• বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : দুই-এর জয়জয়কার

    ২২ গজের সেলুলয়েড : দুই-এর জয়জয়কার    

    হঠাৎ আগত দুই 

    দুজনের কেউই স্কোয়াডে ছিলেন না। মুমিনুল হককে নিয়ে রীতিমতো ঝড় বয়ে গিয়েছিল সংবাদ সম্মেলনে, মোসাদ্দেকের চোখে সমস্যার কারণে দলে এসেছিলেন ২৪ ঘন্টার ব্যবধানেই। স্টিভ ও’কিফকে বাদ দেয়ার পেছনের কারণ হিসেবে স্টিভ স্মিথ বলেছিলেন চার বছর পর ভারত সফরের কথা। জশ হ্যাজলউডের চোটের কারণে উড়িয়ে আনা হলো ও’কিফকেই। স্কোয়াডে হঠাৎ আগত দুই ক্রিকেটার নেমেও গেলেন দ্বিতীয় টেস্টে। মুমিনুল ব্যাট হাতে ৩১ রান করার পর ছাড়লেন ওয়ার্নারের ‘কঠিন’ একটা ক্যাচ, ও’কিফ ২৩ ওভারে ৭৯ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেটশূন্য। দুইজন কি দ্বিতীয় ইনিংসে পারবেন অন্যরকম কিছু করে দেখাতে? 

     

    আলো-ছায়ার ব্যাটিং 

    খেলা শুরুর আগে স্পাইক নিয়ে পিচে ওঠা নিষেধ, ডেভিড ওয়ার্নার গতকাল সকালে তাই শ্যাডো করেছিলেন খালি পায়ে। কাল ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। আজ ততক্ষণে মুশফিক আউট হয়েছেন। আর তিন উইকেট পরই নামবেন ওয়ার্নার, প্রত্যেক ওভার শেষেই প্রায় এসে শ্যাডো করছিলেন। একবার তিনি, একবার স্মিথ। ক্রিকেট মনোজগতের খেলা, সেটাই যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন তারা। তা তাদের শ্যাডো কাজে লাগলো বটে। স্মিথ পেলেন সিরিজের প্রথম ফিফটি, আ টানা দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে ১২ রান দূরে দাঁড়িয়ে ওয়ার্নার। এর আগেই অবশ্য করেছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির ফিফটিটা। 

     

     

    তিনে দারুণ স্মিথ
     
    ভারতের সঙ্গে সিরিজে খেলেছিলেন তিন নম্বরেই। ‘দলের সেরা ব্যাটসম্যান তিনে খেলেন’, বহুল প্রচলিত প্রবাদটার সপক্ষেই কথা বলে স্মিথের পরিসংখ্যান। ১০৩ ইনিংসের মাঝে ২৮ বার ব্যাটিং করেছেন তিনে, সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৮টি। মানে মাত্র ২৮ শতাংশ ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৪০ শতাংশ। ক্যারিয়ার গড় যেখানে ৬০.১৫, তিন নম্বরে গড় ৬৯.১২ (আজকের ইনিংসের পর)। প্রথম টেস্টে উসমান খাওয়াজা তিনে খেলেছিলেন, এই টেস্টে তার বদলে দলে নেয়া হয়েছে অলরাউন্ডার হিলটন কার্টরাইটকে। স্মিথ তাই তিনে উঠে এলেন, তিনে তার পরিসংখ্যানের সপক্ষে কথা বললেন আরেকবার। 

     

    মেইডেন দিয়ে সেশন শুরু (শেষটি ছাড়া)
     
    দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ওভার, মেইডেন। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভার (আংশিক), মেইডেন উইকেট। তৃতীয় সেশনের প্রথম ওভার, ৬ রান। 
    দ্বিতীয় দিন, প্রথম সেশন, প্রথম ওভার, মেইডেন। দ্বিতীয় সেশন, প্রথম ওভার, মেইডেন। তৃতীয় সেশন, প্রথম ওভার, ৫ রান। 
    প্রথম দিনের শেশ সেশনে লড়াইয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া। ‘সেশন শুরু মেইডেন দিয়ে’ নীতি যেন প্রমাণ করছে অনেক কিছু! 

     

    দুই-এর খেল, গরমে ‘হেল’ 

    এ ইনিংসেই ওয়ার্নারের এটি দ্বিতীয় হেলমেট। হেলমেট বদলালেন, ভাগ্যের চাকা থাকলো একই রকম। দ্বিতীয়বার জীবন পেলেন। সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, এশিয়ার মাটিতে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এখন হাতছোঁয়া দূরত্বে। স্মিথের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গড়লেন সিরিজের সর্বোচ্চ রানের জুটি। সে জুটিকে অবশ্য ছাড়িয়ে গেল তিন নম্বরে হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে জুটি। সেই হ্যান্ডসকম্ব, মাঠে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে যাকে ওষুধ নিতে হলো। প্রথমে আম্পায়ার ইয়ান গৌল্ড ওষুধ খেয়েছিলেন, হতে পারে অ্যাসপিরিন, হতে পারে পানিশূন্যতার জন্য। ওষুধ নিতে হলো হ্যান্ডসকম্বকেও, দিনটা শেষ করলেন অস্বস্তিতে। চট্টগ্রামের গরম কাবুই করে ফেলেছিল তাকে। তবে দিনশেষে যে স্বস্তিতে অস্ট্রেলিয়া, তাতে তো অবদান তার ওই ‘অস্বস্তিকর’ ইনিংসেরও!