কথা নয়, বোঝাপড়াই সাকিব-তামিমের 'রহস্য'
তিন উইকেট নিয়ে রিচি বেনোকে ছাড়িয়ে গেছেন, তারপরও নাথান লায়ন যেন সাকিব-তামিমে আচ্ছন্ন। শুরুতেই একবার বললেন, 'ওরা দুজন বেশ সাহসী ব্যাটিং করেছে'। পরে আরেকবার বললেন, 'ওরাই আসলে শুরুতে আমাদের ওপর চড়ে বসেছিল।' দিনটা যে অস্ট্রেলিয়ার হলো না, সেই কৃতিত্ব এই দুজনকেই দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার। অথচ সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান এসে বলে গেলেন, ওই সময় দুজনের মধ্যে নাকি কথাই হয়নি!
এই তো কদিন আগেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে সাকিবের মহাকাব্যিক জুটিতেই এসেছিল জয়। ওই সময়ই বলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সেভাবে কথা হয়নি। আজকের পরিস্থিতিও ছিল সেদিনের মতো পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ার মতো। ১০ রানে ৩ উইকেট নেই, কামিন্স তোপ দাগছেন। ওপাশে বল টার্ন করাতে শুরু করেছেন লায়নরা। শুরুতে একটু সংযত থাকলেও একটু পরেই পাল্টা আক্রমণে গেলেন সাকিব-তামিম। দুজনের ৫০তম টেস্টে ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো শতরানের জুটিটাও হয়ে গেল।
একটু অবাকই হতে পারেন, প্রায় এক দশকের কাছাকাছি খেলার পরও সাকিব-তামিমের মাত্র দুইটি শতরানের জুটি। ব্যাটিং পজিশনের কারণে দুজনের সেই জুটি বাঁধার সৌভাগ্য কমই হয়। এবারের জুটিটা যেতে পারত আরও অনেকদূর। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের বলে অনেকটা খেলার ধারার উল্টো দিকেই আউট হয়ে গেছেন তামিম। পরে সাকিবও লায়নকে উপহার দিয়ে এসেছেন। তামিম অবশ্য লায়নের বলে বেশি চড়াও ছিলেন, তিনটি ছক্কাই মেরেছেন তাঁকে। সাকিবের অবশ্য আউট হওয়া নিয়ে আক্ষেপ নেই, 'দুঃখজনকভাবে দুটো বল লাফিয়ে উঠেছিলো। ওই জন্যই আমাদের উইকেটটা হারাই। তবে আক্ষেপ আসলে নেই।'
কিন্তু আসলে কী কথা বলেছিলেন দুজন? সাকিব জানাচ্ছেন, এতোদিন থেকে একসঙ্গে খেলাটাই অনেক কিছু সহজ করে দিয়েছে, 'ওভাবে কথা হয় না তো। যতক্ষণ সম্ভব শুধু ব্যাটিং করতে থাকা। আমাদের জন্য কাজটা সহজ ছিলো। কারণ অনেক দিন একসঙ্গে খেলেছি। আমাদের মধ্যো বোঝাপড়ার অভাব আছে, এমনও নয় ব্যাপারটা। দুজনেরই ৫০ টেস্ট হচ্ছে। বোঝাপড়া নিয়ে শঙ্কা থাকার কথা নয়।'
তবে নিজেদের পঞ্চাশতম টেস্টেই দুজনের পঞ্চাশ ছাড়ানো ঘটনা কিন্তু প্রথম নয়। ২০১০ হ্যামিল্টন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাইমন ক্যাটিচ ও মাইক হাসি দুজনেই জুটি বেঁধেছিলেন। কী কাকতালীয়, সাকিব-তামিমের মতো সেটি ছিল ঠিক ১৫৫ রানের! তার চেয়েও বড় কথা, দুজনেরই ছিল পঞ্চাশতম টেস্ট। তবে বাকি তিনজনের সঙ্গে ক্যাটিচের পার্থক্য, সেঞ্চুরিটা তিনি ঠিকই পেয়েছিলেন। কাছাকাছি গিয়েও সাকিবের যা পাওয়া হয়নি। দিন শেষে অবশ্য সেই দুঃখ খুব একটা মনে রাখবেন না। ব্যাটে বলে এই টেস্টে তো আরও অনেক কিছুই দেওয়ার আছে তাঁর!