• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ইউনাইটেডকে বিদায় করে কোয়ার্টারে সেভিয়া

    ইউনাইটেডকে বিদায় করে কোয়ার্টারে সেভিয়া    

    প্রথম লেগে সবরকম চেষ্টা করেও গোলটাই পায়নি সেভিয়া। দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা উইসাম বেন ইয়েদেরকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে নামারই সুযোগ দেননি সেভিয়া ম্যানেজার। গোলশূন্য প্রথম লেগের পর দ্বিতীয় লেগেও তিনি ছিলেন সাইডবেঞ্চেই, গোলের খাতাটাও তাই ছিল বন্ধ! ৭২ মিনিটে সুযোগ পেলেন মাঠে নামার। ১৬৪ মিনিট পর্যন্তও যে টাইয়ে গোলই হচ্ছিল না, বেন ইয়েদের মাঠে নামার পর সময় নিলেন ৮৭ সেকেন্ড। ৭৪ মিনিটে করলেন প্রথম গোল। শেষ ১৫ মিনিটে ইউনাইটেডের জিততে তখন দরকার আরও দুই গোল। বেন ইয়েদের সেই সুযোগটাও দিলেন না, ৭৮ মিনিটে আরও একবার ভাঙলেন ইউনাইটেড সমর্থকদের হৃদয়। শেষদিকে অবশ্য এক গোল শোধ দিয়েছিল ইউনাইটেড, কিন্তু ভাগ্য বদলাতে পারেনি আর। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেভিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।  



    দ্বিতীয় লেগে প্রথমার্ধের গল্পটাও ছিল প্রথম লেগের মতোই। তবে গোলের নিশ্চিত সুযোগ প্রথমার্ধে কমই তৈরি করতে পেরেছিল সেভিয়া। ১৪ মিনিটে অবশ্য এরিক বায়ির ভুল পাস কাজে লাগাতে পারলে শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু লরিস মুরিয়েল শট মেরেছিলেন অনেক বাইরে দিয়ে। তবে, প্রথমার্ধে গোলের সেরা সুযোগটা পেয়েছিলেন পল পগবার জায়গায় খেলতে নামা মারুয়ন ফেলাইনি। ৩৮ মিনিটে ফেলাইনি আর গোলের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সার্জিও রিকো। সেভিয়া গোলরক্ষকের দারুণ সেভই গোলবঞ্চিত করেছে ফেলাইনিকে, আর এগিয়েও যাওয়া হয়নি ইউনাইটেডের।

    বিরতির ঠিক পরপরই গোলটা প্রায় করেই ফেলেছিল সেভিয়া। ৪৮ মিনিটে সে যাত্রায় ইউনাইটেডকে রক্ষা করেছিলেন এরিক বায়ি। ইউনাইটেড ডিফেন্ডারের ট্যাকেলেই ভালো জায়গায় বল পেয়েও গোলে শট করতে পারেননি হোয়াকিন কোরেয়া।  আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের গোল করতে না পারার শাস্তিটা তখনই  পেতে পারত সেভিয়া। ৫১ মিনিটে জেসি লিনগার্ডের শট ঠেকিয়ে সেভিয়াকে আরও একবার  বাঁচান রিকো। এরপর গোলের জন্যে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে ইউনাইটেড, বেন ইয়েদের নামার আগ পর্যন্তও সেভিয়াই ছিল চাপে। কিন্তু সেই অর্থে নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছিলেন অ্যালেক্সিস সানচেজ, মার্কোস র‍্যাশফোর্ডরা। ম্যাচের এক ঘণ্টা পেরুতেই ফেলাইনিকে বসিয়ে পগবাকেও নামিয়েছিলেন হোসে মরিনহো। কিন্তু কাজের কাজটা করতে পারেননি কেউই। আক্রমণভাগে রোমেলু লুকাকুকে সঙ্গ দেওয়ার মতোও তেমন কেউ ছিল না, তবে মাঝমাঠে নেমে এসে বল দখলের কাজটা ভালোই করছিলেন তিনি। ৮৪ মিনিটে অবশ্য গোলও পেয়েছিলেন, কিন্তু সেটা কেবল সান্ত্বনাই হয়ে থেকেছে ইউনাইটেডের জন্য। 



    পুরো ম্যাচেই আক্রমণের সময় সেভিয়া ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেও অ্যাটাকিং থার্ডেই গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলছিলেন কোরেয়া, পাবলো সারাবিয়ারা। কিন্তু বেন ইয়েদের নামার পরই চেহারা পালটে যায় সেভিয়ার আক্রমণভাগের। ভিনসেঞ্জো মন্তেল্লার নেওয়া সিদ্ধান্ত সেভিয়ার জন্য কাজ করেছে টনিকের মতো, আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মরিনহোর দলের। সেভিয়ার প্রথম গোলের শুরুটা নিজেদের অর্ধ থেকে, এভার বানেগার পাস খুঁজে পেয়েছিল সারাবিয়াকে। তার দেওয়া থ্রু বল থেকেই গোল করেন বেন ইয়েদের। এর চার মিনিট পর  বাঁ দিক থেকে আসা বলে বেন ইয়েদেরের হেড প্রথমে ঠেকিয়েও দিয়েছিলেন ডেভিড ডি গিয়া। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি, গোললাইনে ড্রপ খেয়ে নিজের জালেই ঢুকেছে পরে সেই বল।

    শেষদিকে হ্যাটট্রিকটাও পূরণ করতে পারতেন বেন ইয়েদের। গোটা দুই ভালো গোলের সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার। তাতে অবশ্য আফসোস থাকার কথা নয় তার, ১৯৫৮ সালের পর এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল সেভিয়া। আর তাতে তার অবদানটাই তো সবার চেয়ে বেশি!