প্রশ্ন একটাই, ৪-০ নাকি ৩-০?
৫ম টেস্ট, সিডনি
টস- ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
৪র্থ দিনশেষে
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৪৬ (রুট ৮৩, মালান ৬২, কারান ৩৯, কামিন্স ৪/৮০, হ্যাজলউড ২/৬৫) ও ২য় ইনিংস ৯৩/৪* (রুট ৪২*, লায়ন ৩১)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ৬৪৯/৭ ডিক্লে. (খাওয়াজা ১৭১, শন মার্শ ১৫৬, মিচেল মার্শ ১০১, অ্যান্ডারসন ১/৫৬, মইন ২/১৭০)
ইংল্যান্ড ২১০ রানে পিছিয়ে
১৯৩৯ সালের পর এতো তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়নি সিডনিতে। ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস! এ তাপমাত্রায় ইংলিশ বোলাররা রীতিমতো সেদ্ধ হলেন। অস্ট্রেলিয়ার মার্শ ভাতৃদ্বয় করলেন সেঞ্চুরি, এরপর ইংল্যান্ড ইনিংস শুরুর ৩০ মিনিটের মাঝেই দুই ওপেনারকে হারানোর পর হারিয়ে ফেললো আরও দুই উইকেট। সব মিলিয়ে ৪র্থ দিনশেষে ২১০ রানে পিছিয়ে তারা, জো রুট ও জনি বেইরস্টো অপরাজিত। ৫ম দিনে সিরিজে ৪-০ ফল এড়াতে তাদের সামনে সিডনির গরমে ম্যারাথন শেষ করার চেয়েও বড় কোনও কাজ তাই করতে হবে।
সিডনির গরম যে উষ্ণতাই ছড়াক, আজ সবচেয়ে বেশি উষ্ণ বোধহয় পার্থে মার্শ পরিবারে। সকালে মইন আলিকে চার মেরে সেঞ্চুরি পূরণ করলেন শন মার্শ, এরপর টম কারানের বলে ডাবলসে মিচেল মার্শ। ২০০১ সালে ওয়াহ ভাতৃদ্বয়ের পর এই প্রথম দুই ভাই একই ইনিংসে করলেন সেঞ্চুরি। সকাল থেকে জিমি অ্যান্ডারসন কঠোর পরিশ্রম করে গেলেও প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছেন টম কারান। সেঞ্চুরি পূরণের পরেই ভেতরের দিকে ঢোকা বলে বোল্ড মিচেল মার্শ। রান-আউট হওয়ার আগে শন করেছেন ১৫৬। সকালেই অ্যান্ডারসনের বলে স্লিপে ক্যাচ গেলেও বেঁচে গিয়েছিলেন, আর মিচেল পরপর দুই বলে এলবিডাব্লিউর সূক্ষ্ণ মারপ্যাঁচে বেঁচেছেন।
আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে মইনের বলে আকাশে বল তুলেছিলেন স্টার্ক, ইনিংসে ইংলিশ স্পিনারের যা দ্বিতীয় উইকেট। আরেক স্পিনার ম্যাসন ক্রেন অবশ্য হয়ে গেছেন অনাকাঙ্ক্ষিত এক রেকর্ডের ভাগিদার। অভিষেকে তার দেওয়া ১৯৩ রানই কোনও ইংলিশ বোলারের সবচেয়ে খরুচে হিসাব। টিম পেইন ও প্যাট কামিন্সকে ক্রিজে রেখেই ইনিংস ঘোষণা করেছেন স্মিথ।
৩০৩ রানের লিডের বোঝা কাঁধে চেপে বেশিদূর যেতে পারেননি ইংলিশ ওপেনাররা। প্রথমে স্টার্কের বলে এলবিডাব্লিউ স্টোনম্যান, রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি। এরপর লায়নের অসাধারণ টার্নিং ডেলিভারিতে বোল্ড কুক, মিডলে পড়ে যা আঘাত করেছে অফস্টাম্পের চূড়ায়। এর আগেই অবশ্য কুক হয়ে গেছেন ইতিহাসের ৬ষ্ঠ ব্যাটসমান, যাদের টেস্টে আছে ১২ হাজার বা এর বেশি রান। একটা জীবনও পেয়েছিলেন প্রথম স্লিপে মার্শের হাত ফসকে যাওয়া ক্যাচ দিয়ে, তবে সেটা কাজে লাগাতে পারেননি সেভাবে।
জেমস ভিনস আরেকবার দেখিয়েছেন তার পুরোনো রুপ। তিনি যেন সেই রাখাল-বালক, গরু পোষ মানানোর সব টেকনিকই জানেন, শুধু মাঠে গেলেই বিপত্তি ঘটে সবকিছুতে! এবার কামিন্সের বলে ক্যাচ দিয়েছেন প্রথম স্লিপে, স্মিথের হাতে। ইংল্যান্ডের এই অ্যাশেজে অন্যতম প্রাপ্তির এক নাম ডেভিড মালান, শেষ ইনিংসে হতাশ করেছেন তিনিও। লায়নের বলে হলেন এলবিডাব্লিউ। আম্পায়ার জোয়েল উইলসন আউট দিতে যতক্ষণ সময় নিলেন, মনে হতেই পারে, সিডনির গরমে ‘ক্যালকুলেশন’ করতেই সময় বেশি লেগেছে তার!
ম্যাচ বাঁচাতে ইংল্যান্ডের সামনে দীর্ঘপথ, রুট যেন আজই করে রাখলেন অনুশীলন। ৪২ রানের ইনিংসে তার বাউন্ডারি নেই একটিও! সঙ্গী বেইরস্টো অপরাজিত ১৭ রানে। ব্রিসবেনে ২৩ নভেম্বর যে সিরিজ শুরু হয়েছিল, কাল ৮ ডিসেম্বর শেষ হবে তা। অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ জিতে গেছে আগেই। শেষদিনে তাই শুধু একটিই প্রশ্ন, ফল হবে শেষ পর্যন্ত কোনটা? ৪-০ নাকি ৩-০?