খাওয়াজা-স্মিথে নিয়ন্ত্রণ অস্ট্রেলিয়ার
৫ম টেস্ট, সিডনি
টস- ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
২য় দিনশেষে
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৪৬ (রুট ৮৩, মালান ৬২, কারান ৩৯, কামিন্স ৪/৮০, হ্যাজলউড ২/৬৫)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ১৯৩/২* (খাওয়াজা ৯১*, ওয়ার্নার ৫৬, স্মিথ ৪৪*, অ্যান্ডারসন ১/২৫, ব্রড ১/২৮)
কাল সন্ধ্যায় এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের ইনিংস। আজ সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থাকলো শান্ত, ধীর, স্থির। শুধু সন্ধ্যা কেন, শেষ সেশনের পুরোটাই অস্ট্রেলিয়া পার করেছে উইকেটশূন্য থেকে। ২০১৬ সালের নভেম্বরের পর প্রথম সেঞ্চুরি হাতছানি দিচ্ছে উসমান খাওয়াজাকে, ৯১ রানে অপরাজিত তিনি সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে, তিনি অপরাজিত ৪৪ রানে। টেইল-এন্ডের দৃঢ়তায় ৩৪৬ রান করা ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিনশেষে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে ১৫৩ রানে। তবে সিডনির উইকেট আরও অনেক রান প্রসবের আয়োজন করে রেখেছে, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার বাকি থাকা ৮ উইকেটই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা জো রুট আর তার দলের।
অস্ট্রেলিয়ার হারানো ২ উইকেটের প্রথমটি ক্যামেরন ব্যানক্রফট। স্টুয়ার্ট ব্রডের ৩৯৯তম শিকার তিনি, ব্যাট প্যাডের মাঝে যে ফাঁক রেখেছিলেন, তার ভেতর দিয়ে শুধু ব্রডের ইনসুইং না, ঢুকতে পারতো আরও বড় কিছু। ডেভিড ওয়ার্নার থেমেছেন ফিফটির পর, জিমি অ্যান্ডারসনের চিরায়ত বেরিয়ে যাওয়া বল চুমু দিয়ে গেছে তার ব্যাট। সিডনির উইকেটে টার্ন আছে, উইকেট ভাঙ্গা শুরু করলো স্পিনাররা হয়ে উঠবেন আরও কার্যকরী। তবে এদিন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে খরুচে বোলার অভিষিক্ত ম্যাসন ক্রেইন। তবে উইকেটের সম্ভাবনাও তিনিই তৈরি করেছিলেন বেশি, পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগানোর সামর্থ্য তার বেশ ভালভাবেই আছে বলে আভাস দিয়েছেন।
এই ক্রেইনকে দিয়েই শেষ হয়েছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ২৩৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। শেষ ৫ উইকেটে তারা যোগ করেছেন আরও ১১৩ রান। মইন আলি ৩০ রান করে প্যাট কামিন্সের শর্ট বলের শিকার, তার গ্লাভসে লেগে বল গেছে উইকেটকিপার টিম পেইনের কাছে। টম কারান ছিলেন আরও বেশি কার্যকরী, ৩৯ রান করে তিনিও কামিন্সের শর্ট বলেই কাবু হয়েছেন। তবে দুজনের উইকেটই অস্ট্রেলিয়া পেতে পারতো আগেই। প্রথমে কারানের সহজ ক্যাচ মিড-অনে ফেললেন কামিন্স নিজেই, লায়নের বলে। পরের ওভারে কামিন্স বোলিংয়ে এলেন, এবার হ্যাজলউড ছাড়লেন মইনের ক্যাচ, যেটা ছিল সহজের মধ্যে আরও সহজ!
তবে শুরুটা অস্ট্রেলিয়া করেছিল দারুণ এক ক্যাচে। দ্বিতীয় স্লিপে স্টিভ স্মিথ বাঁদিকে ঝুঁকে বেশ দেরিতে নিয়েছেন ডেভিড মালানের ক্যাচ, ৬২ রানের বেশি করা হয়নি তার। মইন-কারানের পর অস্ট্রেলিয়াকে ভুগিয়েছেন ব্রড, তার ৩২ বলে ৩১ রানের ইনিংসে মেরেছেন দুইটি ছয়। লায়নকে বড় শট খেলতে গিয়ে টপ-এজ হয়েছেন তিনি। তবে সেই ভোগান্তি অন্তত দিনশেষে ফিরিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
স্মিথ বা খাওয়াজার জুটি তেমন সোজাসাপটা সুযোগই দেয়নি। দুজনের জুটি ১০৭ রানের। স্মিথ ৬০০০ রানের ক্লাবে যোগ দিয়েছেন, তার লেগেছে ১১১ ইনিংস, যা গ্যারি সোবার্সের সমান। দুইজনের সামনে আছেন শুধু ডন ব্র্যাডম্যান, তার লেগেছিল ৬৮ ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়ার সামনে এখন সিডনির উইকেট থেকে রান আদায়ের পালা। আর ইংল্যান্ডের সামনে স্মিথ, তার উইকেট। আর হ্যাঁ, উসমান খাওয়াজাও!