেই। যতোকিছুই হোক, উইকেটে দ্বিতীয় দিন থেকেই আশা করা হচ্ছে স্পিনের। 


    যাদের ওপর চোখ 

    মেহেদী হাসান 
    ইংল্যান্ডের সঙ্গে স্বপ্নের সিরিজ কাটিয়েছেন, ছিলেন মিরপুর টেস্ট জয়ের অন্যতম নায়ক। উইকেট থেকে কেমন সুবিধা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আদায় করতে পারেন এ অফস্পিনার, দেখার বিষয় সেটাও। 

    অ্যাশটন অ্যাগার 
    চার বছর পর টেস্ট দলে ফিরছেন বাঁহাতি স্পিনার। ভারত সফরের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া স্টিভ ও’কিফের জায়গায় এসেছেন, ভারতের পুনে টেস্ট জয়ে অন্যতম বড় ভূমিকা ছিল যার। ন্যাথান লায়নের সঙ্গে তাই চোখ থাকবে অ্যাগারের ওপরও। 


    সংখ্যার খেলা 

    • দুজনের অভিষেকে আগে পরে হলেও মিরপুরে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল একসঙ্গেই খেলতে নামছেন ৫০তম টেস্ট। এর বাংলাদেশের হয়ে এ মাইলফলক ছুঁয়েছেন হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম। 
    • আর ৩টি উইকেট হলেই ৮ম অস্ট্রেলিয়ান বোলার হিসেবে টেস্টে ২৫০ উইকেট হবে ন্যাথান লায়নের। সঙ্গে রিচি বেনোকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও হবেন তিনি। 
    • অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডের কারও বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও আছে কোচ ড্যারেন লেম্যানের। বাংলাদেশের সঙ্গে দুইটি টেস্টে দুই ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, দুইটিতেই করেছিলেন সেঞ্চুরি।