অবশেষে চোটের কাছে হার মানলেন নেহরা
ক্রিস গেইল, রঙ্গনা হেরাথ, শোয়েব মালিক, হরভজান সিংয়ের সঙ্গে তিনিও ছিলেন সেই তালিকায়। ২০০০ সালের আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক হওয়া সেই আশীষ নেহরা এবার বিদায় বলছেন সব ধরনের ক্রিকেটকেই। আসছে নভেম্বরের ১ তারিখ তার ঘরের মাঠ ফিরোজ শাহ কোটলাতেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে অবসর নেবেন তিনি। একই সঙ্গে বিদায় বলবেন ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও।
প্রায় পুরোটা ক্যারিয়ার জুড়েই চোটের সঙ্গে লড়াই চলেছে ভারতীয় পেসারের। এতো বছরের ক্যারিয়ারে তাই ১৭টি টেস্ট, ১২০টি ওয়ানডে ও ২৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় ১২বার তাকে যেতে হয়েছে শল্যবিদের ছুরির নিচে। নেহরা একসময় মজা করে বলতেন, তার শরীরে আসলে চোট নেই, চোটের মাঝেই শরীরটা আছে!
১৯৯৯ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল নেহরার। শেষ টেস্টটি খেলেছেন সেই ২০০৪ সালে। ২০০৩ সালে ভারতের মতো নেহরার বিশ্বকাপটাও কেটেছিল দারুণ, অবশ্যই ফাইনালটা বাদ দিয়ে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে সে টুর্নামেন্টের ৩০তম ম্যাচে ২৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন, বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোনও ভারতীয় বোলারের সেরা পারফরম্যান্স এটাই।
চোটের সঙ্গে নিত্যলড়াই চলছিলই, ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলতে পারেননি নেহরা। ২০১১ বিশ্বকাপের আগে দলে ফিরেছিলেন, ফিরেই জিতেছেন দেশের মাটির সে টুর্নামেন্ট। নেহরা ফিরেছিলেন ২০১৬ সালের ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির আগেও। ভারতকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাওয়া বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে তো ছিলেন এই অভিজ্ঞ পেসারই।
তবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে ডাক পাননি। নেহরার কাছে তাই মনে হচ্ছে, চোটগ্রস্ত শরীরকে মুক্তি দেওয়ার এটিই উপযুক্ত সময়। তবে কোনও এক শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে নেহরা আবার বিছানা থেকে চট করে নামতে পারবেন না ভঙ্গুর হাঁটুজোড়ার কারণে। আধাঘন্টার মতো সময় লাগে তার উঠে দাঁড়াতে, নিজেকে সে সময় সাধারণত নতুন করে অনুপ্রাণিত করতেন ক্রিকেট খেলতে।
সেই আধাঘন্টার মতো রুটিনটা একই থাকবে, নেহরা হয়তো নিজেকে নিজেই প্রেরণা দেবেন উঠে দাঁড়াতে। শুধু খেলবেন না ক্রিকেটটাই!
যুগের সাক্ষী হওয়া ক্রিকেটারদের সেই ছোট্ট তালিকাটাও তাই ছোট হয়ে আসছে আরেকটু।