২২ গজের সেলুলয়েড : ওয়েড এলবিডাব্লিউ ব রিভিউ
ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম
ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্বের জুটি ভাঙছে না, মুশফিক বোলিংয়ে আনলেন নাসিরকে। যদি উইকেট পেয়ে যান, নাসিরকে বলা হবে, ‘ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম’। উইকেট পড়লো সে ওভারে, শুধু নাসিরই পেলেন না সেটা। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে একটা সিঙ্গেলের জন্য হাপিত্যেশ করছিলেন ওয়ার্নার, হ্যান্ডসকম্ব তার চাপ কমাতেই কিনা নিজের ওপর চাপ নিয়ে দিলেন দৌড়। ওয়ার্নারের ‘না’ শুনে যতক্ষণে ফিরে এলেন, ডাইভ দিলেন, শর্ট মিডউইকেট থেকে করা সাকিবের থ্রো ভেঙ্গে দিয়েছে স্টাম্প। সাকিব, ‘ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম’ তো তাকেই বলে!
বল করতে মানা
চা-বিরতির পর বোলিং করবেন, আম্পায়ার ইয়ান গৌল্ডকে ক্যাপ দিলেন, চশমা দিলেন। সাকিবকে খানিকবাদেই সেসব ফিরিয়ে দিলেন গৌল্ড। বিরতির আগে মিনিট চারেক মাঠে ছিলেন না, বোলিং করতে হলে সে সময়টা আগে ফিল্ডিং করে পুষিয়ে দেয়ার নিয়ম। টেলিভিশন আম্পায়ার আলিম দার গৌল্ডকে এ তথ্যই পাঠিয়েছিলেন, সাকিবের সে ওভারে বোলিং নাকচ সে কারণেই। পরে আবার একইভাবে ক্যাপ চশমা জমা দিয়েও ফিরিয়ে নিতে হয়েছে সাকিবকে, গৌল্ডের কাছ থেকেই। এবার অবশ্য নিয়মের বাধ্যবাধকতা নয়, শেষ মুহুর্তে মত বদলিয়ে তাইজুলকে এনেছিলেন মুশফিক।
‘হ্যালো, আম্প’!
প্রথম সাকিবের সরাসরি থ্রো-তে ভেঙ্গে গেল স্টাম্প, হ্যান্ডসকম্বের বিপক্ষে বাংলাদেশের রান-আউটের আবেদন টেলিভিশন আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হলো। বোলার নাসির অবশ্য নিশ্চিতই ছিলেন আউটের ব্যাপারে, গোত্তা খাওয়া স্টাম্প থেকে গা বাঁচিয়েই দেখিয়ে দিলেন, ‘আউট’! নাসির এরপর অবশ্য একাই নয়, আউট দিলেন নাইজেল লংয়ের সঙ্গে। প্যাট কামিন্স শট না খেলে প্যাড-আপ করেছিলেন, লং দেননি আউট। মুশফিক রিভিউ নিলেন, সিদ্ধান্ত বদলাতে হলো লংকে। একটু গড়বড় করে ফেললেন অবশ্য, প্রথমে দিচ্ছিলেন রিভিউ নাকচের সঙ্কেত। পাশে দাঁড়িয়ে নাসিরও সেটাই অনুকরণ করলেন। লং এরপর সিদ্ধান্ত বদলানোর সঙ্কেত দিলেন, নাসির দিলেন লংয়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘আউট’।
উধাও ম্যাক্সি
ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচটা সহজই ছিল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। মেহেদি ফেলে দিলেন সেটাই। আরেকজন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান পেলেন দ্বিতীয় জীবনের স্বাদ। মেহেদির এটিই প্রথম মিস নয়, কার্টরাইটের ফিরতি ক্যাচটা নিতে গিয়ে তো আঘাতও পেলেন পাঁজরে। সেবা-শুশ্রুষা চলছে মেহেদির, নিজে অফস্পিনার ছিলেন আম্পায়ার লং, এসে খোঁজ খবর নিচ্ছেন তিনিও। উঠে দাঁড়ালেন মেহেদি, তারপরই দেখা গেল, মাঠে নেই ম্যাক্সওয়েল! ততক্ষণে তিনি ড্রেসিংরুমের সিঁড়িতে। সেই মেহেদিই পরে বোলিং করতে এসে আউট করলেন ম্যাক্সওয়েলকে, আগেরদিন ওয়ার্নারের স্টাম্পিং মিস করা মুশফিক নিলেন নীচু হওয়া দারুণ এক ক্যাচ। মেহেদির দায়মোচন হলো, সঙ্গে হয়তো মুশফিকেরও খানিকটা! আর এবার ক্রিজ থেকে পাকাপাকিভাবেই উধাও হয়ে গেলেন ম্যাক্সি!
ওয়েড এলবিডাব্লিউ ব রিভিউ
প্রথমবার এলবিডাব্লিউ হলেন, বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই রিভিউ না নিয়ে উঠে গেলেন ম্যাথু ওয়েড। অথচ বল ট্র্যাকিং দেখাচ্ছিল, মেহেদির বলটা মিস করে যেতো স্টাম্প, রিভিউ নিলেই বাঁচতেন ওয়েড। দ্বিতীয় ইনিংসেও হলেন এলবিডাব্লিউ, এবার হন্তারক সাকিব। ওয়েড রিভিউ নিলেন, কাজের কাজ কিছুই হলো না। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, ওয়েড নাকি হ্যান্ডসকম্ব কিপার, সব প্রশ্নের উত্তর জানা হয়ে গেছে। সিরিজের সর্বোচ্চ রান করলেন ওয়েড, তবে বদলালো না এলবিডাব্লিউ ভাগ্য। এবার স্পিনারের বদলে শিকার হলেন পেসার মুস্তাফিজের। রিভিউ নিলেন, বদলালো না রিভিউ ভাগ্যটাও!