লাকমালদের কাছে অসহায় ভারতের ব্যাটিং
ভারত ১১২ অল-আউট, ৩৮.২ ওভার (ধোনি ৬৫, কুলদিপ ১৯, লাকমাল ৪/১৩, ফার্নান্ডো ২/৩৭)
শ্রীলঙ্কা ১১৪/৩, ২০.৪ ওভার (থারাঙ্গা ৪৯, ডিকভেলা ২৬, বুমরাহ ১/৩২)
ফল : শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী
টেস্ট সিরিজে এই বোলিং লাইন-আপটাকে মনে হয়েছে নিরীহ, করে নাকো ফোঁসফাঁস ধরনের। ব্যতিক্রম ছিল বৃষ্টিবিঘ্নিত কলকাতা টেস্ট। সেখানে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও কন্ডিশন ছিল পেসবান্ধব, সুরাঙ্গা লাকমালরা সে সুযোগটা কাজে লাগিয়েছিলেন। ধরমশালায় ওয়ানডে সিরিজের শুরুতেই সে কন্ডিশনটা তারা ফিরে পেলেন। ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপে এক এমএস ধোনি ছাড়া প্রায় পুরোটাই রীতিমত তাদের সুইং-সিমের কবলে পড়ে হলো দিশেহারা, ৭ উইকেটে জিতে শ্রীলঙ্কার ১২ ম্যাচ ধরে চলা জয়খরাটাও কাটলো।
লাকমালের ১০-৪-১৩-৪ বোলিং ফিগারটা ভারতকে বানিয়েছিল ২৯ রানে ৭ উইকেটের স্কোরে। সেখান থেকে ভারত যে ৩৮.২ ওভার খেলেছে, স্কোর ছাড়িয়েছে ১০০, তার পেছনে অবদান একজনেরই। এমএস ধোনি। এমন কন্ডিশনে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়, নিজের উইকেটের মূল্য রাখতে হয়, সতীর্থদের যেন সেটাই দেখিয়েছেন তিনি।
ভেতরের দিকে সুইংয়ে এলবিডাব্লিউ শিখর ধাওয়ান, ম্যাথিউসের বলে। আর রোহিত শর্মা আউটসুইংয়ে ক্যাচ দিয়েছেন নিরোশান ডিকভেলার হাতে, লাকমালের প্রথম শিকার হয়ে। দুইটি উইকেটই অবশ্য রিভিউ নিয়ে পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। দীনেশ কার্তিকও এলবিডাব্লিউ হয়েছেন লাকমালের হুট করে ঢুকে যাওয়া বলে, শেষ হয়েছে তার ১৮ বলের সংগ্রাম। রিভিউ নিতে চেয়েছিলেন, তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছিল তার। পরের উইকেট নিতে অবশ্য দেরি হয়নি শ্রীলঙ্কার। লাকমালের তৃতীয় শিকার মনীশ পান্ডে, প্রদীপের বলে এরপর বোল্ড শ্রেয়াস আইয়ার। হারদিক পান্ডিয়াকে ফিরিয়েছেন প্রদীপ, আর ভুবনেশ্বরকে বোল্ড করে ভারতকে ২৯ রানে ৭ উইকেটের স্কোরে পৌঁছে দিয়েছেন লাকমাল।
ধোনির একলা লড়াই শুরু সেখান থেকেই। টেইল-এন্ডকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন, থিসারা পেরেরাকে স্লাইস করতে গিয়ে ক্যাচ দেওয়ার আগে ভারতের রানের প্রায় ৫৯ শতাংশ রানও করে ফেলেছেন। ওয়ানডেতে ভারতের সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ডটা (৫৪ রান) নতুন করে লিখতে হয়নি তার কারণেই।
তবে যথেষ্ট হয়নি সেটাও। ভারতীয় পেসাররা মুভমেন্ট পেলেও সেটা যথেষ্ট কার্যকরী হয়নি লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে। জাসপ্রিত বুমরাহর নো বলে গালিতে ক্যাচ দিয়েছিলেন থারাঙ্গা। ৪৯ রানে তিনিই আউট হয়েছেন শেষ শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান হিসেবে। এর আগে লাহিরু থিরিমান্নের ইনসাইড-এজ ভেঙ্গেছে স্টাম্প, আর গুনাথিলাকা ক্যাচ দিয়েছিলেন ধোনিকে।
তবে বুমরাহ, পান্ডিয়া বা ভুবনেশ্বরের এসব উইকেট ভারতকে ক্ষণিকের আশাই দিয়েছিল শুধু। ম্যাথিউসের সঙ্গে ডিকভেলার অবিচ্ছিন্ন জুটি শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে গেছে জয়ের সীমানা পর্যন্ত। আজ ধরমশালায় যে ছিল শ্রীলঙ্কার দিন। তাদের জয়খরা কাটানোর দিন।