• বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
  • " />

     

    সেই কলম্বোকে মনে করালেন আমলা-ডু প্লেসি

    সেই কলম্বোকে মনে করালেন আমলা-ডু প্লেসি    

    ১ম দিন শেষে

    দক্ষিণ আফ্রিকা ৯০ ওভারে ৪২৮/৩ (মার্করাম ১৪৩, এলগার ১১৩, আমলা ৮৯*, ডু প্লেসি ৬২*, শুভাশীষ ২/৮৫, রুবেল ১/৯১)


     শেষ বিকেলের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু দিন শেষে সেটা হয়ে বরে শাপের মতো। যে সেশনটা বাংলাদেশের জন্য হতে পারত মনে রাখার মতো, সেটিই দুঃস্বপ্নের বানিয়ে ফেললেন হাশিম আমলা ও ফাফ ডু প্লেসি। প্রথম দিন শেষে যে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪২৮ করে ফেলেছে, সেটার বড় কুশীলব তো দুজনেই।

     

    প্রশ্ন করতেই পারেন, টেস্টে বাংলাদেশের এমন খারাপ প্রথম দিন কি আদৌ হয়েছে? বাংলাদেশের সঙ্গে এক দিনে ৫০০রও বেশি রান হয়েছে, তবে প্রথম দিনে বোলাররা এর চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন মাত্র এক বার। ২০০৫ সালে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৪৯ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা।

    আজও শুরু থেকেই রানের চাকাটা ছিল সচল। শেষ সেশনে আধুনিক যুগের ওয়ানডের কাছাকাছিই ছিল রানের গড়। শেষ সেশনে ১৭২ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওভারপ্রতি সাড়ে পাঁচের কাছাকাছি। আমলা-ডু প্লেসি দুজনেই পাচ্ছেন সেঞ্চুরির সুবাস।

     

    অথচ সেশনের শুরুটা কী দারুণই না হয়েছিল। চা বিরতির পরেই বাংলাদেশের পেসাররা পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করেই পেলেন সাফল্য। টানা কয়েকটি শর্ট বল দেওয়ার পর রুবেল ১৪০ কিলোমিটার গতির একটা ফুললেংথ বল করলেন। যেটি অনুমান করতে না পেরে উড়ে গেল মার্করামের স্টাম্প। বাভুমা টিকলেন না বেশিক্ষণ। শুভাশীষের শর্ট বলের পর অফ স্টাম্পের বাইরে করা একটা বলে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে। ২৮৮ রানে তখন ৩ উইকেট হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে।

    এরপরেই মুস্তাফিজের শর্ট বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন ডু প্লেসি। বলের কাছাকাছি গিয়েও সেটি হাতে নিতে পারলেন না শুভাশীষ। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক তখন দুই অঙ্কও পেরুননি। কিন্তু এরপর আর কোনো সুযোগই দেননি, আমলার সঙ্গে ১৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিনটা করে নিয়েছেন নিজেদের।

     

    বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল বরাবরের মতোই দুঃস্বপ্নের।  শুধু একাদশটা বদল হলো, মাঠটা পচেফস্ট্রুম থেকে সরে এলো ব্লুমফন্টেইনে। কিন্তু অন্য সব কিছুই যেন ঠিক প্রথম টেস্টের চিত্রনাট্যই। টসে জিতে আবারও বোলিং নিলেন, মুশফিক, আবারও তাঁকে খোঁচা মারলেন ফাফ ডু প্লেসি। আবারও বাংলাদেশের বোলাররা নখদন্তহীন, দুই ওপেনার মিলে রানের পাহাড় গড়ার অর্ধেক কাজ সেরে রাখলেন। পার্থক্য শুধু একটাই, এবার আর প্রথম টেস্টের মতো সেঞ্চুরি মিস করেননি এইডেন মার্করাম।

    একটা সময় মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় সেশনেও বোধ হয় উইকেটহীন কাটিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশকে। এলগার-মার্করাম অনায়াস রান তুলছিলেন, আউট হওয়ার কোনো লক্ষণই ছিল না। দুজনই সেঞ্চুরি করলেন, টসে হেরে ওপেনিংয়ে সবচেয়ে বেশি রানের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটিও হয়ে গেল। এর পরেই এলগার একটা সুযোগ দিলেন, ৪৯তম ওভারের শেষ বলে মুস্তাফিজকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন উইকেটের পেছনে। লিটন-সৌম্য দুজন মিলে চেষ্টা করেও একটুর জন্য ক্যাচটা জমাতে পারেননি হাতে।

    সেই এলগার ১১৩ রান করে ফিরলেন চার ওভার পর, পুল করতে গিয়েই। শুভাশীষের শর্ট বলে ক্যাচ তুলে দিলেন ফাইন লেগে, ফাইন লেগে বেশ কিছুটা এগিয়ে এসে ভালো একটা ক্যাচ নিয়েছেন মুস্তাফিজ।

    দিন শেষে এমন সুযোগ মাত্র তিন বারই পেয়েছে বাংলাদেশ। পচেফস্ট্রুমের প্রথম দিনে সেই সুযোগ অবশ্য একবারই পেয়েছিল। কিন্তু এবার রানটা অনেক বেশিই দ্রুত তুলেছে  আফ্রিকা। প্রথম দিনে ৪০০ হয়ে যাওয়া উইকেটে ব্যাটিং না করার মুশফিকের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে আরেক বার। চোটের জন্য মাঠে নামেননি ইমরুল কায়েসও, বাংলাদেশের মড়ার ওপর খাড়ার ঘাঁ এর চেয়ে আর বেশি ভোগাতে পারত না।